ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

টানা দুই জয়ে সমৃদ্ধ অবস্থানে কিউইরা

নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে অগ্নিপরীক্ষায় ইংল্যান্ড

প্রকাশিত: ০৬:০০, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে অগ্নিপরীক্ষায় ইংল্যান্ড

মোঃ মামুন রশীদ ॥ কঠিন, দুর্গম আর শঙ্কুল পথ এমনটাই বলা যেতে পারে এবার ইংল্যান্ড দলের বিশ্বকাপ অভিযানের শুরুটা। এবার বিশ্বকাপে অন্য কোন বড় দলই সম্ভবত ইংলিশদের মতো বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েনি। প্রথম ম্যাচেই এবার বিশ্বকাপ জয়ের অন্যতম হট ফেবারিট আয়োজক অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি হতে হয়েছিল। কঠিন সে পরীক্ষায় একেবারে হুড়মুড়িয়ে ভেঙ্গেই পড়েছিল ইংল্যান্ড। এবার আরও বড় চ্যালেঞ্জ তাদের জন্য। গত সপ্তাহে অস্ট্রেলিয়াতে থাকলেও এবার নতুন পরিবেশে আসতে হয়েছে, এবার আরেক আয়োজক নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে লড়াই। প্রথম ম্যাচে নাস্তানাবুদ হওয়ার পর এবার আরও বড় অগ্নিপরীক্ষা ইংলিশদের জন্য। কারণ অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে গত আড়াই মাস ধরে থাকার পরও বিপর্যস্ত হতে হয়েছে। আর কিউইদের বিরুদ্ধে লড়তে হবে পাঁচ দিন কিইউ ভূমিতে থাকার অভিজ্ঞতা নিয়ে। ওয়েলিংটনের ওয়েস্ট প্যাক স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় সকাল ৭টায় এ ম্যাচে মুখোমুখি হবে নিউজিল্যান্ড-ইংল্যান্ড। বেশ ফুরফুরে মেজাজে উজ্জীবিত আছে নিউজিল্যান্ড। ঘরের মাঠে ২৩ বছর আগে ঘরের মাঠে বিশ্বকাপে ইংলিশদের এই ওয়েলিংটন শহরেরই আরেক ভেন্যু বেসিন রিজার্ভে ৭ উইকেটে ইংলিশদের পরাস্ত করেছিল কিউইরা। এবারও ফর্মের তুঙ্গে আছে নিউজিল্যান্ড দল। উদ্বোধনী ম্যাচে গত দুই আসরের রানার্সআপ শ্রীলঙ্কাকে খুব সহজেই ৯৮ রানে বিধ্বস্ত করে শুরু হয় তাদের। অবশ্য পরের ম্যাচে দুর্বলতর স্কটল্যান্ডের বিরুদ্ধে নিজেদের দৈন্যতা প্রকাশ পায়। মাত্র ১৪৩ রানে স্কটিশদের গুটিয়ে দেয়ার পরে ব্যাটিং ব্যর্থতার কারণে ৭ উইকেট খুঁইয়ে ফেলে তারা। সর্বশেষ ওই ম্যাচটাই গত কয়েক মাসে সবচেয়ে বাজেভাবে কেটেছে নিউজিল্যান্ডের। এর আগে পর্যন্ত যে কোন প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে দুর্দান্ত নৈপুণ্য দেখিয়ে টানা সাফল্য পেয়েছে কিউই শিবির। তবে কি খারাপ দিন এসে গেছে নিউজিল্যান্ডের? স্কটিশদের বিরুদ্ধে ম্যাচটা সামান্য হলেও ভয় ঢুকিয়ে দিয়েছে স্বাগতিকদের মনে। কিছুটা শঙ্কাও উঁকি দিচ্ছে। কারণ সর্বশেষ ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে নিউজিল্যান্ড সফরে ওয়ানডে সিরিজ ২-১ ব্যবধানে জিতে ফিরে গিয়েছিল সফরকারী ইংল্যান্ড। ওই বছর জুনে ফিরতি সফরে ইংল্যান্ডে গিয়ে অবশ্য ২-২ সমতায় সিরিজ শেষ করে ফিরেছিল কিউইরা। ২০১৩ সালে এ দুটি সিরিজের পর আর দেখা হয়নি দু’দলের। সর্বশেষ ৫ ম্যাচের মোকাবেলায় ৩-২ ব্যবধানে এগিয়ে আছে ইংল্যান্ড। আর ওয়েলিংটন শহরটাও বেশ ভালই পরিচিত তাদের কাছে। এই শহরের দুটি ভেন্যু বেসিন রিজার্ভ ও ওয়েস্ট প্যাকে ৮ ম্যাচ খেলেছে ইংলিশরা। যদিও ফলাফলে বেশ দুর্দশার চিত্রই ফুটে উঠেছে তাদের। কারণ ওই আট ম্যাচে মাত্র ১টি জয়ের বিপরীতে তারা পরাজয় দেখেছে ৬টি। ওয়েস্ট প্যাকে দুটি ম্যাচ এর আগে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে খেলেছে ইংল্যান্ড। ২০০২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ১৫৫ রানে এবং ২০০৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে ৬ উইকেটে বিধ্বস্ত হয়েছিল তারা। দীর্ঘ ৭ বছর পর আবারও এই ভেন্যুতে নামছে তারা স্বাগতিকদের বিরুদ্ধে। আর এবার বিশ্বকাপের এখন পর্যন্ত কোন ম্যাচও হয়নি এ মাঠে। সে কারণে ভেন্যুর বর্তমান পরিবেশ, পরিস্থিতি এবং উইকেটের গতি-প্রকৃতি সম্পর্কে একেবারেই অন্ধকারে ইংলিশরা। তবে সম্প্রতিই এ মাঠে কিউইদের বিরুদ্ধে ম্যাচ খেলেছে শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তান। ওই দুটি ম্যাচে খুব বেশি রান ওঠেনি। লঙ্কানদের বিরুদ্ধে সিরিজ জিতলেও তাদের কাছে এ ভেন্যুতে এবার সিরিজে ৩৪ রানে হেরেছে কিউইরা। তবে সর্বশেষ ১১ ওয়ানডের ৯টিতেই এ মাঠে জয় তুলে নিয়েছে স্বাগতিকরা। এ মাঠের সবচেয়ে পরিচিত ক্রিকেটার রস টেলর। তার জন্ম এখানে। গত দুই ম্যাচে তেমন সুবিধা করতে পারেননি তিনি। এবার নিজের পরিচিত মাঠে জ্বলে ওঠার চেষ্টা থাকবে তার। নিউজিল্যান্ড দল আগের দুই ম্যাচে জয়ের পর ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে অপরিবর্তিতই রাখবে একাদশ। আজ জিতলে কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠার পথ অনেকটাই মসৃণ হয়ে যাবে তাদের জন্য। আর হেরে গেলে আরও চাপে পড়বে ইংল্যান্ড। যদিও টানা দুই ম্যাচে হট ফেবারিট ও আয়োজক দুই দেশের বিরুদ্ধে ম্যাচ খেলার কারণ পুরোপুরি চাপমুক্ত হয়ে যাবে তারা। এ কারণেই আজ যে করেই হোক কিউইদের হারাতে চায় তারা। বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত ৭ বারের মোকাবেলায় ৪ বার নিউজিল্যান্ড ও ৩ বার ইংল্যান্ড জিতেছে। গত বিশ্বকাপে দেখা হয়নি দু’দলের। তবে এখানে আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে ১৯৭৫, ১৯৭৯ ও ১৯৮৩ বিশ্বকাপে টানা তিনবার কিউইদের হারালেও এরপর আর বিশ্বকাপে চারবার মুখোমুখি হয়ে কিউইদের হারাতে পারেনি ইংল্যান্ড। প্রথম ম্যাচ হারলেও একাদশ অপরিবর্তিতই রাখতে চাইছে ইংলিশরা। তবে এ্যালেক্স হেলস, ক্রিস জর্ডানরা ঠাঁই করে নিতে পারেন। এ ম্যাচে দলকে বিজয়ী করার পাশাপাশি অধিনায়ক ইয়ন মরগানের চ্যালেঞ্জ নিজেকে ফিরে পাওয়ার। সর্বশেষ ৫ ইনিংসের চারটিতেই কোন রান করতে (০) পারেননি তিনি, আর এক ইনিংসে করেছেন ২ রান।
×