ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা

প্রকাশিত: ০৬:২২, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা

একুশ শতকের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা সারাবিশ্বে এক অপার সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিয়েছে। বর্তমান ডিজিটাল ডিভাইড ব্যবস্থার কারণে গ্রাম ও শহর এখনও দুইটি আলাদা সত্তা হিসেবে গণ্য করা হয়। দেশে বর্তমান জনসংখ্যা প্রায় ১৬ কোটি। যার সিংহভাগ বাস করে গ্রামে। একটা কথা প্রচলিত যারা শহরে বাস করে তারা উন্নত নাগরিক-সুবিধা ভোগ করে। গ্রামের মানুষ সেই সুযোগ-সুবিধা থেকে থাকে প্রায় বঞ্চিত। যদিও টেলিযোগাযোগসহ প্রযুক্তির যথাযথ ব্যবহার সেই ব্যবধান অনেকাংশেই কমিয়ে এনেছে। এই ক্ষেত্রে বর্তমান সরকারের সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত প্রশংসার দাবি রাখে। এ ব্যাপারে দেশী-বিদেশী বিভিন্ন সংস্থাও কাজ করে যাচ্ছে। গত দেড় দশকে দেশে টেলিযোগাযোগ খাতে এক বিপ্লব সাধিত হয়েছে। বলা চলে দেশের বেশিরভাগ এলাকাই এখন টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্কের আওতায়। এই ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী ও আধুনিকায়নে চলছে নানামুখী প্রচেষ্টা। মঙ্গলবার জনকণ্ঠে প্রকাশিত এক সংবাদে জানা যায়, টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা আরও আধুনিকায়ন ও শক্তিশালী করার জন্য সরকার এবার নিজেই বিনিয়োগ করবে। বিনিয়োগের অর্থ যোগাতে সরকার চীন সরকারের কাছ থেকে প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা ঋণ নিতে যাচ্ছে। এই টাকায় এনজিএনভিত্তিক টেলিকমিউনিকেশন নেটওয়ার্ক স্থাপন প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। গত বছর একনেক অনুমোদিত প্রকল্পটি অর্থপ্রাপ্তির পর বাস্তবায়নে হাত দেবে বিটিসিএল (বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানি লিমিটেড)। জানা গেছে, এই প্রকল্পের আওতায় বিটিসিএল সারাদেশে সব এক্সচেঞ্জের পুরনো ট্রান্সমিশন যন্ত্রপাতি ও কপার বেজড টেলিফোন নেটওয়ার্ক পরিবর্তন করে আধুনিক ট্রান্সমিশন যন্ত্রপাতি এবং ফাইবার কেবল নেটওয়ার্কের আওতায় নিয়ে আসবে। যার ব্যয় হবে এক হাজার ৮শ’ ৬১ কোটি টাকা। এতে চীন সরকারের ঋণের সঙ্গে সরকার যোগান দেবে বাকি টাকা। ইআরডি প্রকল্পটির চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হবে ২০১৭ সালের জুনের মধ্যে। পাশাপাশি জাইকার আর্থিক সহযোগিতায় টেলিকমিউনিকেশন নেটওয়ার্ক ডেভেলপমেন্ট নামে একটি প্রকল্পও হাতে নিয়েছে সরকার। দেশে অবাধ তথ্য প্রবাহকে মানুষের দোরগোড়ায় নিয়ে গেছে বেশ কয়েকটি বিদেশী মোবাইল কোম্পানি। পাশাপাশি কাজ করছে দেশী কোম্পানি টেলিটক। প্রতিযোগিতায় টেলিটকের অবস্থান কোথায় তা সবার জানা। তাই দেড় দশক ধরে টেলিযোগাযোগ ক্ষেত্রে আধিপত্য বিস্তার করে চলছে বিদেশী কোম্পানিগুলো। ফলে এই খাত থেকে প্রতিবছর শত শত কোটি টাকা হাতছাড়া হয় দেশের। নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় এই খাতে বিনিয়োগ করা গেলে দেশের টাকা দেশেই থাকত। দেশের টাকা দেশের উন্নয়নে ব্যয় হোক- সরকারের এই চিন্তা থেকেই উল্লেখিত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে তাতে সন্দেহ নেই। বিশ্বের অনেক দেশই এই সেক্টরে অভাবনীয় সফলতা অর্জন করেছে। আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর কথা উল্লেখ করা যায়। এই ক্ষেত্রে সেসব দেশের টেলিযোগাযোগ নীতি ও আইন পর্যালোচনা করে আমাদের দেশের আইনটিও সমৃদ্ধ করা যেতে পারে। দেশের টেলিযোগাযোগ খাতের অগ্রগতির পথে সরকারের এই প্রচেষ্টা সফল হবে এটাই সবার প্রত্যাশা।
×