ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

মমতার বাংলাদেশ সফর ॥ পানির আশায় বুক বেঁধেছে তিস্তাপাড়ের মানুষ

প্রকাশিত: ০৬:৩৯, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

মমতার বাংলাদেশ সফর ॥ পানির আশায় বুক বেঁধেছে তিস্তাপাড়ের মানুষ

তাহমিন হক ববি, নীলফামারী ॥ ধু-ধু বালুচরে পরিণত তিস্তা নদীর অববাহিকার লাখো মানুষ এখন চাতক পাখির মতো ফটিক জলের আশায় বুক বেঁধেছেন। এবার তারা আর আশাহত হতে চান না। চাইছে বেদনার বালুচরটি পরিপূর্ণভাবে পানিতে ভরে উঠুক। ভারতের তৃনমূল কংগ্রেস নেত্রী ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি ১৯ ফেব্রুয়ারি রাতে তিনদিনের সফরে বাংলাদেশ আসছেন। এ খবর এখন তিস্তা অববাহিকার চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছে। চলছে আলোচনার ঝড়। সবার আশা মমতা দিদি এবার আমাদের ২০১১ সালের ন্যায় নিরাশ করবে না। তিস্তাপাড়ের মানুষগুলো তাদের আশা নিয়ে বুক বেঁধে রয়েছেন মমতা দিদি এবার তিস্তার পানি চুক্তির সমাধান করবেন। তারা মমতাকে বাংলাদেশে সফরের সময় তিস্তা অববাহিকা পরিদর্শনের বিনীত অনুরোধ করছেন। বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রকাশিত খবর এখন তিস্তাপাড়ের মানুষজনের মুখে মুখে। মমতার পর ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদি আসছেন এবং বাংলাদেশ কে চমক দিবেন এই খবরও তাদের কাছে আছে। চলতি ফেব্রুয়ারি মাসের ২৩ তারিখ থেকে শুরু হচ্ছে ভারতের সংসদীয় অধিবেশন। এই অধিবেশনেই দেশের বাজেট পেশ ও পাস হয়। অধিবেশনের প্রথম পর্ব শেষ হবে ২০ মার্চ। এই সময়ের মধ্যেই সীমান্ত বিল রূপায়নের জন্য ১১৯তম সংবিধান সংশোধন বিলটি দুই-তৃতীয়াংশ ভোটে সংসদের দুই কক্ষেই পাস করাতে হবে। তৃণমূল কংগ্রেস বিল পাসে রাজি হওয়ায় আর কোন সংশয়ও থাকছে না। ধারণা করা হচ্ছে বিল পাস করিয়েই ভারতের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ সফরে আসবেন। বিভিন্ন সূত্র বলছেন, ২৬ মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস। সেই দিনটিকেও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি পছন্দ করতে পারেন। এদিকে ভারত সরকারের এই অবস্থানকে স্বাগত জানিয়ে ভারত-বাংলাদেশ ছিটমহল বিনিময় সমন্বয় কমিটির নেতা দীপ্তিমান সেনগুপ্ত জনকণ্ঠকে জানান, স্থলসীমান্ত চুক্তি বিল সংসদে পাস হওয়াটা এখন সময়ের অপেক্ষা। আশার আলো দেখছেন দুদেশের ১৬২টি ছিটমহলের প্রায় ৫৬ হাজার অধিবাসী। এদিকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের আগেই পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি ২১ ফেব্রুয়ারি মাতৃভাষা দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দেয়াটা উদ্দেশ্য হলেও তার সফরে তিস্তার পানি বণ্টন, সীমান্তে সন্ত্রাস বন্ধ এবং ছিটমহল বিনিময়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে চূড়ান্ত আলোচনা করবেন বলে জানা গেছে। সংস্কৃতি বিষয়কমন্ত্রী নীলফামারী সদর আসনের সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান নূর বলেন, তিস্তা পানি ভাগাভাগি আর ছিটমহল বিনিময়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ দুটি বিষয় দুই দেশের সরকার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিলেও সমস্যা সমাধানে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। “তিস্তা চুক্তি ও ছিটমহল বিনিময়ের বিষয়ে তিনি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেবেন বলে আশা করেন সংস্কৃতি মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। অপর একটি সূত্র বলছে, মমতার বাংলাদেশ সফরের সফলতার পর মার্চে আসবেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তখন ঝুলে থাকা সকল সমস্যার চুক্তির মাধ্যমে সমাধান টানবেন তিনি।
×