ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

কিউইদের ভয় ধরা জয়

প্রকাশিত: ০৬:১২, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

কিউইদের ভয় ধরা জয়

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ‘এটা মানতেই হবে, আজ আমাদের ভয় পাইয়ে দিয়েছিল স্কটল্যান্ড। বল হাতে দুর্ধর্ষ লড়াই করেছে ওরা। দেড় শ’র নিচে গুটিয়ে যাওয়ার পর স্কটিশরা যেভাবে খেলেছে, তা প্রশংসার দাবি রাখে। এ থেকে শিক্ষা নিয়ে পরের ম্যাচগুলোতে আমাদের আরও ভাল করতে হবে, বিশেষ করে ব্যাটসম্যানদের।’ ম্যাচ শেষে যখন কথাগুলো বলছিলেন তখনও বুকটা ধড়ফড় করছিল নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক ব্রেন্ডন ম্যাককুলামের! কী ফাঁড়াটাই না কেটে গেল? ৩৬.২ ওভারে স্কটল্যান্ড যখন ১৪২ রানে অলআউট, অনেকে কিউইদের বড় জয়ই দেখছিলেন। কিন্তু নাভিশ্বাস উঠে যাওয়া স্বাগতিকরা ২৪.৫ ওভারে হারিয়ে বসে ৭ উইকেট, ‘পা ঠকঠকে’ ম্যাচে শেষ পর্যন্ত শিরোপার স্বপ্নে বিভোর ব্ল্যাক-ক্যাপসদের জয় ৩ উইকেটে! আগের দিনই সাবেক বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে বিশ্বকাপে আরও এক রূপ কথার জন্ম দেয় পুচকে আয়ারল্যান্ড। প্রতিবেশী আইরিশদের সাফল্যে অনুপ্রাণিত হয়েই কি না কাল নিউজিল্যান্ডের ভীত কাঁপিয়ে দিল স্কটিশরা। অথচ ডুনেডিনের ইউনিভার্সিটি ওভালে টস জয় থেকে শুরু করে অর্ধ-ইনিংসের গল্পটা ছিল স্বাগতিকদেরই। কিছু বুঝে ওঠার আগেই ৪.২ ওভারে দলীয় ১২ রানে ৪ উইকেট নেই স্কটল্যান্ডের। ইনিংসের দ্বিতীয় ও নিজের প্রথম ওভারের প্রথম ও দ্বিতীয় বলে কালাম ম্যাকলিয়ড ও হামিশ গার্ডিনারকে ফিরিয়ে দিয়ে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা জাগিয়েছিলেন পেস তারকা ট্রেন্ট বোল্ট। রানের খাতা খেলার সুযোগ পাননি দুই স্কটিশ ব্যাটসম্যান। পঞ্চম ওভারে ফের পরপর দুই বলে তারকা ওপেনার কাইল কোয়েটজার (১) ও অধিনায়ক প্রিস্টন মমসেনকে (০) তুলে নিয়ে স্কটল্যান্ডকে ১২/৪-এর পরিণত করেন অপর পেসার টিম সাউদি। এ পর্যায়ে ব্যাট হাতে সংগ্রাম চালান ম্যাট ম্যাচান ও রিচি বেরিংটন। পঞ্চম উইকেটে ২৩ ওভারে ৯৭ রান যোগ করে স্কোরটাকে ভদ্রস্ত করেন তারা। ম্যাচান ৭৯ বলে ৫৬ ও বেরিংটন ৮০ বলে ৫০ রান করে আউট হন। এরপর আর কেউ দাঁড়াতে পারেননি। নিউজিল্যান্ডের হয়ে ড্যানিয়েল ভেট্টোরি ও কোরি এ্যান্ডারসন নেন ৩টি করে উইকেট। ভেট্টোরি আবার ইনিংসের শেষ দুই বলে দুটি! সাউদি-বোল্ট নেন ২টি করে উইকেট। জবাবে ১৮ রানে প্রথম উইকেট খোয়ালেও কিউদের ব্যাটিংয়ের শুরুটা মোটেই হতাশার ছিল না। ১৭.৪ ওভারে ৪ উইকেটে ১০৬ রান তুলে নেয় তারা। ১০৭-১৩৭, পরের ৩০ রানের মধ্যে আরও ৩ উইকেট হারিয়ে আচমকাই কোণঠাসা হয়ে পড়ে স্বাগতিকরা। অধিনায়ক ম্যাককুলামের মনে ভয়টা হয়ত তখনই ধরে গিয়েছিল! একে একে সাজঘরে ফেরেন বিশ্বসেরা সব উইলোবাজÑ ওপেনার মার্টিন গাপটিল ১৭, অধিনায়ক ম্যাককুলাম ১৫, অভিজ্ঞ রস টেইলর ৯, কোরি এ্যান্ডারসন ১১ ও লুক রনকি আউট হন ১২ রান করে! মাঝে কেন উইলিয়ামসনের ৪৫ বলে ৩৮ রানের সংগ্রামী ও গ্র্যান্ট ইলিয়টের ৩১ বলে ২৯ রানের ইনিংস দুটি নিউজিল্যান্ডকে বড় বাঁচা বাঁচিয়ে দেয়। বল হাতে ৩ উইকেট নেয়ার পর দৃঢ়তাপূর্ণ অপরাজিত ৮ রানের ইনিংস খেলে তাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা সাবেক অধিনায়ক ভেট্টোরির! তবে কিপটে বোলিংয়ে ২১ রানে ২ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা পেসার ট্রেন্ট বোল্ট। স্কটল্যান্ডের হয়ে ৩টি করে শিকার পেসার ইয়ান ওয়ার্ডল ও জস ডেভির। টানা দ্বিতীয় সাফল্যের পথে এর আগে উদ্বোধনী ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৯৮ রানের বড় জয় পেয়েছিল নিউজিল্যান্ড। বাগে পেয়েও একটুর জন্য নিউজিল্যান্ড-বধের সুযোগ হাতছাড়া হওয়ায় হতাশা নেই মমসেনের কণ্ঠে! ‘কিউইদের হারানোর কথাটা আমরা ওভাবে ভাবিনি। লক্ষ্য ছিল ভাল ক্রিকেট খেলা। বিশ্ববাসীকে জানান দেয়া, যে আমরাও পিছিয়ে নেই। মনে হয় সেটা পেরেছি! পরের ম্যাচের জন্য আরও প্রস্তুতি নিতে হবে।’ ২৩ ফেব্রুয়ারি স্কটিশদের পরের ম্যাচ প্রতিবেশী ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। ডুনেডিনে সকালে ব্যাটিং করা কঠিন ছিল বলে মনে করেন তিনি। মমসেন আরও যোগ করেন, ‘টস জিতলে আমরাও ব্যাটিং নিতাম। এখানে সকালে ব্যাটিং করা বেশ চ্যালেঞ্জিং। তার ওপর শুরুতেই বোল্ট-সাউদি অসাধারণ বোলিং করেছে। আমাদের ব্যাটসম্যানরা স্কোর বোর্ডে আর কিছু রান জমা করতে পারলে ফল অন্যরকম হতে পারত।’ বলেন স্কটিশ অধিনায়ক।
×