স্টাফ রিপোর্টার, নওগাঁ ॥ সহিংস রাজনৈতিক কর্মকা-ে নিদারুণ কষ্টে আছে নওগাঁ অঞ্চলের শ্রমজীবী মানুষ। নিম্ন আয়ের পরিবারগুলোতে চলছে হাহাকার। কারো হাতে কাজ নেই। যারা কাজ করে নেবেন, সেসব মহাজনদেরই কামাই থমকে গেছে। তাই তারা কাজের লোকদের কাজে লাগাতেও পারছেন না।
নওগাঁ শহরের শ্রম বিক্রির হাট বসে পার-নওগাঁ যমুনা আবাসিক বোর্ডিংয়ের সামনে লিটন সেতুর পূর্বমুখে। প্রতিদিন কাকডাকা ভোরে অন্তত ২ শতাধিক শ্রমজীবী মানুষ কোদাল, টুকরি আর ভার-ডালি নিয়ে কাজের আশায় দিনভর অপেক্ষা করে। কাজ না পেয়ে বিকেলে তারা খালি হাতেই বাড়িতে ফিরতে বাধ্য হচ্ছেন। দেশজুড়ে টানা অবরোধ-হরতালে করুণ অবস্থায় পড়েছেন এসব দিনমজুর। এদের সঙ্গে রয়েছেন নির্মাণ শ্রমিকও। নাশকতার আশঙ্কা আর রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার মুখে বাসা বা প্রতিষ্ঠান মালিকরা ভবন নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখতে বাধ্য হচ্ছেন। ফলে বেকার হয়ে পড়া নির্মাণ শ্রমিকদের ঘরে চলছে হাহাকার। একই সঙ্গে খেটেখাওয়া দিনমজুরদের কষ্টের শেষ নেই। অনেকের বাড়িতেই তিন বেলা চুলা জ্বলছে না। স্ত্রী-সন্তান, বৃদ্ধ মা-বাবা নিয়ে অনেকেই অর্ধাহারে-অনাহারে দিনাতিপাত করছে। এসব শ্রমিকের অনেকেরই রয়েছে বিভিন্ন এনজিওর চড়া সুদের ঋণ। প্রতি সপ্তাহে ঋণের কিস্তি দিতে হয় । একে তিনবেলা পেট ভরে খেতে পাচ্ছে না, তার ওপর সপ্তাহের প্রথমদিনই কিস্তির টাকা পরিশোধ, মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা হয়ে দাঁড়িয়েছে শ্রমিকদের কাছে।
শহরের লিটন সেতুর মুখে শ্রম বিক্রির হাটে কয়েক শ্রমিকের সঙ্গে কথা হলো। সকলেই ভার-ডালি, দা-কোদাল নিয়ে শ্রম বিক্রির হাটে এসেছে। কাছে এগিয়ে যেতেই সকলে ঘিরে দাঁড়িয়ে বলতে লাগলো, “কি কাজ স্যার? কোথায় যেতে হবে? কয়জন লাগবে? আপনারা কাজে না নিলে আমরা পরিবার নিয়ে কি খেয়ে বাঁচবো স্যার? সর্বনাশা হরতাল-অবরোধে আমাদের মুখে দু’বেলা খাবার জুটছে না স্যার”? সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে কিছুটা ক্ষুন্ন মনে বললো, ঠিক আছে, আপনারা আমাদের দুঃখের কথাগুলো সরকারের কাছে তুলে ধরেন। আমাদের হরতাল-অবরোধের প্রয়োজন নাই। যাদের ঘরে অঢেল খাবার আছে, তারা মানুষ মেরে হরতাল-অবরোধ করুক।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: