ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

জীবিকার টানে ॥ মানুষ রাজপথে

প্রকাশিত: ০৬:২১, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

জীবিকার টানে ॥ মানুষ রাজপথে

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ দেশে ২০ দলীয় জোটের টানা অবরোধের ৪২ দিন পার হয়েছে। এর মাঝে মাঝে ছিল হরতাল। মানুষের মনে রাস্তায় নামলে অবরোধকারীদের পেট্রোলবোমায় দগ্ধ হওয়ার ভয়। নাশকতার কারণে কোন কাজই ঠিকমতো চলছে না। সময় মতো অনুষ্ঠিত হচ্ছে না এসএসসি পরীক্ষা। কিন্তু এভাবে আর চলা যায় না। মানুষের ধৈর্যের বাধ ভেঙে গেছে। তাই হরতাল-অবরোধ উপেক্ষা করে জীবিকার টানে রাস্তায় নেমে পড়েছে তারা। এ কারণেই অন্যান্য স্বাভাবিক দিনের মতো সোমবার সকাল থেকে রাজশাহী থেকে বিভিন্ন রুটে ছেড়ে গেছে বাস। কোন ধরনের পুলিশী পাহারা ছাড়াই মালামাল নিয়ে চলাচল করছে ট্রাক-লরিসহ পণ্যবাহী যানবাহন। ২০ দলীয় জোটের টানা অবরোধের চলমান শেষ দফা ৭২ ঘণ্টা হরতালের দ্বিতীয় দিন শেষ হয়েছে। তবে রাজশাহীতে অবরোধ ও হরতালের কোন প্রভাব লক্ষ্য করা যায়নি। সকাল থেকে রাস্তায় হালকা যানের পাশাপাশি ভারি যানবাহনও স্বাভাবিকভাবে চলাচল করেছে। তবে ভোর বেলায় নগরীর দাশপুকুর এলাকায় ঝটিকা মিছিল করেছে জামায়াত-শিবির কর্মীরা। এছাড়া তাদের আর কোন কার্যক্রম চোখে পড়েনি। তাই নগরীতে জনজীবন অন্যান্য দিনের মতোই স্বাভাবিক রয়েছে। নগরীর কঁয়েরদাড়া এলাকার অটোরিক্সাচালক আল-আমিন বলেন, যারা হরতাল-অবরোধ ডেকেছে তারা কি আমাদের খেতে দেবে। যদি দেয়, তাহলে অটোরিক্সা না চালিয়ে ঘরে বসে থাকব। কিন্তু কেউ তো খেতে দেয় না। বসে থেকে খাওয়াবে এমন মানুষের তো একটিও দেখা পাওয়া যায় না। শুধু যানবাহনই নয়। হরতাল মানছেন না ছোট-বড় সব ধরনের ব্যবসায়ীরা। ৫ জানুয়ারির পর থেকে নাশকতার ভয়ে দীর্ঘদিন দোকানপাট বন্ধ রেখেছিল ব্যবসায়ীরা। তবে ব্যবসায়ীদেরও দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। ৪২ দিনের অবরোধে অনেক ব্যবসায়ী ইতোমধ্যেই বড় অঙ্কের লোকশানে পড়েছেন। ধৈর্যের বাধ ভেঙে যাওয়ায় তারাও প্রায় এক সপ্তাহ ধরে নিয়মিত দোকান খোলা রাখছেন। এছাড়া ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সচল রাখতে মাছে নেমেছেন রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের নেতৃবৃন্দও। নগরীর সাহেববাজার এলাকায় ফুটপাথে লুঙ্গি-গামছা দোকানি আহাম্মেদ জানান, হরতাল ও অবরোধের মুখে রাস্তায় বসে ব্যবসায় করা অনেক কষ্টের। কখন কি যে ঘটে তার বলা যায় না। তবু পেটের দায়ে ঘরে বসে থাকলে তো আর চলবে না। তাই দোকান খুলে বসতে হয়েছে। রাজশাহী চেম্বর অব কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাস্টিজের সভাপতি মনিরুজ্জামান মনি বলেন, এভাবে চলতে পারে না। হরতাল ও অবরোধের কারণে সবচেয়ে বেশি ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আন্দোলনের নামে যে হরতাল ও অবরোধ চলছে তাতে পথে বসতে হবে ব্যবসায়ীদের। রাজশাহী মহানগর পুলিশের মুখপাত্র ও গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী কমিশনার ইফতে খায়ের আলম জানান, ৭২ ঘণ্টা হরতাল শুরুর দুই দিনে জেলার কোথাও তেমন মিছিল ও পিকেটিংয়ের ঘটনা ঘটেনি।
×