ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

মংলাবন্দরে আটকা পড়েছে ৪ হাজার আমদানিকৃত গাড়ি

প্রকাশিত: ০৬:১৩, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

মংলাবন্দরে আটকা পড়েছে ৪ হাজার আমদানিকৃত গাড়ি

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ টানা অবরোধ আর দফায় দফায় হরতালে মংলাবন্দের আটকে পড়েছে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার আমদানিকরা রিকন্ডিশন গাড়ি ও ২ হাজারের বেশি মালবোঝাই কন্টেইনার। অবরোধকারীদের পেট্রোলবোমা আর আগুনের ভয়ে সড়ক পথে পণ্য পরিবহনে এখন ঝুঁকি খুবই বেশি। অনেকেই তাই বন্দর জেটি থেকে পণ্য বাইরে নিতে পারছে না। বিদেশী কাঁচামালের অভাবে বন্ধ হয়েছে অনেক শিল্প প্রতিষ্ঠান, বেকার হয়ে পড়েছে অনেক শ্রমিক। এ পরিস্থিতে কোটি কোটি টাকা ক্ষতির মুখে পড়েছে গাড়ি আমদানিকারকরা। পরিস্থিত স্বাভাবিক না হলে রিকন্ডিশন গাড়ি আমদানি বন্ধ হয়ে যেতে পারে ধারণা তাদের। মংলাবন্দর দিয়ে গাড়ি আমদানিকারক সিনহুয়া অটোমোবাইলসের স্বত্বাধিকারী রফিকুল ইসলাম জানান, টানা অবরোধ-হরতালে সড়ক পথে পরিবহনে আগুন ও হামলার আশঙ্কায় বন্দর থেকে গাড়ি ছাড়িয়ে নেয়া যাচ্ছে না। মংলাবন্দরে তাদের কোটি কোটি টাকার গাড়ি আটকে পড়েছে। আমদানি করা গাড়ি বন্দর থেকে ছাড় করিয়ে শোরুমে প্রদর্শন করতে পারছেন না তাঁরা। স্বাভাবিক সময়ে তার প্রতিষ্ঠান প্রতিদিন গড়ে একশ’ গাড়ি ডেলিভারি করে। সে হিসাবে গত এক মাসে রাজনৈতিক অস্থিরতা না থাকলে কমপক্ষে আড়াই হাজার গাড়ি বন্দর থেকে ছাড়িয়ে শোরুমে প্রদর্শন করা সম্ভব হতো। গাড়িগুলো বন্দরে পড়ে থাকায় বাড়তি গোডাউন ও ইয়ার্ড ভাড়া গুনতে হচ্ছে বলে জানান তিনি। গাড়ি আমদানিকারক সূত্রে জানা গেছে, আমদানিকরা রিকন্ডিশন গাড়ির মডেল অনুয়ায়ী প্রতিটি গাড়ির দাম ২০ লাখ থেকে দেড় কোটি টাকা পর্যন্ত। গত এক মাসের অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে মংলাবন্দর জেটি ও ইয়ার্ডে সাড়ে চার হাজার রিকন্ডিশন গাড়ি ছাড়ের অপেক্ষায় রয়েছে। মংলাবন্দরে রিকন্ডিশন গাড়ি আমদানির সঙ্গে প্রায় ২০০ প্রতিষ্ঠান জড়িত রয়েছে। গাড়ি ছাড় করাতে না পারায় ব্যাংক ঋণ, ইয়ার্ড চার্জসহ আনুষঙ্গিক বিভিন্ন খাতে ক্ষতি প্রতিদিন বেড়ে চলেছে খরচ। এ অবস্থায় বড় ধরনের লোকসান ও পুঁজি হারানোর আশঙ্কায় ভুগছেন এ খাতের ব্যবসায়ীরা। মংলাবন্দরের সহকারী ট্রাফিক ম্যানেজার মোস্তফা কামাল জানান, চলমান অস্থিতিশীল পরিস্থিত ও হরতাল-অবরোধে গত এক মাসেরও বেশি সময় ধরে গাড়ি ছাড় শতকরা প্রায় ৩৫ ভাগ কমে গেছে। এর মধ্যে ৪ ফেব্রুয়ারি এমভি গোল্ডেন ফান নামে একটি জাহাজ ৩০৮টি রিকন্ডিশন গাড়ি নিয়ে বন্দর এসেছে। এছাড়া আগামী দু’তিন দিনে আরও পাঁচশ গাড়ি নিয়ে বন্দরে আসার অপেক্ষায় রয়েছে আরও একটি জাহাজ। বন্দর সূত্র জানায়, মংলাবন্দরের ইয়ার্ড ও জেটি এলাকায় প্রায় ১০ হাজার গাড়ি রাখা যায়। তবে আমদানি করা গাড়ি বন্দর ইয়ার্ড ও গোডাউনে রাখা এবং স্বাভাবিক নিয়মে ডেলিভারি দিতে বন্দরের কোন সমস্যা নেই। এ কারণে সুযোগ-সুবিধা বুঝে রাতেই গাড়ি ছাড় করিয়ে নিচ্ছেন আমদানিকারকদের কেউ কেউ।
×