ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

রিপোর্টার্স স্যান্স ফ্রন্টিয়ার্সের সূচক বাস্তবতা বিবর্জিত ॥ তথ্যমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৫:২৬, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

রিপোর্টার্স স্যান্স ফ্রন্টিয়ার্সের সূচক বাস্তবতা বিবর্জিত ॥ তথ্যমন্ত্রী

তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেছেন, রিপোর্টার্স স্যান্স ফ্রন্টিয়ার্সের সূচক বাস্তবতাবিবর্জিত। রবিবার এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ফরাসী সংস্থা ‘রিপোর্টার্স স্যান্স ফ্রন্টিয়ার্স’ প্রকাশিত ওয়ার্ল্ড প্রেস ফ্রিডম ইনডেক্স ২০১৪-এর সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান যেভাবে দেখান হয়েছে তা গ্রহণযোগ্য নয়। কারণ, এটি সম্পূর্ণ বাস্তবতাবিবর্জিত, ভিত্তিহীন, মনগড়া ও কল্পনাপ্রসূত। হাসানুল হক ইনু বলেন, বাংলাদেশের গণমাধ্যম স্মরণকালের মধ্যে এখন সবচাইতে স্বাধীনভাবে কাজ করছে। বর্তমান সরকারের আমলে গণমাধ্যম সবচাইতে বেশি সম্প্রসারিত ও বিকাশ লাভ করেছে। বিগত সরকারের আমলে যেখানে দৈনিক, সাপ্তাহিক, মাসিক মোট ৬০০ পত্রপত্রিকা প্রকাশিত হতো, সেখানে এখন এ সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১২০০-এরও বেশি। দেশে এখন ২৬টি বেসরকারী টেলিভিশন চ্যানেল সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে সম্প্রচারিত হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, যেখানে সরকারী টেলিভিশনের সংখ্যা মাত্র ৩টি। একই সঙ্গে বাংলাদেশ বেতারের পাশাপাশি বেসরকারীভাবে সম্প্রচারিত হচ্ছে ১১টি এফএম রেডিও। শুধু তাই নয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কণ্ঠস্বর হিসেবে ৩২টি কমিউনিটি রেডিওকে সম্প্রচারের অনুমতি দিয়েছে, যার মধ্যে ১৪টির পূর্ণ সম্প্রচার চলছে। তথ্যমন্ত্রী বলেন, সরকারের কঠোর সমালোচক হিসেবে পরিচিত বিভিন্ন রাজনৈতিক দল-মহল বা ব্যক্তির মালিকানাধীন অসংখ্য পত্রিকা সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে প্রকাশিত হচ্ছে। সরকারের কঠোর বিরোধী জামায়াতে ইসলামীর মালিকানাধীন দৈনিক সংগ্রাম, বিএনপির মালিকানাধীন দৈনিক দিনকালসহ বহুসংখ্যক বিরোধী মনোভাবাপন্ন পত্রপত্রিকা নিয়মিতভাবে তাদের প্রকাশ ও প্রচার অব্যাহত রয়েছে। সরকার কখনও কোন বাধা দেয়নি বা হস্তক্ষেপ করেনি। সংবাদপত্র বা ইলেক্ট্রনিক গণমাধ্যমের স্বাধীনতা খর্ব করার মতো কোন আইনও এ মুহূর্তে দেশে নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকারবিরোধী অবস্থান বা মতামতের জন্য কোন সাংবাদিক বা গণমাধ্যম কর্মীর বিরুদ্ধে গ্রেফতার-নির্যাতন দূরের কথা কাউকে কখনও হয়রানির শিকারও হতে হয়নি। মন্ত্রী বলেন, ‘আমার দেশ’ নামের পত্রিকাটি মালিকানা ও ছাপাখানা বিষয়ক মিথ্যা তথ্য প্রদান জটিলতায় তাদের প্রিন্ট সংস্করণ বন্ধ রেখেছে। কিন্তু অনলাইন সংস্করণ চালু রয়েছে। একই পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সরাসরি নাশকতার উস্কানি দেয়ার অভিযোগে ‘তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে’ বিচারাধীন রয়েছেন। ‘দিগন্ত মিডিয়া লিমিটেডে’র মালিকানাধীন দিগন্ত টেলিভিশন ও ইসলামিক টেলিভিশনের সম্প্র্রচারও একই কারণে সাময়িক স্থগিত রয়েছে, যা আদালতে বিচারাধীন। সরকার তাদের লাইসেন্স বাতিল করেনি জানিয়ে তিনি বলেন, একই ‘দিগন্ত মিডিয়া লিমিটেডে’র পত্রিকা ‘দৈনিক নয়া দিগন্ত ’ সম্পূর্ণ বাধাহীনভাবে প্রকাশিত হচ্ছে। সুতরাং এ ক্ষেত্রে ভুল বোঝাবুঝির কোন অবকাশ নেই বলে দৃঢ়তার সঙ্গে বিবৃতিতে তিনি উল্লেখ করেন । তথ্যমন্ত্রী বলেন, এ রকম পরিস্থিতিতে দেশ যখন গণমাধ্যমের অবাধ স্বাধীনতা ও সম্প্রসারমান যুগে প্রবেশ করেছে, তখন ‘রিপোর্টার্স স্যান্স ফ্রন্টিয়ার্স’ বাংলাদেশের সঠিক চিত্র প্রতিফলনে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। সে কারণেই প্রতিষ্ঠানটির সূচকে বাংলাদেশের প্রদর্শিত অবস্থান কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, নিশ্চিতভাবেই বাংলাদেশের গণমাধ্যম সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে ও দায়িত্বশীলতার সঙ্গে তাদের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখবে এবং দেশ ও জনগণের কল্যাণের পাশাপাশি বিশ্বের বুকে বাংলাদেশের মর্যাদাকে আরও উন্নীত করবে।
×