ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

রাজনৈতিক অফিস গুলশান থেকে উচ্ছেদের দাবি স্থানীয় সাংসদের

প্রকাশিত: ০৫:২৬, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

রাজনৈতিক অফিস গুলশান থেকে উচ্ছেদের দাবি স্থানীয় সাংসদের

স্টাফ রিপোর্টার ॥ হরতাল অবরোধের নামে নাশকতার প্রতিবাদে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার গুলশানের বাসার সামনে বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষের বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে। রবিবার কয়েক শ’ লোক নিয়ে খালেদা জিয়ার গুলশান কার্যালয়ের সামনে অবস্থান করে গুলশান-বনানী এলাকা থেকে রাজনৈতিক দলের কার্যালয় উচ্ছেদের দাবি জানিয়েছে ওই এলাকা থেকে নির্বাচিত সাংসদ ও বিএনএফের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ। আর হরতাল-অবরোধ প্রত্যাহার করে শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনার দাবিতে সেখানে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে কালাচাদপুর স্কুল এ্যান্ড কলেজের শতাধিক শিক্ষার্থী। এ ছাড়া মুজিব সেনা ঐক্য লীগ ও আওয়ামী তাঁতি লীগ সেখানে অবস্থান করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে। এদিকে খালেদা জিয়ার গুলশান কার্যালয়ে নেতাকর্মী ও অফিস স্টাফদের জন্য খাবার প্রবেশে আবারও বাধা দিয়েছে পুলিশ। দুপুরে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ের সামনে হরতাল-অবরোধ প্রত্যাহারের দাবিতে কয়েক শ’ লোক সঙ্গে নিয়ে অবস্থান কর্মসূচী পালন করেন ওই এলাকার সাংসদ আবুল কালাম আজাদ। এ সময় তিনি বলেন, হরতাল-অবরোধ প্রত্যাহারের দাবিতে আমরা তিনবারের প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচী পালন করছি। আমি জিয়াউর রহমানের একজন সহকর্মী হিসেবে খালেদা জিয়াকে হরতাল-অবরোধসহ নাশকতামূলক কর্মকা- প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি। আর গুলশান কার্যালয়ে অতিরিক্ত লোক থাকার দরকার নেই। খালেদা জিয়ার প্রতিদিনের খাবার আমি নিয়ে আসব। এদিকে দুপুর ১২টার দিকে হরতাল-নৈরাজ্যের প্রতিবাদ জানাতে বিএনপি চেয়ারপার্সনের গুলশান কার্যালয় ঘেরাও করতে যায় মুজিব সেনা ঐক্য লীগ। তবে পুলিশের বাধার কারণে খালেদা জিয়ার কার্যালয়ের সামনে যেতে না পারলেও ৮৬ নম্বর সড়কে কাছাকাছি অবস্থানে থেকে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন সংগঠনের নেতাকর্মীরা। এ সময় তারা হরতাল ও পেট্রোলবোমা মেরে মানুষ হত্যার প্রতিবাদে বিভিন্ন সেøাগান দেন। এ সময় বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সভাপতি এইচ এম আসাদ ও সাধারণ সম্পাদক ফজলুর রহমান। একই সময়ে খালেদা জিয়ার গুলশান কার্যালয়ের উত্তর পাশে হরতাল-অবরোধ প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন করে কালাচাঁদপুর স্কুল এ্যান্ড কলেজের শতাধিক শিক্ষার্থী। খাবার প্রবেশ করতে দেয়নি পুলিশ ॥ রবিবারও খালেদা জিয়ার গুলশান কার্যালয়ে খাবার প্রবেশ করতে দেয়নি পুলিশ। বেলা ২টার দিকে খালেদা জিয়ার গুলশান কার্যালয়ে অবস্থানকারী নেতাকর্মী ও অফিস স্টাফদের জন্য একটি রিকশায় করে প্রায় ১০০ প্যাকেট বিরিয়ানি ও পানির বোতল আনা হয়। কিন্তু পুলিশ এই খাবার ভেতরে ঢুকতে না দিয়ে ফেরত পাঠিয়ে দেন। তবে রিক্সাওয়ালা একটু দূরে গিয়ে ফুটপাথে খাবার ফেলে দ্রুত চলে যান। এ ঘটনার পর বিএনপি চেয়ারপার্সনের গুলশান কার্যালয়ের ভেতরে থেকে গেটে এসে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান সাংবাদিকদের কাছে বলেন, কার্যালয়ের ভেতরে খাবার ঢুকতে না দেয়ায় খালেদা জিয়াও অভুক্ত রয়েছেন। তিনি বলেন, কারাগারেও খাবার দেয়া হয়। কিন্তু এখানে খাবার নিয়ে ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না। এটা কোন সভ্য রাষ্ট্রের কাজ নয়। কার নির্দেশে এখানে খাবার দেয়া বন্ধ রাখা হয়েছে আমরা জানতে চাই। একদিকে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ও পুলিশের আইজিপি বলেছেন, খাবার ঢুকতে কোন বাধা দেয়া হচ্ছে না। অথচ প্রতিদিনই পুলিশ আমাদের খাবার ঢুকতে দিচ্ছে না। আমরা মনে করি, সরকার খাবার নিয়ে মিথ্যার আশ্রয় নিচ্ছে। জানা যায়, বুধবার থেকে অর্ধশতাধিক নেতা-কর্মী-কর্মচারীদের জন্য দোকান থেকে আনা খাবারের প্যাকেট ঢুকতে না দিলেও খালেদা জিয়ার জন্য তার আত্মীয়দের বাসা থেকে আনা খাবার প্রবেশে বাধা দিচ্ছে না পুলিশ। এদিকে পুলিশ প্রকাশ্যে খালেদা জিয়ার গুলশান কার্যালয়ে খাবার প্রকাশ করতে না দিলেও অপ্রকাশ্যে প্রতিদিনই ওই কার্যালয়ে খাবার প্রবেশ করছে। ওই খাবার খেয়েই খালেদা জিয়ার কার্যালয়ে থাকা নেতাকর্মী ও অফিস স্টাফরা ক্ষুধা নিবারণ করছেন। আর খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত খাবার প্রায় প্রতিদিনই কেউ না কেউ গুলশান কার্যালয়ে দিয়ে আসছেন। তাই খালেদা জিয়া অভুক্ত রয়েছেন বলে বিএনপির পক্ষ থেকে যে কথা বলা হয় তা ঠিক নয় বলে পুলিশ প্রশাসন থেকে বলা হচ্ছে। খোদ পুলিশের আইজি শহীদুল হক খন্দকারই বলেছেন, খালেদা জিয়া নিয়মিত খাবার খাচ্ছেন এবং তিনি সুস্থ আছেন।
×