ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

দুই নেত্রীকে অবশ্যই আলোচনায় বসতে হবে ॥ বি. চৌধুরী

প্রকাশিত: ০৭:৪৭, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

দুই নেত্রীকে অবশ্যই আলোচনায় বসতে হবে ॥ বি. চৌধুরী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিকল্পধারা বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট ও সাবেক রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক ডাঃ একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী রাজনৈতিক সঙ্কট নিরসনে দুই নেত্রীকে আলোচনায় বসার জন্য আবারও আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, আমরা সহিংস রাজনীতির বিরুদ্ধে। দেশের ১৮ কোটি মানুষের দাবি, সঙ্কট নিরসনে অবশ্যই তাদের আলোচনায় বসতে হবে। আগামী তিন মাসের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন দেয়ারও দাবি জানান বিএনপির এই প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। শনিবার দলের বিশ্ব রোডের কুড়িল কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত প্রতীক গণঅনশন কর্মসূচীতে তিনি এসব কথা বলেন। চলমান রাজনেতিক সঙ্কট নিরসনে অনশনের ডাক দেন তিনি। এতে দলের নেতাকর্মীরা অংশ নেন। বি. চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশ এখন জ্বলছে। এই ভয়াবহ অবস্থায় প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব সবচেয়ে বেশি। সঙ্কট সমাধানে অবশ্যই তাকে দায়িত্ব নিতে হবে। কথা তাকে বলতেই হবে। ২০ দলীয় জোট নেত্রীকেও কথা বলতে হবে। দেশ ও জনগণের ভবিষ্যত চিন্তা করেই তাদের কথা বলতে হবে। ১৮ কোটি মানুষের একটাই দাবি, দেশের শান্তি নিশ্চিত করতে হবে। আমরা জনগণের জন্য রাজনীতি করি উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিদেশীদের মাধ্যমে সংলাপ হলে তা দেশের জন্য লজ্জাজনক হবে। তিনবারের নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে আপত্তি কিসের? তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ বলেছিল, ৫ জানুয়ারির নির্বাচন ছিল নিয়ম রক্ষার নির্বাচন। বিএনপিও এর আগে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তনে এ রকম একটি নির্বাচন করেছিল। বিএনপির চাপে রাষ্ট্রপতির পদ থেকে পদত্যাগে বাধ্য হওয়া বি চৌধুরী বলেন, তিন মাসের মধ্যে নির্বাচন দেয়ার জন্য যা যা করা দরকার, তা করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘আপনি ৫৭ জন (বিডিআর কর্মকর্তা) হত্যার সঙ্গে জড়িতদের সঙ্গে ঘরে বসে কথা বলেছেন। পার্বত্য চট্টগ্রামের বিদ্রোহী নেতার সঙ্গে কথা বলেছেন, সমস্যার সমাধান করেছেন। তাহলে খালেদা জিয়ার সঙ্গে কেন কথা বলতে পারবেন না। তিনি বলেন, ক্রসফায়ার, অস্ত্র দিয়ে সমস্যার সমাধান হবে না। এটা গণতন্ত্রের ভাষা নয়। বিকল্পধারার যুগ্ম মহাসচিব মাহী বি. চৌধুরী, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ডাঃ রফিক চৌধুরী, ন্যাশনাল লেবার পার্টির চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ জিয়া, বিকল্পধারার কেন্দ্রীয় নেতা মাহবুব আলী, মুক্তিযোদ্ধা হারুন খান, হাফিজুর রহমান ঝন্টু, শাহ আহমেদ বাদল, মাহফুজুর রহমান, ওবায়েদ মৃধা, আসাদুজ্জামান বাচ্চু, সাইফুল ইসলাম শোভন, বিএম নিজামসহ নেতাকর্মীরা গণঅনশনে উপস্থিত ছিলেন। সমাপনী বক্তব্যে বি. চৌধুরী বলেন, লন্ডনে বসে বিএনপির এক সিনিয়র নেতা বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে যেসব কথা বলেছেন, এটা ঠিক হয়নি। এসব রাজনীতির শ্রদ্ধার ভাষা নয়। প্রয়াত নেতাদের বিরুদ্ধে অতিকথনের কারণে দ্বন্দ্ব-বিভেদ বেড়ে যায়। এ অবস্থা দেশকে বিভক্ত করে। এর থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। বিএনপি ও আওয়ামী লীগ নেতাদের বলব, আগামী একবছর বঙ্গবন্ধু এবং জিয়া সম্পর্কে খারাপ কথা বলবেন না। বঙ্গবন্ধুর অবস্থানকে ছোট করে এমন অসত্য ধারণা দেবেন না। সাংবাদিকদের প্রশ্নেœর উত্তরে তিনি বলেন, আমরা সহিংস আন্দোলন, হরতাল সমর্থন করি না। একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন ছাড়া দেশে শান্তি আসবে না। প্রতীক গণঅনশন কর্মসূচী শেষে সংবাদ সম্মেলনে বিকল্পধারার মহাসচিব মেজর (অব.) আবদুল মান্নান, যুগ্ম মহাসচিব আবদুর রউফ মান্নান, ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি মাহবুব আলী, মোঃ শাহ আলম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। নাগরিক ঐক্যের মানববন্ধন ॥ সংলাপের দাবিতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের শিখা চিরন্তনে মানববন্ধন করেছে নাগরিক ঐক্য। বেলা তিনটার থেকে চারটা পর্যন্ত ঘণ্টাব্যাপী আয়োজনে বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষ অংশ নেন। এতে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহামুদুর রহমান মান্না বলেন, আমরা আশা করব, দ্রুত সময়ের মধ্যে দেশে শান্তি ফিরে আসবে। এজন্য দুই নেত্রীকে আন্তরিক হওয়ার বিকল্প নেই। তারা আন্তরিক না হলে দেশে শান্তি ফিরবে না। মানুষ প্রত্যাশা করে দেশ ও জনগণের স্বার্থের কথা বিবেচনা করে রাজনৈতিক দলগুলো কর্মসূচী দেবে। আমরা চাই দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হোক। কায়েম হোক আইনের শাসন। সরকারের বিভিন্ন কর্মকা-ের কঠোর সমালোচনা করেন সাবেক এই আওয়ামী লীগ নেতা মান্না।
×