সাবেক সামরিক শাসক পারভেজ মোশারফ স্বীকার করেছেন, তিনি ক্ষমতায় থাকার সময় আফগান সরকারের বিরুদ্ধে তৎপরতা চালানোর চেষ্টা করেছে পাকিস্তান। কারণ, আফগানিস্তানের তদানীন্তন প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই পাকিস্তানের পিঠে ছুরিকাঘাতে সহায়তা করেছিলেন ভারতকে। খবর এক্সপ্রেস ট্রিবিউন অনলাইনের।
মোশারফ গার্ডিয়ানে শুক্রবার প্রকাশিত এক সাক্ষাতকারে বলেন, হ্যাঁ, আসলেই প্রেসিডেন্ট কারজাই ক্ষমতায় থাকাকালীন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে তৎপরতা চালাচ্ছিলেন এবং তাই আমরা কাজ করছিলাম তার স্বার্থের বিরুদ্ধে। সোজা কথা, নিজেদের স্বার্থ রক্ষা করতে হয়েছিল আমাদের। কিন্তু তিনি বলেন, সেপ্টেম্বরে ক্ষমতায় আসার পর আফগান প্রেসিডেন্ট আশ্রাফ গনির সঙ্গে আমাদের সম্পূর্ণভাবে সহযোগিতা করার এখন সময়। তিনি বলেন, আশ্রাফ গনি এখন প্রেসিডেন্ট এবং আফগানিস্তানে সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য পুনঃপ্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছেন তিনি। আমরা অবশ্য পুরো সহযোগিতা করব তাকে। সাবেক প্রেসিডেন্ট আফগানিস্তানে জঙ্গীদের মদদ দেয়ার মাধ্যমে ছায়াযুদ্ধ চালানো বন্ধ করার আহ্বান জানান।
গার্ডিয়ানের রিপোর্টে বলা হয়, গনি এ মাসে পাকিস্তানের এবোটাবাদ শহরে অফিসার্স একাডেমিতে প্রশিক্ষণের জন্য ৬ সেনা ক্যাডেটকে পাঠানোর যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তা মোশারফের জন্য খুবই প্রীতিকর বিষয়। রিপোর্টে বলা হয়, আফগানিস্তানের নবীন সেনাবাহিনীকে প্রশিক্ষণের জন্য পাকিস্তানের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে কারজাই সেদিন ক্ষিপ্ত করে তুলেছিলেন মোশারফ ও তার উত্তরসূরি সেনাপ্রধান আশফাক কায়ানিকে। উপরন্তু কারজাই সেনা ক্যাডেট পাঠিয়েছিলেন ভারতে যে দেশে মোশারফ মনে করেন, তাদের মন্ত্রণা দেয়া হয়েছে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে। সাবেক এ সেনাপ্রধান ইতোমধ্যে এ কথাও বলেছেন যে, তাদের শক্তিশালী ইন্টারসার্ভিসেস ইনটেলিজেন্স (আইএসআই) ২০০১-এর পর আফগান তালেবান বিকাশে ভূমিকা রেখেছে। স্পষ্টত, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের এ তৎপরতা প্রতিহত করার জন্য কোন কোন গ্রুপের সন্ধান করছিলাম আমরা। গোয়েন্দ সংস্থাটি তাই সেখানে ভূমিকা রেখেছে। তালেবান গ্রুপগুলোর সঙ্গে আমাদের গোয়েন্দা বিভাগের সংযোগ ছিল। অবশ্যই ছিল। তিনি বলেন, ছায়াযুদ্ধ চালানোর জন্য পাকিস্তানের নিয়ন্ত্রণে জঙ্গী সদস্যরা ছিল। একইভাবে ভারতের ছিল ছায়াযুদ্ধ চালানোর মতো গ্রুপ যা শুভ নয়। আমি অবশ্য স্বীকার করি, এটা ছিল অত্যন্ত অসুস্থ তৎপরতা। এটা আফগানিস্তান বা পাকিস্তান বা ভারত কোন দেশের জন্যই অনুকূল নয়।