ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

খণ্ড-বিখণ্ড হওয়া এড়াতে ইউরোপকে এথেন্সের সঙ্গে আপোস করতে হবে

গ্রীসের পাশে যুক্তরাষ্ট্র

প্রকাশিত: ০৪:২৫, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

গ্রীসের পাশে যুক্তরাষ্ট্র

ইউরোপের সঙ্গে চলমান আর্থিক বিরোধে গ্রীসের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ওবামা প্রশাসন জার্মানী ও ইউরোপের ঋণদাতাদের সতর্ক করে দিয়েছে যে, তাদের এক বিপজ্জনক বিচ্ছিন্নতা ও ইউরোজোনের খ--বিখ- এড়াতে এথেন্সের সঙ্গে অবশ্যই সমঝোতা করতে হবে। খবর টেলিগ্রাফ ও ওয়েবসাইটের। মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক উপ-উপদেষ্টা ক্যারোলিন এ্যাটকিনসন বলেন, আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক অর্থনীতির স্বার্থেই ইউরোপের গ্রীসকে ইউরোজোনের মধ্যে রাখা উচিত। এ উদ্দেশে একটি চুক্তিতে পৌঁছতে ইউরোপীয় সরকারগুলোর আরও আপোসরফা করা উচিত। তারা ইতোপূর্বে দু’বার গ্রীসকে দেউলিয়াত্ব থেকে উদ্ধার করতে অর্থ সহায়তা (বেইলআউট) দিয়েছিল। এ্যাটকিনসন বলেন, ইউরোজোন কর্তৃপক্ষগুলো ঋণ পরিশোধের প্রধান দায়িত্ব দুর্বল ঘাটতি আক্রান্ত রাষ্ট্রগুলোর ওপর আরোপ করেছে। তাদের ইউরো সঙ্কট নিরসনের বিষয়ে তাদের দায়িত্ব গ্রহণে আরও পদক্ষেপ নেয়া উচিত। তিনি শুক্রবার লন্ডনের চ্যাথাম হাউসে এক প্রকাশ্য আলোচনা সভায় ভাষণ দিচ্ছিলেন। তিনি বলেন, নয়াগ্রিক সরকারের আরও সংস্কারের এক বিশ্বাসযোগ্য পরিকল্পনা পেশ করা প্রয়োজন। কিন্তু তিনি একথাও বলেন যে, গ্রীসে আয়, প্রকৃত মজুরি ও উৎপাদন খুবই দ্রুত হ্রাস পেয়েছে এবং বেকারত্বের হার বড় মাত্রায় বেড়ে গেছে- ঋণদাতাদের জন্য একথা বিবেচনায় নেয়াও প্রয়োজন। তিনি বলেন, গ্রীস উদ্বৃত্ত বাজেট অনুযায়ী চলছে। আর্থিক ঘাটতি আরও কত বেশি কমানো উচিত? বলে তিনি প্রশ্ন করেন। এ মন্তব্য শুনে গ্রিক অর্থমন্ত্রী ইয়ানিস ভারোকাফিস খুশিই হবেন। কারণ তিনি চান ইউরোপীয় কমিশন, ইউরোপিয়ান সেন্ট্রাল ব্যাংক ও আইএমএফের নির্দেশিত চলতি বছরের জন্য জিডিপির শতকরা ৩ ভাগ এবং আগামী বছরের জন্য শতকরা ৪ দশমিক ৫ ভাগ বাজেট উদ্বৃত্তি হ্রাস করে শতকরা ১ দশমিক ৫ ভাগ করা হোক। মিসেস এ্যাটকিনসন বলেন, দু’পক্ষই তাদের চরম অবস্থান থেকে সরে আসতে শুরু করায় হোয়াইট হাউস স্বস্তিবোধ করছে। এটি এ স্পষ্ট সতর্কবাণী যে, ওয়াশিংটন যেমন এথেন্সের বামপন্থী সিরিযা সরকারের প্রতি বিরক্ত ঠিক তেমন ইউরোজোনের ঋণদাতাদের ঔদ্ধত্য দৃষ্টিভঙ্গী নিয়েও বিবৃত। এ্যাটকিনসন বলেন, আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস, গ্রীস যাতে ইউরোতে থাকে ও সমৃদ্ধি লাভ করে, গ্রীস ও এর ঋণদাতাদের এমন আপোসরফা উদ্ভাবন করা গ্রীস, গ্রিক জনগণ এবং সম্ভবত বিশ্বের অর্থনীতির স্বার্থেও প্রয়োজন। দু’পক্ষ তাদের বাকযুদ্ধের সুর কিছুটা নরম করেছে এবং বিস্তারিত বিষয়ে আলোচনা শুরু করতে রাজি হয়েছে। কিন্তু প্রত্যেকেই কৃচ্ছ্রনীতি ও ঋণ মওকুফ সম্পর্কিত মূল বিরোধ নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন অবস্থানে রয়েছে। ইউরোপীয়ান সেন্ট্রাল ব্যাংক যদি গ্রিক ব্যাংকগুলোকে নগদ অর্থ সরবরাহ বন্ধ করে দেয় এবং দেশটিকে ইউরো ত্যাগ করতে বাধ্য করে, তা হলে অন্যান্য দেশে এর সামান্য প্রভাবই পড়বে- ইউরোপে ব্যাপকভাবে প্রচলিত এ মতের অংশীদার নয় মার্কিন প্রশাসন। প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ইউরোপে অর্থ ও ঋণ সরবরাহ বাড়ানোর নীতিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে গ্রীস সঙ্কটের সুযোগ গ্রহণ করেন। চলতি মাসের প্রথমদিকে ওবামা বলেন, আপনারা মন্দাক্লিষ্ট দেশগুলোকে অর্থ সরবরাহ সীমিত রাখার নীতি চালিয়ে যেতে পারেন না। তারা যাতে তাদের ঋণ পরিশোধ করতে পারে, সে জন্য কোন সময়ে প্রবৃদ্ধি বাড়ানোর কৌশল অবলম্বন করতে হবে। বিশ্বে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে প্রবৃদ্ধির হার হ্রাস পাওয়ায় ক্রমশ বিচলিতবোধ ওয়াশিংটন।
×