ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

পায়রা নদীর মোহনায় ট্রলারডুবি ॥ সাত লাশ উদ্ধার

প্রকাশিত: ০৫:৩৮, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

পায়রা নদীর মোহনায় ট্রলারডুবি ॥ সাত লাশ উদ্ধার

নিজস্ব সংবাদদাতা, বরগুনা/কলাপাড়া ও সংবাদদাতা, আমতলী ॥ বরগুনার তালতলী উপজেলার তেতুলবাড়িয়ায় পায়রা নদীর মোহনায় যাত্রীবাহী ট্রলার ডুবে সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে এ ট্রলারডুবির ঘটনা ঘটে। ট্রলারটি কুয়াকাটার মহিপুর থেকে থেকে বরগুনার বামনা উপজেলার চলাভাঙ্গা দরবার শরীফে একটি মাহফিলে যাচ্ছিল। ট্রলারে দু’শতাধিক যাত্রী ছিল। জানা গেছে, পটুয়াখালীর কুয়াকাটা থেকে শুক্রবার সকাল পৌনে নয়টায় দু’শতাধিক যাত্রী নিয়ে ‘এফবি ফাতিমা’ নামে একটি মাছ ধরা ট্রলার চলাভাঙ্গা দরবার শরীফের বার্ষিক মাহফিলে যাচ্ছিল। বঙ্গোপসাগরের কূলঘেঁষে যাওয়ার সময় স্রোতের তোড়ে বেলা ১১টার দিকে সেটি ডুবে যায়। নিশানবাড়ীয়া ইউপি চেয়ারম্যান দুলাল ফরাজী জানান, ট্রলারটি ডুবে গেলে স্থানীয়রা যাত্রীদের উদ্ধারের চেষ্টা চালায়। এ সময় জয়নাল নামে একজনের মৃতদেহ উদ্ধার করেন তারা। পরে উদ্ধার অভিযানে অংশ নেয় তালতলী সখিনা ক্যাম্পে অবস্থানরত কোস্টগার্ড সদস্যরা। তারা ডুবে যাওয়া ট্রলারটি টেনে কিনারে আনার পর আরও ছয়জনের লাশ পাওয়া যায়। লাশ ছয়টি হলো- কলাপাড়ার খাজুরা গ্রামের নাঈম (৯) ও আলী হোসেন (৩২), আলীপুরের ইউসুফ মাঝি (৫৫) ও আমির আলী (৫০), কুয়াকাটার হারুন মিয়া (৪৮), লতাচাপলি ইউনিয়নের লক্ষ্মীর বাজারের সফিজ উদ্দিনের (৬০)। উদ্ধার হওয়া যাত্রী আলীপুর বাজারের মৎস্য ব্যবসায়ী চান মিয়া সাংবাদিকদের জানান, সকাল পৌনে নয়টার দিকে আবদুল কাদের মাঝির ‘এফবি ফাতিমা’ ট্রলারে চলাভাঙ্গা দরবার শরীফ মাহফিলের উদ্দেশে তারা যাত্রা শুরু করে। তালতলীর তেতুলবাড়িয়া এলাকায় এলে ট্রলারটি ডুবে যায়। তবে অধিকাংশ যাত্রী সাঁতরে তীরে উঠতে সক্ষম হলেও পাঁচজনের সলিলসমাধি হয়। ট্রলারটি ডোবার পর পরই তেতুলবাড়িয়া চরে এলাকার শতশত লোক ভিড় করে। নিহত স্বজনদের কান্না ও আহজারিতে এলাকায় শোকাবহ পরিবেশের সৃষ্টি হয়। তালতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ বাবুল আক্তার বলেন, বঙ্গোপসাগর, বিষখালী ও পায়রা নদীর মোহনায় তীর থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে স্রোত এবং অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাইয়ের কারণে ট্রলারটি কাত হয়ে ডুবে যায়। ডুবে যাওয়া ট্রলারের মালিক কাদের মাঝির দাবি, ইঞ্জিন বিকল হয়ে গেলে ঢেউয়ের তোড়ে ট্রলারটি ডুবে যায়। বরগুনা জেলা প্রশাসক মোঃ জহিরুল ইসলাম ও পুলিশ সুপার মোঃ সাইফুল ইসলাম ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে উদ্ধার কাজ তদারকি করেন। লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে বরগুনা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিহতদের লাশ পাঠানোর জন্য পাঁচ হাজার করে টাকা অনুদান দেয়া হয়। তালতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী তোফায়েল আহম্মেদ জানান, নিখোঁজ যাত্রী উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত আছে।
×