ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

১২ কোটি টাকার সড়কে নেই সংযোগ

দুই সেতু এক যুগেও কাজে আসেনি

প্রকাশিত: ০৪:২৫, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

দুই সেতু এক যুগেও কাজে আসেনি

নিজস্ব সংবাদদাতা, কিশোরগঞ্জ, ৮ ফেব্রুয়ারি ॥ নিকলী উপজেলার সোয়াইজনি নদীর উপর ও করিমগঞ্জ উপজেলার মরিচখালী খালের উপর প্রায় এক যুগ আগে কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে সেতু দুটি নির্মাণ করা হলেও আজ পর্যন্ত দুইপাড়ে তৈরি করা হয়নি সংযোগ সড়ক। এছাড়াও করিমগঞ্জে আরও বেশ কয়েকটি সেতু নির্মাণ করা হলেও কেবল সংযোগ সড়কের অভাবে কোন কাজেই আসছে না। এতে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে ওইসব এলাকার ছাত্র-শিক্ষকসহ সাধারণ মানুষের। জানা গেছে, নিকলী সদরের নতুনবাজার হতে হাওরের মধ্যদিয়ে দামপাড়া, মজলিশপুর, কারপাশা ইউনিয়ন পরিষদ, নানশ্রী বাজার হয়ে করিমগঞ্জের গুণধর-মরিচখালী সোয়াইজনি নদীর উপর একযুগ আগে ১৩০ মিটার দৈর্ঘ্য সেতু নির্মাণ করে জেলা সড়ক ও জনপথ বিভাগ। তৎকালীন প্রায় ৮ কোটি টাকার বেশি ব্যয়ে জনগুরুত্বপূর্ণ এই সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হলেও আজ অবধি নির্মাণ হয়নি দুইপাড়ের সংযোগ সড়ক। যে কারণে সেতুর উপর দিয়ে কোন যানবাহন চলাচল করতে পারছে না। একই অবস্থায় করিমগঞ্জের মরিচখালী খালের উপর নির্মিত সেতুর। ১৯৯৬ সালে জেলা পরিষদ ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে এটির নির্মাণ কাজ শেষ করলেও এখনও তৈরি হয়নি সংযোগ সড়ক। দীর্ঘদিন পার হলেও রাস্তা নির্মাণ না করায় সাধারণ জনগণের কোনোদিন সেতুতে উঠে দেখার সৌভাগ্য হয়নি। সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, এই সেতুর পশ্চিম পাশের রেলিংয়ের বেশিরভাগ অংশই ভেঙে পড়েছে। রড চুরি করে নিয়ে গেছে। সংযোগ সড়ক না থাকায় সুবিশাল উঁচু এই সেতুটি কোনো অবস্থায়ই ব্যবহার করা সম্ভব নয়। সেতুর পাশেই রয়েছে উচ্চ বিদ্যালয়সহ একটি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়। এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীরা সেতুর নিচ দিয়ে খেয়া নৌকাযোগে ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়া করছে। এছাড়া সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ড. এম ওসমান ফারুকের নিজগ্রাম উপজেলার গুজাদিয়ার পালইকান্দা গুচ্ছগ্রামে, পৌরসভার আশুতিয়াপাড়া টেকের বাড়িসংলগ্ন, বারঘরিয়া আসনপুর এলাকার গুদার সেতুসহ বেশ কয়েকটি স্থানে সরকারের লাখ লাখ টাকা ব্যয়ে সেতু নির্মাণ করা হলেও কেবল সংযোগ সড়কের অভাবে এসব সেতু এলাকাবাসীর কোন উপকারেই আসছে না। এসব এলাকার লোকজনের অভিযোগ, বিভিন্ন সময়ে রাস্তা নির্মাণ করতে স্থানীয় মন্ত্রী-এমপির কাছে বহুবার যোগাযোগ করেও কোনো কাজ হয়নি। আর এ সেতু ব্যবহার করতে না পেরে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে ছাত্র, শিক্ষকসহ সাধারণ মানুষের। জেলা এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ গোলাম মওলা জানান, নিকলী-সহরমুল ও করিমগঞ্জ উপজেলা অংশের ১০ দশমিক ৪৬ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য রাস্তার প্রাক্কলন প্রস্তুত করে পাঠানো হয়েছে। ৩৬ কোটি ৪২ লাখ টাকা ব্যয়ে ডাবল লেনের এ সড়ক নির্মাণ করা হলে দুই উপজেলার যোগাযোগ ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আসবে।
×