ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সহিংসতার অবসান চায় কানাডা

প্রকাশিত: ০৫:৩০, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

সহিংসতার অবসান চায় কানাডা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ চলমান সহিংসতা বাংলাদেশকে ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দিচ্ছে। শান্তি ও গণতন্ত্রের স্বার্থে চলমান পরিস্থিতির অবসান ঘটানো প্রয়োজন বলে মনে করে কানাডা। এছাড়া বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনী নূর চৌধুরীকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর জন্য কানাডা সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। বুধবার পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের সঙ্গে কানাডার হাইকমিশনার বিন পিরে লারামের এক সাক্ষাতে এ আহ্বান জানানো হয়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ঢাকার কানাডীয় হাইকমিশন থেকে পাঠানো পৃথক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা ইকোয়াল ফিউচারস পার্টনারশীপের (ইএফপি) এশিয়া প্রশান্ত অঞ্চল কমিটির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য নির্বাচিত হয়েছে বাংলাদেশ। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের সঙ্গে কানাডার হাইকমিশনারের সাক্ষাতের বিষয়ে দেশটির ঢাকার দূতাবাস থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঢাকায় নিযুক্ত হাইকমিশনার পিরে লারামে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীকে বলেন, চলমান সহিংসতা বাংলাদেশকে কঠিন পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দিচ্ছে। শান্তি ও গণতন্ত্রের স্বার্থে চলমান পরিস্থিতির অবসান ঘটানো প্রয়োজন। তিনি আরও বলেন, সুশাসন, শান্তি ও গণতন্ত্র নিশ্চিত হলে দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নও নিশ্চিত হয়। চলমান রাজনৈতিক সহিংসতা দেশ ও মানুষকে ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দিচ্ছে। এ সহিংসতার অবসান ঘটানো প্রয়োজন। পাশাপাশি অহিংসভাবে অবশ্যই রাজনৈতিক কর্মকা-ের অধিকার থাকতে হবে। সৌজন্য সাক্ষাতে বাংলাদেশ-কানাডার দীর্ঘ ৪০ বছরের সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করা হয়। সামনের দিনগুলোতে এ সম্পর্ক আরও কীভাবে গভীর করা যায়, সে বিষয়ে আলোচনা হয়। কানাডার হাইকমিশনার পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে জানান, বাংলাদেশের উন্নয়নে কানাডা দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও গভীর করতে আগ্রহী। বিশেষ করে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও টেকসই উন্নয়ন খাতে কানাডা বিনিয়োগ করতে চায়। বিন পিয়েরা লারাম আরও বলেন, দুই দেশের স্বার্থ উন্নয়ন ও উজ্জ্বল ভবিষ্যত নিশ্চিতে কানাডা-বাংলাদেশ একসঙ্গে কাজ করবে। পাশাপাশি বাংলাদেশকে মধ্য আয়ের দেশে উন্নীত হতে সহায়তা করবে কানাডা। সাক্ষাতের বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনী নূর চৌধুরীকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর জন্য হাইকমিশনারের মাধ্যমে কানাডা সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। প্রতিমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতা লাভের পরেই ১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম দিকে বাংলাদেশকে কানাডার স্বীকৃতি দানের মধ্যে দিয়ে দুদেশের মধ্যেকার সৌহাদ্যপূর্ণ সম্পর্ক শুরু হয়। পরবর্তীতে অর্থনৈতিকসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে সহযোগিতার মাধ্যমে কানাডা বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে আসছে। বাংলাদেশের অর্থনীতি ও সামাজিক অন্যান্য সূচকের অভূতপূর্ব উন্নয়নের বিষয়ে হাইকমিশনার পিরে লারামের আগ্রহের প্রেক্ষিতে শাহরিয়ার আলম জানান, শুধুমাত্র বৈদেশিক সহায়তা নয় বরং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিজ্ঞ ও দূরদর্শী নেতৃত্বে এদেশের জনগণের কঠোর পরিশ্রম, কৃষিখাতে নব নব উদ্ভাবন ও সেই উদ্ভাবনীর প্রয়োগ, শিল্পখাতের ক্রমবর্ধমান প্রবৃদ্ধি এবং রফতানির উর্ধগতির ফলে এ উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে। পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, অর্জিত সাফল্যসমূহ এদেশের সরকার ও জনগণকে উন্নয়নের পরবর্তী স্তরে উত্তরণের আত্মবিশ্বাস ও অনুপ্রেরণা যোগাচ্ছে। এ পথ ধরেই বর্তমান সরকার বাংলাদেশকে ২০২১ সালের মধ্যে একটি মধ্যম আয়ের দেশের পরিণত করার লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। কানাডীয় হাইকমিশনার ভবিষ্যতে আরও অধিক সহযোগিতার মাধ্যমে বাংলাদেশ ও কানাডার মধ্যকার বিরাজমান সম্পর্ককে একটি নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়া সম্ভব বলে মন্তব্য করেন। বাংলাদেশে তথ্য প্রযুক্তিসহ অন্যান্য খাতে কানাডীয় বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগের ব্যাপক সুযোগ রয়েছে বলে তিনি জানান। হাইকমিশনার কানাডাকে বাংলাদেশের উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে বর্ণনা করে আশা প্রকাশ করেন, দুদেশের মধ্যে সম্প্রসারিত অর্থনৈতিক সহযোগিতা উভয় দেশের জন্যই লাভজনক হবে। হাইকমিশনার আরও বলেন বাংলাদেশ ও কানাডার মধ্যে ক্রমবর্ধমান বাণিজ্য বর্তমানে ১ দশমিক ৯ বিলিয়ন কানাডিয়ান ডলার ছাড়িয়ে গেছে। এছাড়া কানাডায় বাংলাদেশী পণ্যের শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার অব্যাহত রাখার জন্য বিদ্যমান শুল্ক বিষয়ক চুক্তিটি পরবর্তী ১০ বছরের জন্য নবায়ন করা হয়েছে। তিনি কানাডার পক্ষ হতে বাংলাদেশকে সকল ধরনের সহযোগিতা আশ্বাস প্রদান করেন। পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কানাডীয় হাইকমিশনারকে বাংলাদেশে দায়িত্ব পালনকালে সর্বাত্মক সহায়তার নিশ্চয়তা দেন। বাংলাদেশ ইএফপির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য নির্বাচিত ॥ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা ইকোয়াল ফিউচারস পার্টনারশীপের (ইএফপি) এশিয়া প্রশান্ত অঞ্চল কমিটির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য নির্বাচিত হয়েছে বাংলাদেশ। এশিয়া প্রশান্ত মহসাগরীয় অঞ্চলের ৮টি দেশের সঙ্গে বাংলাদেশও এ সংস্থার সদস্য নির্বাচিত হয়েছে। বুধবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
×