ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

জিঘাংসার রাজনীতি

প্রকাশিত: ০৪:৩৯, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

জিঘাংসার রাজনীতি

ছবি কথা বলে। ছবি সুন্দর করে প্রকৃত সত্য তুলে ধরে। তাই একটি ছবিকে বলা হয় হাজার শব্দের চেয়েও বেশি শক্তিশালী। গত ৬ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার একটি বহুল প্রচারিত ইংরেজী দৈনিকের প্রথম পৃষ্ঠায় তাদের প্রধান সংবাদ ‘পেট্রোলবোমা কেড়ে নিল আরও তিনটি প্রাণ।’ ডান পাশে আগুনে দগ্ধ মুখ ব্যান্ডেজ করা মুমূর্ষু অবস্থায় হাসপাতালের শয্যায় শায়িত এক অসহায় ব্যক্তির ছবি। ছবিটির ঠিক ডান পাশে অষ্টম কলামে খালেদা জিয়ার দাবি ‘আমরা বার বার বলেছি আমাদের আন্দোলন শান্তিপূর্ণ’ এই কথাগুলো। ঠিক এর উপরিভাগে ছাপানো লাল বৃত্তের মধ্যে গোলাপী আভায় ম-িত বিএনপি নেত্রীর মুখায়ব তাদের এই ন্যক্কারজনক মিথ্যাচারের মুখে যে চপেটাঘাত তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। এই ছবিটি যাঁরা তীক্ষè দৃষ্টি দিয়ে দেখেছেন তাদের কাছে বিষয়টি পরিষ্কার হতে বেশি সময় না নেয়ারই কথা। সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে অনেক রক্তের বিনিময়ে অর্জিত আমাদের প্রিয় বাংলাদেশে মাসাধিককাল ধরে চলছে মানুষ পুড়িয়ে মারার বর্বর নৃশংসতা। ক্ষমতা হারিয়ে একেবারে পাগল হয়ে যাওয়া বেগম জিয়ার প্রেরণায় বিএনপি-জামায়াত ক্যাডাররা গত ৬ জানুয়ারি থেকে নিরন্তর গাড়িতে পেট্রোলবোমা মেরে নির্মমভাবে হত্যা করছে নিরীহ-নিষ্পাপ শিশু-নারী-বৃদ্ধসহ সব বয়সের সাধারণ মানুষ। অগ্নিদগ্ধ অনেক অসহায় মানুষ যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে। দগ্ধ মানুষগুলোর গোঙানি ও তাদের স্বজনদের আহাজারি হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে হৃদয়বিদারক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়েছে। অগ্নিদগ্ধ মানুষগুলোর আর্তনাদ আর প্রিয়জন হারিয়ে বা তাদের যন্ত্রণাক্লিষ্ট চিৎকার এবং স্বজনদের আহাজারিতে হাসপাতালের ভেতরে-বাইরে বাতাস প্রতিনিয়ত ভারি হয়ে উঠছে। তবুও কঠোর-কঠিন খালেদা জিয়ার মনে এতটুকু মায়া-মমতার উদ্রেক হচ্ছে না। কারণ, অনেকেই মনে করছেন, তিনি একেবারেই হৃদয়হীন ও পাষাণ মনের আবেগহীন একটি মানুষ। যার মধ্যে ভাবাবেগ বলে কিছুই নেই। তিনি আবার দেশের কথা বলেন। দেশের মানুষের কথা বলেন। দেশ আর মানুষ তার কাছে কোন বিষয়ই নয়। তিনি শুধু ভাবেন তাঁর নিজের কথা আর তাঁর বড় ছেলের ভবিষ্যতের কথা। তাঁর চিন্তা-চেতনায় শুধু একটি বিষয়ই প্রাধান্য পায় বা তিনি সব সময় আচ্ছন্ন হয়ে থাকেনÑ কী করে ক্ষমতায় গিয়ে তাঁর প্রাণের দোসর যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বানচাল করে তাদের জীবন বাঁচিয়ে তাঁর পরমপ্রিয় পাকিস্তানীদের মনোরঞ্জন করতে পারবেন। তিনি আন্দোলন করছেন অথচ রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে মাঠপর্যায়ে তাঁর দলের নেতাকর্মীদের পাত্তায়ই নেই। আপোসহীন নেত্রী বলে পরিচিত বেগম জিয়া গুলশানের কার্যালয়ে আরাম-আয়েশে শুয়ে-বসে এখন আবার অবরোধের মধ্যে একযোগে হরতালেরও ডাক দিচ্ছেন। জনগণ ডরে-ভয়েও এই অপ্রয়োজনীয় অবরোধ বা হরতাল মানার কোন প্রয়োজন আছে বলে মনে করছেন না। কেউ তাঁর কথা আমলে নিচ্ছে না। গাড়িতে পেট্রোলবোমা মেরে আগুন বা গাড়িতে উঠে পেট্রোল বা কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগানো সত্ত্বেও সব ধরনের গাড়িই চলছে। তারপরও বিএনপি নেত্রীর লাজ-শরমের বালাই নেই। এই মহিলা ইসলামের কথা বললেও এজতেমার মধ্যেও অবরোধ চালিয়ে গেছেন। আপোসহীন নেত্রী না! তাই তিনি তাঁর কর্মসূচী পালনের ক্ষেত্রেও কোন আপোস করতে পারেন না। আর তাই তো তিনি ও তাঁর দল গত ২ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হতে যাওয়া এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার সময়ও তাঁর আন্দেলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিলেন। পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য তাঁর নিজের দুই নাতিনকে তাদের মায়ের সঙ্গে মালয়েশিয়ায় পাঠিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু দেশের প্রায় ১৫ লাখ কোমলমতি ছেলেমেয়ের কথা তাঁর একবারও মনে হয়নি। উপরন্তু, তাদের একজন প্রাক্তন মন্ত্রী এসএসসি পরীক্ষা সম্পর্কে বিবিসি বাংলা সার্ভিসকে বলেই ফেলেছেনÑ ‘কিসের আবার পরীক্ষা, আগে আন্দোলন।’ আসলে বিএনপির প্রায় সব নেতানেত্রীরই শরম-লজ্জা একটু কম বলেই মনে হচ্ছে। তা না হলে এ রকম মন্তব্য? সাফ কথার মানুষ বেগম জিয়া গত ৫ ফেব্রুয়ারি আবারও পেট্রোলবোমায় হতাহতদের দায়-দায়িত্ব নিতে সম্পূর্ণ অস্বীকার করলেন। নির্লজ্জের মতো পুরো দায়িত্ব তিনি সরকারের ওপর চাপিয়ে দিলেন। গত ১৯ জানুয়ারিও বেগম জিয়া পেট্রোলবোমা মেরে মানুষ মারা এবং বাসে আগুন দেয়ার দায় আওয়ামী লীগের ঘাড়ে চাপিয়েছিলেন। এখানে উল্লেখ করা একান্তই প্রয়োজন যে, বেগম সাহেবা পেট্রোলবোমা হামলায় নিরীহ প্রাণ হরণের দায়-দায়িত্ব যতই সরকারের ওপর চাপাতে চান না কেন তা আর ধোপে টিকছে না। কারণ, ইতোমধ্যে বাংলা লিকস নাশকতার সঙ্গে খালেদা জিয়ার সম্পৃক্ততা সম্পর্কে তাঁর চরম মিথ্যাচারের জারিজুরি সব ফাঁস করে দিয়েছে। বেগম জিয়ার টেলিসংলাপের অডিও টেপ ফাঁস করে দিয়েছে বাংলা লিকস। পত্রিকায় প্রকাশিত তথ্যানুযায়ী ইউটিউবে বাংলা লিকস নামের ওই এ্যাকাউন্ট থেকে আপলোড করা এসব কথোপকথনে রয়েছে নেতাকর্মীদের প্রতি খালেদা জিয়ার দেয়া নাশকতামূলক নানা নির্দেশনা। খালেদা জিয়ার এ ধরনের টেলিফোন সংলাপের অডিও টেপ প্রকাশে সারাদেশে তোলপাড় শুরু হয়েছে। সরকারের কেন্দ্র থেকে শুরু করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও বইছে সমালোচনার ঝড়। নাশকতার নির্দেশ সংবলিত টেলিফোনে দলের নেতাদের সঙ্গে খালেদা জিয়ার কথোপকথন নিয়ে গত ২ ফেব্রুয়ারি সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকেও আলোচনা হয়েছে। খালেদা জিয়ার যে পাঁচটি অডিও টেপ বাংলা লিকস প্রকাশ করেছে তার চারটিই ২০১১ সালের ১৮ ডিসেম্বর ঢাকার একটি মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশকে কেন্দ্র করে। প্রকাশিত চারটি টেপই ওই সমাবেশ শুরুর আগে তার দলের কয়েকজন নেতার সঙ্গে বেগম জিয়ার কথোপকথন। তাতে নাশকতার কথা বলা আছে। গত ৫ ফেব্রুয়ারি বেগম জিয়া আরও বলেছিলেন, ‘একটি যৌক্তিক পরিণতিতে না পৌঁছা পর্যন্ত এ আন্দোলন চলবে।’ তাই তো মানুষ ইতোমধ্যেই বলা শুরু করেছেÑ ‘যে আন্দোলনেরই কোন যৌক্তিকতা নেই সে আন্দোলনের আবার কিসের যৌক্তিক পরিণতিতে পৌঁছা।’ বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও তাঁর দলের ডাকসাইটে নেতানেত্রী এবং প্রধান শরিক জামায়াতসহ অন্য দলের নেতারা বিগত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বৈধতা নিয়ে হাস্যকর প্রশ্ন তোলেন। কোন কোন দল যদি জোট বেঁধে নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত নিতে পারে, ঠিক একইভাবে অন্য দলও নির্বাচনে অংশ নেয়ার অধিকার সংরক্ষণ করে। কথাটি নির্দ্বিধায় বলা যায় যে, বেগম জিয়া ও তার জাতীয়তাবাদী দলের জন্য নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা বা না করা বড় প্রশ্ন ছিল না। দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করে পাকিস্তানী গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের প্রেসক্রিপশন মোতাবেক তার নিজ দলের নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করাই তার কাছে বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছিল। যাতে তার নিজের এবং পকিস্তানের বড় দোসর যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বানচাল করা যায়। বিগত নির্বাচনের পূর্বে সঙ্কট নিরসনে দেশে দুই নেত্রীর মধ্যে সংলাপ অনুষ্ঠানের কথা বেশ জোরেশোরেই আলোচনায় এসেছিল। দেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশবাসীকে তাক লাগিয়ে ২০১৩ সালের ২৬ অক্টোবর সংলাপে বসার জন্য বেগম খালেদা জিয়াকে টেলিফোন করেন। প্রধানমন্ত্রী ও বেগম খালেদা জিয়ার মধ্যে দীর্ঘ ৩৭ মিনিট ফোনালাপ হয়। অবশ্য টেলিফোনে কথোপকথনের সময় বেগম জিয়ার যুদ্ধংদেহী ও আগ্রাসী মনোভাবের একটি প্রকৃষ্ট প্রমাণ দেশবাসী ঐদিন পেয়েছিলেন। দীর্ঘ ৩৭ মিনিটের ৭ মিনিটও প্রধানমন্ত্রী কথা বলতে পারেননি। দীর্ঘ ৩০ মিনিটই বেগম জিয়া প্রধানমন্ত্রীকে তাঁর আগ্রাসী কথার বন্যায় ভাসিয়ে দিয়েছিলেন। বাঙালী জাতি সেদিন খালেদা জিয়ার আগ্রাসনের সুস্পষ্ট প্রমাণ পেয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এরকম অনাহূত প্রচ- আগ্রাসন সহ্য করে কি করে যে মাথা ঠা-া রেখে ধৈর্য ধারণ করতে পেরেছিলেন সেটা অবশ্যই প্রশংসার দাবিদার। বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুত্রশোকে কাতর বেগম খালেদা জিয়ার প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানাতে গত ২৪ জানুয়ারি রাত সাড়ে ৮টায় ছুটে গিয়েছিলেন বেগম জিয়ার গুলশান কার্যালয়ে। প্রধানমন্ত্রী সমবেদনা জানাতে পারেননি। কারণ, শত অনুরোধ করার পরও বড় গেট ছোট গেট কোন গেটই খোলা হয়নি বলে অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনকভাবে গেটের সামনে দাঁড়িয়ে থেকে প্রধানমন্ত্রীকে ফিরে যেতে হয়েছে। দেশের সুন্দর মনের মানুষরা বিষয়টির তীব্র সমালোচনা করেছেন। দেশের বিশিষ্ট আইনজীবী ব্যারিস্টার রফিকুল হকও বিষয়টির সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘এর মাধ্যমে বিএনপি, দুই নেত্রীর সাক্ষাতের একটি সুবর্ণ সুযোগ হেলায় হারিয়েছে।’ এমনকি বিএনপি নেতা ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ এবং মির্জা আব্বাসও ব্যাপারটি সৌজন্যমূলক হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন। আমার মতে কূটকৌশলে পারদর্শী ও তথাকথিত আপোসহীন বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও তাঁর অন্য কুশীলবরা ইচ্ছা করেই তাদের সুদূরপ্রসারী কোন পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই ঘটনাটি ঘটিয়েছে। শান্তিপূর্ণ হরতাল-অবরোধের নামে বিএনপি-জামায়াত জোট তাদের রাজনৈতিক প্রতিহিংসার আগুনের সঙ্গে পেট্রোলবোমার আগুনের লেলিহান শিখার মিশ্রণ ঘটিয়ে পুড়িয়ে মারছে দেশের সাধারণ মানুষ। এ পর্যন্ত তাদের লোকজনের নিক্ষিপ্ত বোমার আঘাতে অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা গেছে প্রায় ৮০ জন নিরীহ মানুষ। মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছে আরও প্রায় দুই শতাধিক আদম সন্তান। আগুনে জ্বালানো হয়েছে ও ভাংচুর করা হয়েছে প্রায় হাজার পাঁচেক যানবাহন। ট্রেনেও হামলা করা হয়েছে। দেশের অর্থনীতিও হয়েছে অগ্নিদগ্ধ। গত এক মাসে দিনমজুর থেকে দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ী পর্যন্ত অর্থনীতির ক্ষতি হয়েছে কমপক্ষে ৭০ হাজার কোটি টাকা। খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে এই জিঘাংসার রাজনীতি কোন জনসমর্থন তো পাচ্ছেই না বরং সাধারণ মানুষ ক্ষেপে গিয়ে বিএনপি নেত্রীর কুশপুতুলও পোড়াচ্ছে। বিএনপি নেত্রীর চরম একগুয়েমি মনোভাব ও আন্দোলনের নামে মানুষ মারার প্রতিবাদে বিভিন্ন সংগঠন নানা কর্মসূচী পালনের মাধ্যমে তাঁদের তীব্র ক্ষোভ-বিক্ষোভ প্রকাশ করছে। দেশে শান্তি নিশ্চিত করতে খালেদা জিয়াকে গ্রেফতার ও জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি বন্ধের দাবি জানিয়েছে তারা। প্রতিবাদী মানুষ ঝাড়ু মিছিল করেছে। খালেদা জিয়ার গুলশান কার্যালয়ের কাছে পরিবহন শ্রমিকরা কাফনের কাপড় পরে গত বৃহস্পতি ও শুক্রবার বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে। তারা অবিলম্বে এই অশুভ হরতাল-অবরোধ প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে। এদিকে যুক্তরাষ্ট্রসহ কিছু প্রভাবশালী বিদেশী রাষ্ট্র বিএনপির আন্দেলনকে রাজনীতি নয়, সহিংসতা হিসেবেই দেখছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ভারত বিএনপির আন্দোলনকে সহিংসতা হিসেবে অভিহিত করে বলেছে, সহিংসতা কখনোই রাজনীতির ভাষা হতে পারে না। অন্যদিকে কিছু মুখচেনা বুদ্ধিজীবী ও বিভিন্ন টিভি চ্যানেলের টকশোতে অংশগ্রহণকারী কিছু চিহ্নিত ‘টকার’ উদ্ভূত পরিস্থিতি নিরসনে সরকারকে সংলাপে বসার পরামর্শ দিচ্ছেন। সেজন্য এসব লোকের আমি ‘টাকার জন্য টকার’ বলেই অভিহিত করতে চাই। কারণ, বিএনপি নেত্রী নিজে ইচ্ছে করে বিগত নির্বাচনে অংশ না নিয়ে নির্বাচন ভ-ুল করতে চেয়েছিলেন। প্রতিহত করতে চেয়েছিলেন। এখন সন্ত্রাস চালিয়ে সরকারকে সংলাপে বসতে বাধ্য করতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। কারণ, তিনি খুব ভাল করেই বুঝে ফেলেছেন যে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার আর মাত্র এক বছরের মধ্যে দেশের উন্নয়নে এতসব কাজ করে ফেলবেন যে তখন এ সরকারের অবস্থান খুব দৃঢ় হয়ে যাবে। দেশের মানুষের মনে সরকারের অবস্থান এতটাই সুদৃঢ় হয়ে যাবে তখন সরকারের বিরুদ্ধে কোন কথাই বলা যাবে না। তাই তথাকথিত আপোসহীন নেত্রী যে কোন মূল্যে আন্দেলন চালিয়ে যাওয়ার ধনুকভাঙ্গা পণ করেছেন। তাতে মানুষ মরুক আর দেশ পুড়ুক, তাতে তার কিছু যায় আসে না। এই সরকারকে ঘায়েল করতে পারলেই হলো। আর সঙ্গতকারণেই সরকারও সন্ত্রাসের সম্রাজ্ঞীর সঙ্গে কোনরূপ আলোচনা নাকচ করে দিয়েছেন। দেশের শান্তিপ্রিয় মানুষও মনে করছে, কোনমতেই সন্ত্রাসের কাছে মাথানত করা যাবে না। অন্ততপক্ষে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার দিন হরতাল না দিতে শিক্ষামন্ত্রীর আল্লাহর নামে আকুল আবেদনকেও কোনরূপ তোয়াক্কা করা হয়নি। তাই সমস্ত শক্তি দিয়ে সন্ত্রাস বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিয়ে দেশের মানুষের শান্তি নিশ্চিত করতে হবে। তবুও খালেদা জিয়ার খামখেয়ালিপনার কাছে আত্মসমর্পণ করা যাবে না। সুযোগ নেই। লেখক : সাংবাদিক ও কলামিস্ট
×