ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

প্রস্তুত ডি ভিলিয়ার্স বাহিনী

প্রকাশিত: ০৫:৪৯, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

প্রস্তুত ডি ভিলিয়ার্স বাহিনী

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বিশ্বকাপে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে হট-ফেবারিট দক্ষিণ আফ্রিকা। অপেক্ষার অবসান ঘুচিয়ে প্রথমবারের মতো শিরোপার স্বাদ পেতে মরিয়া প্রোটিয়ারা। ইতিহাসের সেরা সাফল্য তুলে নিতে দক্ষিণ আফ্রিকা শতভাগ প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন অধিনায়ক এবি ডি ভিলিয়ার্স। ‘অনেক দিন ধরে কথা হচ্ছে। বিশ্বকাপ আসলেই স্পেশাল কিছু। প্রথমবারের মতো শিরোপা-স্বপ্ন পূরণ করতে তৈরি আমরা। দক্ষিণ আফ্রিকা শতভাগ প্রস্তুত।’ বলেন প্রোটিয়া অধিনায়ক। রবিবার ‘বি’ গ্রুপে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে প্রথম ম্যাচ জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে। তার আগে আজ নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে শেষ প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে তারা। সাম্প্রতিক নৈপুণ্যে আকাশে উড়ছে সহ-আয়োজক নিউজিল্যান্ড। ১১তম বিশ্বকাপের অন্যতম ফেবারিটের তালিকায় উঠে এসেছে কিউইরা। সুতরাং আজকের প্রস্তুতি ম্যাচটি দক্ষিণ আফ্রিকার জন্য বড় এক চ্যালেঞ্জ তো বটেই, ডি ভিলিয়ার্সদের নিজেদের প্রমাণেরও সুযোগ। আইসিসি র‌্যাঙ্কিংয়ে বর্তমানে তৃতীয় স্থানে দক্ষিণ আফ্রিকা। অস্ট্রেলিয়া ও ভারত তাদের ওপরে। তার চেয়েও বড় বিষয় অস্ট্রেলিয়া-ভারতের উত্থান পতন থাকলেও গত দুই মৌসুম ধারাবাহিক ভাল খেলে নিজেদের শক্তিমত্তার পরিচয় দিয়েছে প্রোটিয়ারা। এটিকে বড় করে দেখছেন ডি ভিলিয়ার্স। অধিনায়ক বলেন, ‘বিশ্বকাপ অনেক বড় আয়োজন। এখানে বড় দল, ছোট দল বলে কিছু নেই। কিন্তু আমরা কেবল নিজেদের কাছে অতীতের দিকেই তাকাতে চাই।’ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি আরও যোগ করেন, ‘গত দুই মৌসুম ধারাবাহিক ভাল খেলাটা আমাদের বাড়তি অনুপ্রেরণা। প্রতিটি পজিশনে সেরা পারফর্মার নিয়ে বিশ্বকাপের ময়দানে নামতে পারব। দলের খেলোয়াড়রা সবাই সেরাটা মেলে ধরতে মরিয়া। তারা জানে আমাদের কি করণীয়।’ শেষ বাক্যে বিশেষ কিছুর ইঙ্গিত করেন ডি ভিরিয়ার্স। সবাই জানে বলতে, আগের প্রতিটি বিশ্বকাপে ফেবারিট হয়েও নকআউট থেকে বিদায় নেয়ায় দলটির নামই হয়ে গেছে ‘চোকার দক্ষিণ আফ্রিকা!’ কদিন আগে সাবেক অধিনায়ক গ্রায়েম স্মিথও বলেছেন, ‘এই অপবাদ ঘোচাতে প্রয়োজন একটি শিরোপা। বর্তমান দলটির সেই সামর্থ্য রয়েছে।’ বিশ্ব ক্রিকেটের খোঁজ রাখেন এমন সবাই মানবেন, দূরন্ত সব খেলোয়াড় নিয়ে গড়া দক্ষিণ আফ্রিকা আক্ষরিকই দুর্দান্ত। অবসর নেয়ায় বড় তারকা জ্যাক ক্যালিসকে ছাড়া নামতে হচ্ছে। কিংবদন্তির অভাব পূরণ করতে তৈরি ফ্যাফ ডুপ্লেসিস নিজেই যেমন বলেছেন, ‘ক্যালিসকে শ্রদ্ধা। অবশ্যই তার কথা মনে পড়বে। তবে মাঠের পারফর্মেন্সে তার শূন্যস্থান পূরণের সামর্থ্য আমাদের রয়েছে। প্রয়োজন কেবল একসঙ্গে জ্বলে ওঠা। আশা করছি পারব।’ তবে মাত্রাতিরিক্ত ক্রিকেট খেলা নিয়ে প্রোটিয়াদের ভেতর অসন্তোষও রয়েছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের ঠিক আগে পেস আক্রমণের মূল ভরসা ডেল স্টেইন যেমন বলেছিলেন, এত ওয়ানডে আসলেই ‘পেইনফুল!’ অধিনায়ক ডি ভিলিয়ার্স অবশ্য ওসব নিয়ে ভাবছেন না। অধিনায়কের সঙ্গে একমত তরুণ কুইন্টন ডি’ককও। ইনজুরি কাটিয়ে ফেরা টপঅর্ডারের গুরুত্বপূর্ণ এই ব্যাটসম্যান যেমন বলেন, ‘মাঠ ও মাঠের বাইরে আমরা এখন ভাল অবস্থায় আছি। ইনজুরির পর ফেরাটা সবসময়ই কঠিন, সেটি যদি হয় বিশ্বকাপের মতো আসরে। তবে নিজের অবস্থা নিয়ে সন্তুষ্ট আমি। আর সবার মতো আমারও লক্ষ্য সেরাটা দেয়া। টেস্ট-ওয়ানডে দুই ঘারনার র‌্যাঙ্কিংয়েই প্রমাণ করেছি আমরা কি পারি। এবার সত্যিকারের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণের সুযোগ। দলের প্রতিটি সদস্য বিশ্বকাপে নিজেকে মেলে ধরতে তৈরি। আশার রাখি পারব।’ ‘বি’ গ্রুপে দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে আছে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ভারত, আনপ্রেডিক্টেবল পাকিস্তান, ডার্কহর্স ওয়েস্ট ইন্ডিজ, জায়ান্টকিলার জিম্বাবুইয়ে ও দুই সহযোগী দেশ আয়ারল্যান্ড ও আরব আমিরাত। তবে কাগজে-কলমে ও নৈপুণ্যের বিচারে গ্রুপে সবচেয়ে ফেবারিট দক্ষিণ আফ্রিকাই। প্রোটিয়ারা যে অনায়াসে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠে যাবে, তা বলা বাহুল্য। আজকের ম্যাচে চূড়ান্ত মহড়া দেয়ার সুযোগ ডি ভিলিয়ার্সদের সামনে। বৃষ্টিবিঘিœত প্রথম প্রস্তুতি ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে ৫ উইকেকেটর বড় ব্যবধানে হারিয়ে উজ্জীবিত তারা। সেদিন দুই পেসার কাইল এ্যাবট ও ওয়াইন পারনেল নিয়েছিলেন ৫ উইকেট। ২৫ ওভারে ১৮৮ রানের টার্গেটে নেমে হাশিম আমলা করেন ৪৬ রান। ইনজুরি কাটিয়ে ফেরা ডি’কক ৫৫ বলে খেলেন ৬৬ রানের চিত্তাকর্ষক ইনিংস। অধিনায়ক ডি ভিলিয়ার্সের অনুপস্থিতি সত্ত্বেও সাফল্য তুলে নেয় দক্ষিণ আফ্রিকা। ব্যাট হাতে আমলা, ডি ভিরিয়ার্স, ডুপ্লেসিস, জেপি ডুমিনি, রাইলি রোজাউ, ডেভিড মিলার, বোলিংয়ে ডেল স্টেইন, ওয়াইন পারনেল, মরনে মরকেল, কাইল এ্যাবট, ইমরান তাহিরদের প্রত্যেকে ম্যাচউইনার।
×