ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

নাশকতার দায় স্বীকার করলে সংলাপ নিয়ে ভাবা হবে ॥ হানিফ

প্রকাশিত: ০৫:২৭, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

নাশকতার দায় স্বীকার করলে সংলাপ নিয়ে ভাবা হবে ॥ হানিফ

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ বিএনপি-জামায়াত জোট হরতাল-অবরোধ প্রত্যাহার করে নাশকতা ও সকল হত্যার দায় স্বীকার করলে পরবর্তী পদক্ষেপ (সংলাপ) নিয়ে ভাবা হবে বলে জানিয়েছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। বুদ্ধিজীবী ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সংলাপ নিয়ে কথা বলার আগে বিএনপিকে এ বিষয়টি বোঝানোর পরামর্শ দিয়ে দলটি বলেছে, হরতাল-অবরোধের নামে নাশকতা ও সন্ত্রাসী কর্মকা- চালিয়ে সরকারের কাছ থেকে কোন দাবি আদায় হলে তা বাজে উদাহরণ হয়ে থাকবে। তাই সন্ত্রাসের মুখে কোন দাবি মানবে না আওয়ামী লীগ। সোমবার ধানমন্ডির আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সাংবাদিক সম্মেলনে দলের অবস্থান তুলে ধরে এসব কথা বলেন দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ। নাশকতার দায় অস্বীকার করে বিএনপির বক্তব্যের জবাবে তিনি বলেন, দেশের বর্তমান সঙ্কট হচ্ছে পেট্রোলবোমা হামলা। আর সেটা যদি বিএনপি না করে থাকে তাহলে তাদের সঙ্গে কীসের সংলাপ? সংলাপ হবে যারা নাশকতা করছে তাদের সঙ্গে! হানিফ বলেন, বিএনপি যদি নাশকতার সঙ্গে জড়িত না-ই থাকে তবে দলটিকে বলবোÑ কর্মসূচী প্রত্যাহার করুন। আমরা আগে এ পেট্টোলবোমা হামলাকারীদের দমন করি, এরপর আবার কর্মসূচী দিন। আপনারা (বিএনপি-জামায়াত) কর্মসূচী প্রত্যাহার করে নিলে আমরা কথা দিলাম, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দেশের সকল নাশকতা দমন করব। এক প্রশ্নের জবাবে ক্ষমতাসীন দলের এ নেতা বলেন, আমাদের কথা পরিষ্কার। আমরা বিএনপি-জামায়াত জোটকে এ সন্ত্রাসী কর্মকা- বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছি। এসব কর্মকা- বন্ধ করলে পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে ভাবা হবে। সংলাপের কথা বলে বিএনপি-জামায়াতের অপকর্মকে আড়াল করার অপচেষ্টা হচ্ছে দাবি করে তিনি বলেন, আমাদের সুশীল সমাজের কিছু ব্যক্তি সংলাপের কথা বলছেন। কিন্তু তাঁরা বলছেন না, বিএনপি-জামায়াতের নেতৃত্বে এ পেট্রোলবোমা হামলা হচ্ছে। আগে তাদের (বিএনপি) এ সকল ঘটনার দায় স্বীকার করতে বলুন। বুদ্ধিজীবী ও সুশীল সমাজের প্রতি আহ্বান জানিয়ে হানিফ বলেন, আপনারা সংলাপ, সংলাপ বলে; সংলাপের ধূঁয়ো না তুলে তাদের ওপর চাপ দিন। জাতি আপনাদের কাছে এমনটাই আশা করে। আর স্বীকার না করলে তাদের অবরোধ-হরতাল কর্মসূচী প্রত্যাহার করতে বলুন। আমরা কথা দিচ্ছি, বিএনপি-জামায়াতের পেট্রোলবোমা দিয়ে মানুষ মারার কর্মসূচী ২৪ ঘণ্টার একেবারে বন্ধ করে দেয়া কিংবা নিশ্চিহ্ন করে দেয়া সম্ভব হবে। সেটা করার জন্য আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রস্তুত, আমরাও বদ্ধপরিকর। এখন সম্ভব নয় কেন এমন প্রশ্নের জবাবে হানিফ বলেন, যে রাজনৈতিক দলের প্রায় ৩০ শতাংশের ওপরে ভোটার আছে। লাখ লাখ কর্মী সমর্থক আছে। তারা যদি জঙ্গী ও সন্ত্রাসী কর্মকা-ের সঙ্গে জড়িত হয়, এই বৃহত জঙ্গী সংগঠনকে দমন করতে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সম্ভব নয়। এদের দমন করতে একটু সময় তো লাগবেই। তবে আশা করছি, খুব তাড়াতাড়িই এদেরকে আমরা দমন করতে পারব। আর আমরা (আওয়ামী লীগ) অপেক্ষায় থাকলাম, বিএনপি-জামায়াত পেট্রোলবোমা দিয়ে মানুষ হত্যা, শত শত গাড়ি পোড়ার দায় স্বীকার করে কোন বিবৃতি দেয় কি-না। তাহলে আমরা পরবর্তীতে পদক্ষেপ নেব। সংলাপ প্রসঙ্গে মাহবুব উল আলম হানিফ আরও বলেন, আন্দোলন কি নিয়ে হচ্ছে তা বিএনপি নেতারাও জানে না। আর যারা সংলাপের কথা বলছেন, তারা কি কারণে সংলাপের কথা বলছেন? সংকট যদি হয় পেট্রোলবোমা দিয়ে মানুষ হত্যা করা নিয়ে। কারণ এটা নিয়ে জাতি উদ্বেগে আছে, আতঙ্কে আছে। সেটাই যদি সংকট হয় এর দায়ভার বিএনপি-জামায়াতের’ নিতে হবে। কিন্তু তাদের দাবি অনুযায়ী তারা যদি এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত না থাকে, তাহলে তো তাদের সঙ্গে সংলাপ করে সংকট উত্তরণ হবে না। খালেদা জিয়া বিদেশী প্রভুদের নির্দেশে দেশে তা-ব চালাচ্ছে অভিযোগ করে হানিফ বলেন, সন্ত্রাসী কর্মকা- করে বিএনপি কোন দাবি আদায় করতে পারবে না। পৃথিবীর কোন সভ্য দেশে এরকম সন্ত্রাসী কর্মকা- চালিয়ে কোন দাবি আদায় করা যায়নি, বাংলাদেশেও এটা সম্ভব নয়। তাছাড়া টানা অবরোধের নামে সন্ত্রাসী কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে সরকারের কাছ থেকে কোন দাবি আদায় হলে তা বাজে উদাহরণ হয়ে থাকবে। গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেনকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, আমরা স্তম্ভিত ড. কামাল হোসেন স্বাধীনতা যুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, তিনি ডেভিড বার্গম্যানের পক্ষ নিয়ে বিবৃতি দেন। ডেভিড বার্গম্যানের সান্নিধ্যে আসার কারণে ড. কামাল হোসেন স্বাধীনতার চেতনা থেকে দূরে সরে গেছেন। সংবাদ সম্মেলন অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, কৃষিবিষয়ক সম্পাদক ড. আবদুর রাজ্জাক এমপি, শ্রমবিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান সিরাজ, দফতর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, ত্রাণবিষয়ক সম্পাদক ফরিুদন্নাহার লাইলী, কেন্দ্রীয় নেতা সুজিত রায় নন্দী প্রমুখ।
×