ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

লাশের ওপর দিয়ে ক্ষমতায় যাওয়া যাবে না

প্রকাশিত: ০৫:০৮, ৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

লাশের ওপর দিয়ে ক্ষমতায় যাওয়া যাবে না

স্টাফ রিপোর্টার ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অভিযোগ করেছেন, বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া আন্দোলনের নামে মানুষ পুড়িয়ে ক্ষমতায় যাওয়ার চেষ্টা করছেন। বিএনপি নেত্রী দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে না গিয়ে ভুল সিদ্ধান্ত নেয়ার খেসারত জাতি কেন দেবে বলেও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী প্রশ্ন রাখেন গত এক মাসের অবরোধে গাড়িতে পেট্রোলবোমায় দগ্ধ হয়ে অর্ধশত মানুষের মৃত্যুতে বিএনপি-জামায়াত জোটের কী অর্জন হয়েছে? এছাড়া হরতালের কারণে সময়সূচী পরিবর্তন করে সপ্তাহে দু’দিন করে এসএসসি পরীক্ষা নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রবিবার সচিবালয়ে ধর্ম মন্ত্রণালয় পরিদর্শন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় বিএনপি নেত্রীকে ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ধ্বংস করা, পুড়িয়ে ফেলা, লাশ ফেলা ছাড়া আর কোন অর্জন তাদের নেই। এটা করে যদি মনে করেন, বিরাট কিছু করে ফেলেছেন- তা হলে জাতির জন্য দুর্ভাগ্যের। কারণ, এরা দেশের নেতৃত্ব দেবে। এরা ক্ষমতায় ছিল। আবার ক্ষমতায় যাবার স্বপ্ন দেখে। কিন্তু সে ক্ষমতা মানুষের লাশের ওপর দিয়ে কেন? সেটাই আমার প্রশ্ন। ক্ষমতায় যেতে হলে গণতান্ত্রিক উপায়েই যেতে হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি। দশম সংসদ নির্বাচনে না গিয়ে বিএনপি নেত্রী ‘ভুল’ করেছেন মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছে খালেদা জিয়া, নির্বাচনে যায়নি। এর খেসারত জাতি কেন দেবে? মানুষ পুড়িয়ে মেরে সেই লাশের ওপর দিয়ে ক্ষমতায় যাবেন? এটা কোন ধরনের বিবেচনা? কী ধরনের কাজ-আমি জানি না। আল্লাহ তাদের সুমতি দিক। খালেদা জিয়ার মানসিক সুস্থতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি নেত্রী বোধহয় উম্মাদ। নইলে বাড়িঘর ছেড়ে অফিসে থেকে কোন্ বিপ্লব ঘটাচ্ছেনÑ আমার কাছে বোধগম্য নয়। এতে উনি কী পাবেন আমি জানি না। আল্লাহ এদের সুমতি দিক- মানুষ পুড়িয়ে মারা বন্ধ করুক, ছেলে-মেয়েরা যেন এসএসসি পরীক্ষা দিতে পারে। এসএসসি পরীক্ষার মধ্যেও হরতাল ডাকার সমালোচনা করে খালেদা জিয়াকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, মানুষ লেখাপড়া শিখুক, মানুষ হয়ে উঠুক, উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হোকÑ তা তিনি চান না। জামায়াত-শিবিরও আবার হরতাল ডাকে। লেখাপড়া শিখলে তো বিভ্রান্ত করতে পারবে না। তাই তারা দেশের মানুষকে লেখাপড়া শিখতে দিতে চায় না। এটাই বোধহয় তাদের উদ্দেশ্য। এ সপ্তাহে দুটি পরীক্ষা ছিল। আমরা তা শুক্র ও শনিবার করে দিয়েছি। তবে শুক্র-শনিবার আবার হরতাল দেয় কি না- এদের বিশ্বাস নেই। এরা তো ধর্মের নামে ব্যবসা করে। দেখা গেল শুক্রবারেও হরতাল দিয়ে দিল। মানুষ মারার এই আন্দোলনে বিএনপি-জামায়াত জোটের অর্জন নিয়ে প্রশ্ন তুলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দিনের পর দিন মানুষ পুড়িয়ে মেরে তাদের অর্জনটা কী? এতগুলো মানুষকে পঙ্গু করে দেয়া..., হাজার হাজার গাড়ি পুড়িয়ে দেয়া। এ সময় ৫ জানুয়ারির নির্বাচনকালীন সহিংসতার কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। মানুষ পুড়িয়ে মারা ও কোরান শরীফ আগুনে পোড়ানোর জন্য বিএনপি-জামায়াতের ধর্ম বিশ্বাসের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তোরা শত শত কোরান শরীফ পুড়িয়েছে। যারা মসজিদে আগুন দেয়, কোরান পোড়ায় তারা আর যাই হোক আদৌ কোন ধর্মে বিশ্বাস করে কি না সেটাই সন্দেহ। ধর্মীয় সম্প্রীতি রক্ষায় সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের মনে রাখতে হবে আমরা মানুষ। ধর্ম যার যার রাষ্ট্র সবার। ধর্মীয় শিক্ষা ছাড়া কোন শিক্ষা পূর্ণাঙ্গ হয় না মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী শিক্ষা নীতিমালায় ধর্মীয় শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করার কথা তুলে ধরেন। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ গড়ার পাশাপাশি ইসলাম ধর্মের প্রচার ও প্রসারে বঙ্গবন্ধুর অবদানের কথা স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ১৯৭৫ পর যারা ক্ষমতায় এসেছিল তারা ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করেছে। তারা অন্য ধর্মাবলম্বীদের ওপর অত্যাচার নির্যাতন করেছে। বিগত বিএনপি-জামায়াত আমলে অন্য ধর্মাবলম্বীদের ওপর অত্যাচার নির্যাতনের কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। এ সময় ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমান, সচিব চৌধুরী মোহাম্মদ বাবুল হাসানসহ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
×