ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

প্রতিনিধি দল আসছে

সৌদিতে কর্মী নিয়োগে অপেক্ষার পালা শেষ, আজ চুক্তি

প্রকাশিত: ০৫:৫০, ৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

সৌদিতে কর্মী নিয়োগে অপেক্ষার পালা শেষ, আজ চুক্তি

ফিরোজ মান্না ॥ অপেক্ষার পালা শেষ হচ্ছে আজ। ১৭ সদস্যের সৌদি প্রতিনিধিদল সকালে ঢাকায় নেমেই প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীসহ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন। বৈঠকেই চুক্তি হবে কতসংখ্যক কর্মী বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরবে চাকরি নিয়ে যাচ্ছেন। তাঁরা কী কী কাজে চাকরি পাবেন। এ রকম আরও নানা বিষয় আলোচনায় স্থান পাবে। দীর্ঘ প্রতীক্ষিত সৌদি বাজার ফিরে পাওয়ার আনন্দ এখন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী সকলের মধ্যেই বিরাজ করছে। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, দীর্ঘদিনের চেষ্টার ফল আজ রবিবার পাওয়া যাবে। আমরা আশা করছি, প্রথম দফায়ই কর্তৃপক্ষ ৫ লাখ কর্মী নিয়োগের ঘোষণা দেবেন। সৌদি ১৭ সদস্যের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেবেন সৌদি শ্রম মন্ত্রণালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের উপমন্ত্রী ড. আহমেদ আল ফাহাইদ। সৌদি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক হবে অত্যন্ত আন্তরিকতার মধ্য দিয়ে। আমরা যখন সৌদি সফরে গিয়েছিলাম সেখানেও আমাদের সঙ্গে কর্তৃপক্ষের খুবই সৌহার্দ্যপূর্ণ বৈঠক হয়েছে। তারা বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিতে তখনই আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। সৌদি নতুন বাদশাহ সালমান বিন আব্দুল আজিজ বাংলাদেশ থেকে কর্মী নেয়ার অনুমতি দেয়ার পর আর কোন বাধাই নেই। সৌদি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বাংলাদেশ থেকে জনশক্তি আমদানির বিষয়ে দ্বিপক্ষীয় চুক্তি সই করা হবে। একই সঙ্গে দ্রুততম সময়ের মধ্যে কিভাবে জনশক্তি নেয়া যায় তার যথাযথ প্রক্রিয়া তৈরি করা হবে। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরবে কর্মী নিয়োগে মাত্র ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা খরচ হবে। প্রতিজন কর্মীর জন্য সৌদি কোম্পানিই খরচ বহন করবে। এটাই প্রথম এত কম খরচে সৌদিতে কর্মী নিয়োগের ইতিহাস। আগে প্রতি কর্মীর কাছ থেকে তিন থেকে সাড়ে তিন লাখ টাকা নেয়া হতো। ফলে সেখানে গিয়ে একজন কর্মী তাঁর খরচই তুলতে পারতেন না। ওই কর্মী চাকরির মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পর অবৈধভাবে দেশটিতে থেকে যেতেন। এতে ওই কর্মী সব সময় পুলিশের ভয় নিয়ে গোপনে কাজ করতেন। এবার কম টাকায় সেখানে গিয়ে চাকরির মেয়াদের মধ্যেই অনেক টাকা উপার্জন করতে পারবেন। আসলে সৌদি শ্রমবাজারটি কখনই বন্ধ ছিল না। তবে তারা নানা কারণে কর্মী নিয়োগে সংখ্যা কমিয়ে দিয়েছিল। এবার বাজারটি সব ধরনের কাজের জন্যই খুলে দেবে বলে সৌদি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন। উল্লেখ্য, গত মাসের শেষ দিকে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেনের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল সৌদি আরব সফর করেন। প্রতিনিধিদল সৌদি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠকের পর কর্মী নিয়োগের বিষয়টি নিশ্চিত হয়। ওই বৈঠকে সৌদি শ্রমমন্ত্রী আবদেল ফকিহ বাংলাদেশ থেকে দক্ষ জনশক্তি নেয়ার কথা জানান। এই ঘোষণার কয়েকদিনের মাথায় সৌদি বাদশাহ বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিয়োগের অনুমোদন দেন। এই নিয়ে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে কাজকর্ম বেড়ে গেছে। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান সৌদি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে আলোচনার জন্য একটি কর্মপত্র তৈরি করা হয়েছে। এই কর্মপত্রে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে কিভাবে কর্মী পাঠানো হবে তার একটি খসড়া করা হয়। সৌদি প্রতিনিধিদল ঢাকায় বৈঠকের সময় এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে। প্রতিনিধিদল কিছু প্রস্তাব রাখবে। দুই দেশের মধ্যে কর্মী পাঠানোর বিষয় বিস্তারিত আলোচনার পর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে। প্রতিনিধিদল ঢাকা থেকেই ঘোষণা দিয়ে যাবেন কোন কোন ক্ষেত্রে কতসংখ্যক কর্মী তারা নেবে। রিয়াদে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তারা বলেন, নির্মাণ, গাড়িচালক, গৃহ পরিচালিকাসহ কয়েকটি ক্ষেত্রে সাড়ে ৪ থেকে ৫ লাখ কর্মী নেবে সৌদি আরব। পর্যায়ক্রমে দেশ থেকে এই কর্মী সৌদি যাবেন।
×