ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

খালেদার সঙ্গে মিলে যারা আন্দোলন করছেন সবাই দেশের শত্রু ॥ অর্থমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৫:৪৫, ৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

খালেদার সঙ্গে মিলে যারা আন্দোলন করছেন সবাই দেশের শত্রু ॥ অর্থমন্ত্রী

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ খালেদা জিয়া দেশ ধ্বংসের পাঁয়তারা করছেন বলে মন্তব্য করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। তিনি বলেন, যারা বিএনপি নেত্রীর সঙ্গে মিলেমিশে এ আন্দোলন করছেন তারা সবাই বাংলাদেশের শত্রু। আমি সচেতন ব্যক্তিদের (সেনসিটিভ পারসন) এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানাই। শনিবার অর্থ মন্ত্রণালয়ে ‘বাংলাদেশের আর্থসামাজিক অগ্রযাত্রা এবং সামষ্টিক অর্থনীতির সাম্প্রতিক অবস্থান’ বিষয়ক সংবাদ সম্মেলন শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী এ কথা বলেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ অনেক ভাল করছে। তবে খালেদা জিয়া দেশ ধ্বংসের পাঁয়তারা করছেন। এটা কোন রাজনৈতিক কর্মসূচী নয়, এর একমাত্র লক্ষ্য হচ্ছে দেশের উন্নয়ন ব্যাহত করা। হরতাল-অবরোধের ফলে ঢাকায় হয় তো কিছু বোঝা যায় না, কিন্তু রাজধানীর বাইরের জেলাগুলোতে পরিস্থিতি অনেক খারাপ হয়েছে। ঢাকার বাইরের জেলাগুলোকে এখন সচল রাখা প্রয়োজন। অর্থনীতির স্বার্থে জেলাগুলোকে সচল করতে হবে। অতিরিক্ত পুলিশ, বিজিবি মোতায়েন করে দেশ সচল রাখতে গিয়ে অতিরিক্ত খরচ হবে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, অবশ্যই অতিরিক্ত বরাদ্দ দিতে হবে। তবে কী পরিমাণ অতিরিক্ত বরাদ্দ দিতে হবে তা এখনই বলা সম্ভব না। দেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতির উত্তরণ কবে হবে- জিজ্ঞেস করলে অর্থমন্ত্রী বলেন, নোবডি নোজ। তিনি সাংবাদিকদের কাছে জানতে চান এটা আপনারা বলতে পারবেন? গত জানুয়ারিতে আমি আশা করেছিলাম এক সপ্তাহের মধ্যে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসবে। এমন আশা তো আমি করতেই পারি। অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতার জন্য চলমান রাজনৈতিক সঙ্কট সমাধানের কোন উদ্যোগ নেবেন কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী মন্তব্য থেকে বিরত থাকেন। তিনি বলেন, আশা করি শীঘ্রই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে। দেশ কি এ অবস্থার মধ্য দিয়েই যাবে? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, বাংলাদেশ অদ্ভুত দেশ, প্রায়ই হরতাল-অবরোধ হয়। তবে এর মধ্যেও মোট দেশজ উৎপাদনের প্রবৃদ্ধির হার (জিডিপি) ৬ শতাংশের ওপর থাকছে। সাম্প্রতিক সহিংস পরিস্থিতিতে অর্থনীতির কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে সে চিত্র আগামী মার্চে অনুষ্ঠেয় সমন্বয় কাউন্সিলের বৈঠকে তুলে ধরা হবে বলে জানান অর্থমন্ত্রী। ৭ দশমিক ৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধির হার বাস্তবায়ন সম্ভব হবে কি নাÑএমন প্রশ্নের জবাব তিনি বলেন, হাইলি ডাউটফুল। হয় তো সম্ভব হবে না। অর্থমন্ত্রী বলেন, বাজেটের আকার না বাড়লে সরকারের কার্যক্রম বাড়ানো যায় না। বর্তমানে বৈদেশিক সাহায্য কমে গেছে, এটা কাক্সিক্ষত ছিল না। মাথাপিছু আয় দ্বিগুণ হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে বর্তমান সরকারের গত মেয়াদের প্রথম ৫ বছরে ও চলতি মেয়াদের প্রথম বছরে বাংলাদেশের আর্থসামাজিক অগ্রযাত্রা এবং সামষ্টিক অর্থনীতির সাম্প্রতিক অবস্থান শীর্ষক একটি প্রতিবেদন তুলে ধরেন তিনি। আবুল মাল আব্দুল মুহিত বলেন, অন্যান্য সময়ে হরতাল-অবরোধে কোন কোন খাতকে বিশেষ ছাড় দেয়া হতো, কিন্তু এবার তা হচ্ছে না। হরতাল-অবরোধে কী পরিমাণ অর্থনৈতিক ক্ষতি হচ্ছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অর্থনৈতিক ক্ষতি নিরূপণে সরকারের পক্ষ থেকে এখনও কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি। আগামী মার্চে এ সব হিসাব-নিকাশ করা হবে। তিনি আরও বলেন, বর্তমান সরকারের পাঁচ বছরে মাথাপিছু আয় দ্বিগুণ হয়েছে, আমদানি-রফতানি, রেমিট্যান্স প্রবাহ ও রিজার্ভ অনেক বেড়েছে। বিদ্যুত খাত প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, আমি বলি না যে, দেশে বিদ্যুতের সঙ্কট নেই। তবে চাহিদা ও সরবরাহের পার্থক্য এখন কমে এসেছে। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর বিষয়ে জানতে চাইলে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব ড. আসলাম আলম বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোতে অন্যান্য ব্যাংকের তুলনায় খেলাপী ঋণ বেড়েছে। নিম্নমানের ঋণ প্রদানের কারণেই এটা হয়েছে। এছাড়া সংবাদ সম্মেলনে অর্থ সচিব মাহবুব আহমেদ, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান নজিবুর রহমান ও অথনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব মোঃ মেজবাউদ্দিন আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
×