ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বাংলাদেশের সম্বল আত্মবিশ্বাস

প্রকাশিত: ০৬:০৯, ৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

বাংলাদেশের সম্বল আত্মবিশ্বাস

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ আচ্ছা, ফুটবলে কী পরিসংখ্যানই সব? পরিবেশ, দর্শক, আত্মবিশ্বাস, সাম্প্রতিক ফর্ম ... এগুলোর কি কোন মূল্য বা গুরুত্ব নেই? হেড টু হেড পরিসংখ্যানে প্রতিপক্ষ থাইল্যান্ডের চেয়ে অনেক পিছিয়ে স্বাগতিক বাংলাদেশ। ১৪ ম্যাচে বাংলাদেশের ২ জয়ের বিপরীতে থাইবাহিনীর জয় ৯টি। বাকি ৩ ম্যাচ ড্র। ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়েও তাই। বাংলাদেশ ১৬৫, থাইল্যান্ড ১৪৪। আজ বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে বিকেল ৫টায় ‘বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ’-এর দ্বিতীয় সেমিফাইনালে মোকাবেলা করবে স্বাগতিক বাংলাদেশ এবং আসিয়ান অঞ্চলের দেশ থাইল্যান্ড (এ আসরে থাইরা পাঠিয়েছে তাদের অনুর্ধ-২৩ দল)। বৃহস্পতিবার ম্যাচ-পূর্ব এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ এবং থাইল্যান্ডের কোচ-অধিনায়ক। শেষ চারে নাম লেখাতে বাংলাদেশের প্রয়োজন ছিল অন্তত ড্র। কিন্তু ড্র নয়, গৌরবের সঙ্গে জিতেই বহু কাক্সিক্ষত সেমিফাইনালে ওঠে বাংলাদেশ। গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে তারা হারায় শ্রীলঙ্কাকে। বাংলাদেশ দলের ডাচ্ কোচ লোডভিক ডি ক্রুইফ বলেন, ‘টুর্নামেন্টের অন্যতম সেরা দল থাইল্যান্ড। ওরা ছোট ছোট পাসে খেলে। দলটি যথেষ্ট তারুণ্যনির্ভর। পুরো দলটি ফিট আছে ম্যাচের জন্য। ওদের বেশ ভাল ধারণা আছে ফুটবল সম্পর্কে। আগামীকালকের (আজ) ম্যাচটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। টুর্নামেন্টের শুরুতে বলা হচ্ছিল বাহরাইন ফেবারিট। কিন্তু থাইল্যান্ডের ম্যাচগুলো দেখে আমরা বুঝেছি তারাই সবচেয়ে ভাল দল। আমাদের প্রথম লক্ষ্য ছিল সেমিফাইনালে ওঠা। সেই লক্ষ্য পূরণের পর এখন আমাদের একটাই লক্ষ্য ফাইনাল খেলা।’ বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক মামুনুল ইসলাম বলেন, ‘বাফুফে সভাপতি সালাউদ্দিন ভাইয়ের লক্ষ্য ছিল টুর্নামেন্টের সেমিফাইনাল। সেটি আমরা পূরণ করেছি। এখন আমাদের লক্ষ্য ফাইনাল খেলা। ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে জিততে যা অনুশীলন দরকার, কোচ আমাদের সেগুলো করিয়েছেন। সেমিফাইনাল খেলতে দলের সবাই তৈরি।’ মামুনুল আরও বলেন, ‘সেমির ম্যাচটা যেন আমাদের এই টুর্নামেন্টের সেরা ম্যাচ হয়। সে রকম পারফর্মেন্সই করতে চাই আমরা। শেষ চারে যেতে পেরে দলের সবাই অনেক বেশি। সেই খুশিটা আরও বেশি হবে যদি আমরা ফাইনাল খেলতে পারি।’ ক্রুইফ আরও বলেন, ‘আমি জানি বাংলাদেশের ফুটবলপ্রেমীদের জন্য এ ম্যাচটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ফুটবল এমন একটা খেলা যেখানে যে কোন কিছুই ঘটা সম্ভব। ছেলেরা ফাইনালে খেলতে উদগ্রীব। তবে সে জন্য আমি তাদের কোন রকম চাপ দিতে চাই না। তারা যদি চাপমুক্ত হয়ে খেলে তবে তারা অনেক ভাল খেলার ক্ষমতা রাখবে বলে মনে করি। আমাদের দলটিতে অনুর্ধ-২৩ দলের ৮ খেলোয়াড় আছে। আমাদের একটাই লক্ষ্যÑ থাইল্যান্ডকে হারানো। তারা কি অনুর্ধ-২৩ নাকি ২১ নাকি ৩১, সেটা আমাদের দেখার বিষয় না।’ বাংলাদেশ দলের মিডফিল্ড সমস্যা নিয়ে মামুনুল বলেন, ‘প্রথম ম্যাচ হয়েছে প্রায় একসপ্তাহ হয়ে গেছে। দ্বিতীয় ম্যাচেই আপনারা দেখেছেন আমাদের মিডফিল্ড বেশ উন্নতি করেছে। আগামীকালের (আজ) ম্যাচে জয় পেতে হলে ১১ খেলোয়াড়কেই তাদের ১১০ ভাগ দিতে হবে। এ ম্যাচে আমরা একটা সুযোগ পেলে সেই একটা সুযোগকেই কাজে লাগাব।’ থাই কোচ ফমরাত চকতাভি বলেন, ‘স্বাগতিকরা কঠিন দল। তাদের সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে, তারা খেলবে নিজেদের চেনা পরিবেশ, চেনা মাঠ ও চেনা দর্শকদের সমর্থন নিয়ে, যা আমাদের নেই। তবে আমার দলের সব খেলোয়াড়রা সেমিফাইনাল খেলার জন্য তৈরি। বাংলাদেশ দলের সোহেল রানা, মামুনুল, জামাল ভুঁইয়া, হেমন্ত ... এরা সেমিফাইনালে থাইল্যান্ডের বিপদের কারণ হতে পারে।’ থাই অধিনায়ক পামপার্ক বলেন, ‘আমরা এ ম্যাচে জয় চাই। জয়ের জন্য দলের সবাই নিজেদের শতভাগ উজাড় করেই খেলবে।’ অভিজ্ঞতা, পরিসংখ্যান, ক্ষিপ্রতা এবং র‌্যাঙ্কিংয়ে এগিয়ে একসময় ‘শ্যাম দেশ’ (আগে এটাই ছিল থাইল্যান্ডের নাম)। আর হোমগ্রাউন্ড এবং আত্মবিশ্বাসে এগিয়ে বাংলাদেশ। কে জেতবে আজকের দ্বৈরথে? সেটাই এখন দেখার বিষয়।
×