ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

আরও অর্থ ও অস্ত্র চাই

প্রকাশিত: ০৬:০০, ৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

আরও অর্থ ও অস্ত্র চাই

ইউক্রেন রুশ-সমর্থিত বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে লড়াই চালাতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে আরও সামরিক ও অর্থনৈতিক সাহায্য চেয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে অস্ত্র সরবরাহ করার পক্ষে ঝুঁকে যাচ্ছে বলে আভাস মিলছে। সংঘাতকবলিত ইউক্রেনের অর্থনীতি ভেঙ্গে পড়ার উপক্রম হয়েছে। দেশটি যখন অর্থনৈতিক পতন এড়াতে এক বেইল-আউট নিয়ে আলোচনার চেষ্টা করছে, তখন আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিলের (আইএমএফ) এক প্রতিনিধি দল এরই মধ্যে রাজধানী কিয়েভে অবস্থান করছে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইউক্রেনীয় কর্মকর্তাদের আলোচনায় সামরিক সমর্থনের বিষয়ে কথা হবে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট পেট্রো পেরোশেঙ্কো তার দেশে অস্ত্র পাঠাতে ন্যাটো রাষ্ট্রগুলোর প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, বেসামরিক লোকজন নিহত হওয়া এবং সংঘাত ছড়িয়ে পড়ার ঘটনা পাশ্চাত্য জোটকে ইউক্রেনের সমর্থনে এগিয়ে আসতে যথেষ্ট যুক্তি যোগাবে। তিনি জার্মানীর ডাই ওয়েন্ট পত্রিকার সঙ্গে এক সাক্ষাতকার দিচ্ছিলেন। এটি বৃহস্পতিবার প্রকাশিত হয়। খবর গার্ডিয়ান ও ইয়াহুনিউজের। ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পভলো ক্লিমকিন বলেন, আইএমএফের সঙ্গে আলোচনা কঠিন কিন্তু ফলপ্রসূ হয়েছে এবং কোন প্যাকেজ নিয়ে শীঘ্রই চুক্তি হবে বলে আশা দেখা যায়। তিনি বুধবার একদল পশ্চিমা সাংবাদিকের সঙ্গে কথা বলছিলেন। ইউক্রেনের মুদ্রা রিভনিয়ার মূল্যমান গত বছর বিশ্বে ছিল সর্বনিম্ন। মুদ্রার মূল্যমানের পতনের ফলে মুদ্রাস্ফীতি বেড়ে যায়। মজুরি হ্রাস পায় এবং দেশের ব্যাংকিং ব্যবস্থা মূলত ভেঙ্গে পড়ে। যখন খেলাপী হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি বলে দেখা যাচ্ছে তখন কিয়েভ পূর্ব ইউক্রেনে রুশ-সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বিরুদ্ধে লড়াই চালাতে দৈনিক ৫০ লাখ থেকে এক কোটি ডলার ব্যয় করছে। এ সংঘর্ষের ফলে পূর্বাঞ্চলে অবকাঠামো ধ্বংস ও উৎপাদন হ্রাস পেয়েছে এবং অভ্যন্তরীণভাবে হাজার হাজার লোক বাস্তুহারা হয়ে পড়েছে। এসব কিছুরই দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক পরিণতি রয়েছে। পরিসংখ্যানে দেখা যায়, আইএমএফের ১ হাজার ৭শ’ কোটি ডলারের সহায়তা ছাড়াও ইউক্রেনের ১ হাজার ৫শ’ কোটি ডলারের বাড়তি তহবিল প্রয়োজন। গত বছর আইএমএফ দু’বছরের এক কর্মসূচীর আওতায় অর্থ দিতে সম্মত হয়। মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী পদে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার মনোনীত ব্যক্তি এ্যাশটন কার্টার বুধবার বলেন, তিনি ইউক্রেনের কাছে প্রাণঘাতী অস্ত্র সরবরাহ সমর্থন করতে চান। তিনি তাঁর মনোনয়ন অনুমোদন সংক্রান্ত শুনানিতে কংগ্রেসকে বলেন, আমি ইউক্রেনীয় সরকারকে অস্ত্র সরবরাহ করার পক্ষেইÑ কারণ আমি মনে করি, আমাদের ইউক্রেনেীয়দেরকে তাদের আত্মরক্ষায় সমর্থন যোগানো উচিত। সিনেটের সশস্ত্র বাহিনী কমিটিতে এ শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। তিনি বলেন, বাল্টিক অঞ্চলে রুশ আগ্রাসন রোধ করতে যুক্তরাষ্ট্র প্রকৃতপক্ষে যথেষ্ট পদক্ষেপ নিচ্ছে, একথা আমি বলতে পারছি না। তিনি রুশ আগ্রাসন ঠেকানোকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে মন্তব্য করেন। ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এক সাক্ষাতকারে বলেন, আমরা এ সংকটের কোন সামরিক সমাধান নেই বলে শুরু থেকে নিঃসন্দেহ ছিলাম, যদিও স্পষ্টত রাশিয়া সেই সমাধানই চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে। সামরিক উত্তেজনা বাড়ানোতে আমাদের কোন স্বার্থ নেই এবং আমরা উত্তেজনা প্রশমন করতেই কঠোর চেষ্টা করছি। কিন্তু ইউক্রেনের আত্মরক্ষার প্রতিটি অধিকারই রয়েছে। আর আমরা প্রকৃতপক্ষে এ প্রয়াসে ইউক্রেনকে নিরাপত্তা সহায়তা প্রদান করছি। বাইডেনের সাক্ষাতকারটি বুধবার ইউরোপীয়ান নিউজ সাইটগুলোতেই প্রচারিত হয়। হোয়াইট হাউস ইউক্রেনকে অস্ত্র সহায়তা দেয়ার বিরোধিতা করার নীতি থেকে যে বিপরীত অবস্থান নিতে পারে চলতি সপ্তাহের ওইসব মন্তব্য তার সর্বশেষ আভাস। মস্কো-সমর্থিত বিদ্রোহীদের প্রতিহত করতে ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনীকে সহায়তা করতেই যুক্তরাষ্ট্র ওই নীতি পাল্টাতে পারে।
×