ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ফিরে দেখা ভাষা আন্দোলন

প্রকাশিত: ০৪:১৫, ৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

ফিরে দেখা ভাষা আন্দোলন

আজিমপুর কবরস্থান আজিমপুর কবরস্থানে চিরনিন্দায় শায়িত আছেন ভাষাশহীদ আবুল বরকত, শফিউর রহমান, আবদুল জব্বার ও নাম না জানা আরও অনেকে। এই তিনজনের কবর শনাক্ত করা হয়েছে। অনেকের কবর শনাক্ত করা যায়নি। ভাষাসৈনিকদের স্মৃতিচারণ থেকে জানা যায়, একুশের রক্ত¯স্নাত আন্দোলনে অসংখ্য মানুষকে হত্যা করা হয়েছে এবং অনেক লাশ গুম করে ফেলা হয়েছে। তন্মধ্যে মাত্র কয়েকজন শহীদদের কবর শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। গভীররাতে আজিমপুর কবরস্থানে ভাষাশহীদের কবর শনাক্ত এবং মরদেহ দাফনের একমাত্র প্রত্যক্ষ সাক্ষী ছিলেন তৎকালীন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের ছাত্র খোন্দকার আলমগীর। এ সম্পর্কে স্মৃতিচারণ করে খোন্দকার আলমগীর বলেন, শহীদদের মৃতদেহ মর্গে, আহতদের চিকিৎসার পরে কয়েকজনের মৃত্যু হলে তাঁদের মৃতদেহ বিভিন্ন ওয়ার্ডের কোনায় আড়াল করে রাখা হয়। এগুলোর পাহাড়ারত ছিলাম আমরা কয়েকজন। কিন্তু রাত ৩টার দিকে সামরিক বাহিনীর লোকজন হাসপাতাল ঘেরাও করে লাশ নিয়ে যায়। সকালবেলা কারফিউর সময় পর আমরা ভেবেছি, ওরা লাশগুলো কোথায় নিয়ে যেতে পারে? আমির আহসানসহ আমরা ঠিক করলাম আজিমপুর কবরস্থানে খোঁজ নেয়া যায়। না পেলে বনানী যাওয়ার চেষ্টা করা যাবে। বনানী তখন অনেক দূরে। যানবাহনের রাস্তাও তেমন সুবিধের ছিল না। আজিমপুর কবরস্থানে পাওয়া যায় গণকবর। তাঁদের সাহায্যে উদ্ধার করা গেল শহীদদের রক্ত¯œাত কাপড়-চোপড় এবং ব্যান্ডেজ কবরস্থানের মাঝামাঝি একটি ছোট্ট ঘর থেকে। ওই ঘরটি মৃতদেহ গোসল করানোর কাজে ব্যবহৃত হতো। উদ্ধারকৃত ব্যান্ডেজ ও কাপড়-চোপড় একটা ছেঁড়া ছালায় ভর্তি করে নেই। কবরগুলোতে গাছের ডাল ভেঙ্গে রক্ত¯স্নাত কাপড়ের টুকরো বেঁধে শনাক্তকরণ করা হলো। আজিমপুর কবরস্থান থেকে সাইকেলে করে ফেরার পথে প্রথমে সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের সামনে জনতার ভিড় দেখলাম। হলের মাইকে তিন-চার বার ঘোষণা দেই কবর পাওয়ার খরব। লেখক : গবেষক [email protected]
×