ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

অস্ট্রেলিয়া একাদশের কাছে ৫ উইকেটের হার

প্রস্তুতি ম্যাচেই বেহাল দশা বাংলাদেশের

প্রকাশিত: ০৫:৫১, ৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

প্রস্তুতি ম্যাচেই বেহাল দশা বাংলাদেশের

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ আগে ভাগে বাংলাদেশ দলের অস্ট্রেলিয়ায় যাওয়ার উদ্দেশ্যই হলো কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নেয়া। এবং উইকেটের সঙ্গে মানিয়ে নেয়া। তাহলে কী সেই ২৫ জানুয়ারি থেকে অস্ট্রেলিয়ায় থেকে কোনটিই হলো না? তাই বোঝা যাচ্ছে। না হলে কী আর অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে প্রথম আনঅফিসিয়াল প্রস্তুতি ম্যাচে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া একাদশের বিপক্ষেই এমন বেহাল দশা হয় বাংলাদেশের! ২৩১ রানে অলআউট হয়ে যায় মাশরাফিবাহিনী। সেই রান তুলতে ৪৩.২ ওভার খেলে স্বাগতিক দল। বাংলাদেশের হার হয় ৫ উইকেটে। সকাল ৬টায় কুইন্সল্যান্ডের এ্যালান বোর্ডার মাঠে শুরু হয় খেলাটি। ম্যাচে টস জেতে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া একাদশ। বাংলাদেশকে আগে ব্যাট করতে পাঠায়। সুযোগটি কাজে লাগবে কি, উল্টো ধরাশায়ী হয়েছে বাংলাদেশ। ৪৫.৪ ওভারে ২৩১ রান করতেই অলআউট হয়ে যায় বাংলাদেশ! একমাত্র মুমিনুল হক অর্ধশতক করতে পারেন। রিটায়ার্ড হার্ট হন। মুমিনুল হকের পরে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ৪৪, ওপেনার সৌম্য সরকার ৩৩ ও সাব্বির রহমান রুম্মন ৩১ রান করতে পারেন। বাকিরা ব্যর্থ হন। তামিম ইকবাল ম্যাচটিতে খেলেননি। বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানের ওপর সবার ভরসা। সেই অলরাউন্ডার ১৪ রানেই আউট হয়ে যান। পেসার ডেভিড মুডি এখন পর্যন্ত কোন আন্তর্জাতিক ম্যাচই খেলেননি। এখন পর্যন্ত প্রথম শ্রেণীর ম্যাচই খেলেননি। সেই মুডি’র বলগুলোই যেন গুলির মতো লাগে বাংলাদেশ ব্যাটসম্যানদের কাছে। একাই ৩ উইকেট নেন মুডি। জাতীয় দলের নয়, অথচ ঘরোয়া লীগে খেলা পেসারদের বল খেলতেই হিমশিম খেয়ে যান সাকিব, মুশফিক, মাহমুদুল্লাহরা। প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেট এখনও না খেলা আরেক পেসার হ্যারি কনওয়ে নিয়ে নেন ২ উইকেট। এ ম্যাচ দিয়েই বোঝা যাচ্ছে, অস্ট্রেলিয়ার কন্ডিশনে পেসাররা বাংলাদেশের জন্য কতটা ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারেন। ব্যাট হাতে যেখানে ব্যর্থ বাংলাদেশ ব্যাটসম্যানরা, সেখানে বল হাতেও ব্যর্থতাই দেখা গেছে। পিয়েরসনের মতো প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটই না খেলা ব্যাটসম্যানকেই আটকাতে পারেননি মাশরাফি, সাকিব, রুবেল, তাসকিনরা। ৮ জন বোলার বল করেও কোন কাজ হয়নি। উইকেটরক্ষক পিয়েরসন একাই ৭৮ রান করেছেন। এ ওপেনারের সঙ্গে অধিনায়ক টার্নারও ৭৮ রান করলে বাংলাদেশের রক্ষা হয়নি। শেষে গিয়ে উইলিয়াম বসিস্তো (৩১*) ও ম্যাকডারমট (২৫*) মিলে বাংলাদেশকে হারিয়ে দেন। ৪৩.২ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ২৩২ রান করে জেতে স্বাগতিকরা। ম্যাচে জিততে বাংলাদেশ দলের ৮ বোলার ব্যবহার করা হয়। মাশরাফি, রুবেল হোসেন, আরাফাত সানি, তাসকিন আহমেদ, তাইজুল ইসলাম, সাকিব আল হাসান, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ও সাব্বির রহমান রুম্মন বল করেন। রুবেল সর্বোচ্চ ২ উইকেট নিতে সক্ষম হন। মাশরাফি, তাসকিন, সাকিব নেন ১টি করে উইকেট। ম্যাচটি ছিল অস্ট্রেলিয়ার কন্ডিশনে কয়েকদিন প্রস্তুতি নিয়ে বাংলাদেশ কেমন করবে তা দেখার। কিন্তু দেখা গেল, বাংলাদেশ আসলে আকর্ষণীয় কিছুই করতে পারল না। শুরুতে অবশ্য ১৯ রানেই ২ উইকেট নেয়া গেছে। কিন্তু তৃতীয় উইকেটেই ১৩১ রানের জুটিই বাংলাদেশকে ডুবিয়েছে। স্পিনাররা যে সেখানে নীরব, তা আরাফাত সানি, তাইজুল, সাকিব, মাহমুদুল্লাহ’র বোলিংয়েই বোঝা গেছে। বাংলাদেশ দলের শক্তি স্পিন। সেই স্পিনাররাই প্রথম প্রস্তুতি ম্যাচে কার্যকর হয়ে উঠতে পারলেন না। আর তাই বাংলাদেশেরও হলো বেহাল দশা। এখন দেখার বিষয়, বৃহস্পতিবার যে দ্বিতীয় প্রস্তুতি ম্যাচ আছে, প্রথম প্রস্তুতি ম্যাচের ভুলগুলো থেকে শিক্ষা নিয়ে কী করেন বাংলাদেশ ক্রিকেটাররা। বাংলাদেশ একাদশ ॥ মাশরাফি বিন মর্তুজা, সাকিব আল হাসান, সৌম্য সরকার, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, রুবলে হোসেন, তাসকিন আহমেদ, মুমিনুল হক, আরাফাত সানি, সাব্বির রহমান, নাসির হোসেন ও এনামুল হক বিজয়। অস্ট্রেলিয়ান একাদশ ॥ উইল বসিস্তো, হ্যারি কনওয়ে, গ্রেগোরি, ক্রিস লেন, ডেভিড মুডি, জ্যারন মরগান, জেমস মারহেড, জেমস পিয়ারসন, নিক স্টিভেন্স, টার্নার, টিম ভ্যান ডার ও সেন উইলিসকে।
×