ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

হাইকমিশনের কর্মকর্তাকে ফিরিয়ে নিয়েছে পাকিস্তান

প্রকাশিত: ০৫:৩১, ৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

হাইকমিশনের কর্মকর্তাকে ফিরিয়ে  নিয়েছে পাকিস্তান

স্টাফ রিপোর্টার ॥ জঙ্গী সংগঠনে অর্থায়নসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ততার কারণে ঢাকার পাকিস্তান হাইকমিশন থেকে এক কর্মকর্তাকে ফিরিয়ে নিয়েছে দেশটি। পাকিস্তান হাইকমিশনের এ্যাটাশে মোহাম্মদ মাজহার খান পরিবার নিয়ে গত ৩১ জানুয়ারি ঢাকা ছেড়েছেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। এর আগে মোহাম্মাদ মাজহার ঢাকায় পুলিশের হাতেও গ্রেফতার হয়েছিলেন। যিনি পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তি এবং ভারতীয় মুদ্রা চোরাচালানে জড়িত ছিলেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ঢাকা থেকে বলার পর ইসলামাবাদ মাজহারকে ফিরিয়ে নিয়েছে। তিনি অপরাধমূলক কর্মকা-ে জড়িত বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে তাকে প্রত্যাহার করেছে পাকিস্তান সরকার। তিনি এর আগে বাংলাদেশ সরকারের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে ধরাও পড়েছিলেন। পাকিস্তান হাইকমিশন বাংলাদেশ সরকারকে জানিয়েছে, গত ৩১ জানুয়ারি মাজহার ঢাকা ছেড়েছেন। তিনি কূটনীতিক ছিলেন না, হাইকমিশনের একজন কর্মকর্তা ছিলেন। এ বিষয়ে বক্তব্যের জন্য পাকিস্তান হাইকমিশনের কাউকে তাৎক্ষণিকভাবে পাওয়া যায়নি। সূত্র জানায়, গত ১২ জানুয়ারি গোপন বৈঠকের সময় কয়েকজন সহযোগীসহ মাজহারকে আটক করে বনানী থানা পুলিশ। এর কয়েক ঘণ্টা পর পাকিস্তান হাইকমিশনের ফার্স্ট সেক্রেটারি সামিনা মাহতাব তাকে ছাড়িয়ে নেন। তবে তার সঙ্গী মুজিবুর রহমান পুলিশ হেফাজতে মুদ্রা জালিয়াতির তথ্য প্রকাশ করে। বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, মাজহার খান ও হাইকমিশনের কয়েকজন সহকর্মী মুদ্রা পাচারে জড়িত ছিলেন, যে অর্থ হিযবুত তাহরীর, আনসারুল্লাহ বাংলা টিম ও জামায়াতে ইসলামীর পকেটে যেত। ঢাকায় দুই বছরেরও বেশি সময় অবস্থানকালে আইএসআই-এর চর হিসেবে তিনি বিভিন্ন রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকা-ে সম্পৃক্ত হন বলেও অভিযোগ রয়েছে। বাংলাদেশে পাকিস্তানী নাগরিকদের বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ নতুন নয়। এর আগে গত নবেম্বরে চট্টগ্রাম থেকে জঙ্গী সন্দেহে চার পাকিস্তানীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। বিগত চারদলীয় জোট সরকারের আমলে দেশে জেএমবিসহ কয়েকটি সংগঠন যে জঙ্গী নেটওয়ার্ক তৈরি করেছিল, তাতে পাকিস্তানের কিছু নাগরিকের সহায়তার তথ্য মিলেছিল। কূটনৈতিক সম্পর্কের স্বার্থে এ বিষয়ে তদন্ত বেশিদূর এগোয়নি। পাকিস্তান হাইকমিশনে কর্মরত অনেকের মাধ্যমে জঙ্গীদের অর্থায়নসহ নানা কর্মকা-ে সহায়তা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ দীর্ঘদিনের। আর ভারতীয় মুদ্রা জালিয়াতিতে পাকিস্তানী চক্র জড়িত রয়েছে বলে তথ্য-প্রমাণ মিলেছে অসংখ্যবার। এ চক্র বাংলাদেশকে ট্রানজিট হিসেবে ব্যবহার করে আসছে। এসব অপকর্মে সর্বশেষ হাইকমিশন কর্মকর্তাদের সংশ্লিষ্টতা ঢাকার জন্য উদ্বেগজনকও। ঢাকা থেকে এ বিষয়ে একাধিকবার ইসলামাবাদকে সতর্ক করা হলেও আমলে নেয়নি। তবে সর্বশেষ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অভিযোগের প্রেক্ষিতে মোহাম্মাদ মাজহারকে প্রত্যাহার করে নেয় পাকিস্তান।
×