ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সরদার সিরাজুল ইসলাম

তারপরও তিনি বললেন ‘হরতাল, অবরোধ’ চলবে

প্রকাশিত: ০৪:২৯, ৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

তারপরও তিনি বললেন ‘হরতাল, অবরোধ’ চলবে

আজ যখন শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের নেতৃত্বকে হত্যা করতে ২১ আগস্টে গ্রেনেড হামলার মতো অবিশ্বাস্য ভয়াবহ ঘটনাবলীর অনেক তথ্য বের হয়ে আসছে তখন এটা সত্যি বিশ্বাস করা কঠিন হয়ে পড়ে যে, একটি নির্বাচিত সরকার ও নেতৃত্ব কিভাবে তাদের প্রতিপক্ষ শক্তিকে ধ্বংস করতে পারে, নির্লজ্জভাবে সত্যকে উল্টো পথে পরিচালিত করতে পারে এবং সেই জঘন্য কাজটি হয়েছে এই ঢাকায়, এই বাংলাদেশে (২ ফেব্রুয়ারির পর) বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক এবং জিয়ার মৃত্যুর সময় চট্টগ্রামের সার্কিট হাউসের পাশের কামরায় অবস্থানকারী লোকটিকে খালেদা ২০০২ সালে রাষ্ট্রপতির পদ থেকে বিতাড়ন, এমনকি তিনি নিজে একটি বিকল্পধারা বানিয়ে মিটিং করতে গেলে বিএনপি দস্যুরা তাঁকে যেভাবে হামলা করেছিল সে দৌড়ানোর দৃশ্য জনগণ ভোলেননি। কিন্তু ভুলে গেছেন লাজলজ্জাহীন ব. দ. চৌধুরী। এখনও তাঁর পক্ষে সাফাই গাইছেন। এমনি মেরুদ-হীন প্রাণী জনগণের জন্য ক্ষতির কারণ। যা দিয়ে শুরু করছিলাম সেই প্রসঙ্গ দিয়ে শেষ করতে চাই। সেটি হচ্ছে কোকোর মৃত্যু এবং তারপরেও ম্যাডামের না থামা। কোকো কেন, কি অসুখে মারা গেছে জানি না। তবে এটি অকাল মৃত্যু। সে অনেক অপরাধ করেছে এবং দ-প্রাপ্ত আসামিও বটে। তার মধ্যে অনুতাপ থাকতে পারে। কিন্তু একথা ভাবা অসঙ্গত নয় যে, তার মা এই গত ১৩ এবং ১৫ সালে যেসব মানুষ হত্যা করেছেন, পঙ্গু করেছেন, দেশের অপরিসীম ক্ষতি করেছেন, তা বাংলাদেশের জনগণ কোন অবস্থায়ই মেনে নেবেন না। এ কারণে তাঁর শঙ্কিত হওয়ারই কথা। সে যাই হোক, মানুষ মরণশীল। সে এই বাংলাদেশের আলো-মাটিতে ফিরবে না। তবে তার জানারও কোন সুযোগ নেই যে, তার মরদেহ (২৭.০১.১৫) বাংলাদেশে প্রবেশ থেকে শুরু“ করে জানাজা এবং দাফন পর্যন্ত এদেশে চলছে তার মায়ের দেয়া অবরোধ, হরতাল (চট্টগ্রামসহ দেশের অন্যান্য স্থানে তারেকের ভাষায় একই মায়ের সন্তান শিবিরের হরতাল)। পুড়ছে গাড়ি, মরছে মানুষ। কোন মানুষের মৃত্যুর পরেও তার মায়ের এবং খুনের মামলার ফেরারি ভাইয়ের মতো এমন আচরণ যেন আর কারও ভাগ্যে না ঘটে। তার মরদেহ দেখে মাকে সান্ত¡না দেয়ার জন্য মোসাদ্দেক আলী ফালু ছাড়া কোন আত্মীয়স্বজন পাওয়া গেল না। জনকণ্ঠ ২৯.১.১৫ সংখ্যায় ‘আইএসআই নীলনকশার অন্তরালে অফিস ষড়যন্ত্র’ শিরোনামে তথ্য-উপাত্ত দিয়ে কোকোর মৃত্যুর কারণের তীর আইএসআইর পরামর্শে দিকনির্দেশ করে লিখেছেন যে, সে খালেদাকেও হত্যা করতে পারে। আর কোকোর লাশটি দাফনের জন্য জায়গা হলো না সেনাবাহিনীর কবরস্থানে। যাদের একসময় তারা চাকর-বাকর মনে করতেন। তবে শেখ হাসিনার এই উদ্যোগকে মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে প্রশংসিত হলেও দৈনিক প্রথম আলোর ২৬.১.১৫ তারিখের সম্পাদকীয়তে মানবিক দৃষ্টিকোণকে “যদি মানবিক হয় তবে............” শব্দ দিয়ে প্রশ্নবিদ্ধ করে শর্ত আরোপ করেছেন। আর একই পত্রিকায় মিজানুর রহমান খান লিখেছেন প্রধানমন্ত্রী যদি বিএনপির দফতরেই যেতে পারেন তাহলে তাদের সন্ত্রাসী দল বলা যায় না। বিজ্ঞ লেখকের সম্পাদক মতিউর রহমানের ২৬.০১.০৮ তারিখে একুশের গ্রেনেড হামলা নিয়ে লেখাটির শেষাংশের উদ্ধৃতি দেয়া হলো। আজ যখন শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের নেতৃত্বকে হত্যা করতে ২১ আগস্টে গ্রেনেড হামলার মতো অবিশ্বাস্য ভয়াবহ ঘটনাবলীর অনেক তথ্য বের হয়ে আসছে তখন এটা সত্যি বিশ্বাস করা কঠিন হয়ে পড়ে যে, একটি নির্বাচিত সরকার ও নেতৃত্ব কিভাবে তাদের প্রতিপক্ষ শক্তিকে ধ্বংস করতে পারে, নির্লজ্জভাবে সত্যকে উল্টো পথে পরিচালিত করতে পারে এবং সেই জঘন্য কাজটি হয়েছে এই ঢাকায়, এই বাংলাদেশে। ২১ আগস্টের মতো ভয়ঙ্কর ঘটনা বিএনপি-জায়ামাত জোট সরকারের এ ভূমিকাকে দেশের মানুষ কিভাবে গ্রহণ করবে এ ঘটনা বিএনপির জন্য এখন এবং ভবিষ্যতের জন্য একটি কলঙ্কিত অধ্যায় হিসেবেই বিবেচিত হবে। সবশেষে কোকোর মৃত্যুর খবরে শেখ হাসিনা গিয়েছিলেন তাঁর আপা খালেদাকে সমবেদনা জানাতে। ম্যাডামের দফতর যে কা- ঘটিয়েছে এটা দেখে মনে হয় বিএনপি চলে পুতুলের নাচে, এখানে কোন জীবন্ত মানুষ নেই। শেষ কথা হচ্ছে- সমবেদনা গ্রহণের জন্য যে যোগ্যতা প্রয়োজন সেটিও ওদের নেই। (সমাপ্ত)
×