ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

দুই সুপারস্টারের প্রশংসায় কোচ লুইস এনরিকে, টানা ১৮ ম্যাচ পর জয়রথ থামল ভিয়ারিয়ালের, বার্সিলোনা ৩-২ ভিয়ারিয়াল

নেইমার-মেসি যুগলে ফের উদ্ধার বার্সিলোনা

প্রকাশিত: ০৬:১৮, ৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

নেইমার-মেসি যুগলে ফের উদ্ধার বার্সিলোনা

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ পাঁচ মিনিটে তিন গোল। বুঝতেই পারছেন পাঠক, রোমাঞ্চে ভরপুর এক ম্যাচই হয়েছে ন্যুক্যাম্পে। রবিবার রাতে স্প্যানিশ লা লীগার ম্যাচে স্বাগতিক বার্সিলোনার মুখোমুখি হয়েছিল অপ্রতিরোধ্য ভিয়ারিয়াল। কিন্তু দুর্ভাগ্য অতিথিদের, দু’-দু’বার এগিয়ে গিয়েও নেইমার-মেসি যুগলের কাছে হারতে হয়েছে তাদের। শেষ পর্যন্ত ৩-২ গোলের স্বস্তির জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে বার্সা। মেসি ও নেইমার ছাড়া ক্যাটালানদের অপর গোলদাতা আলকান্ট্রা ডো নাসিমেন্টো। অন্যান্য ম্যাচে অ্যাথলেটিক বিলবাও ২-০ গোলে লেভান্তেকে, আলমেরিয়া ১-০ গোলে গেটাফেকে ও সেভিয়া ৩-২ গোলে পরাজিত করে এস্পানিওলকে। দারুণ জয়ে পয়েন্ট তালিকার দ্বিতীয় স্থান ধরে রেখেছে বার্সিলোনা। ২১ ম্যাচ শেষে সাবেক চ্যাম্পিয়নদের ভা-ারে জমা ৫০ পয়েন্ট। এক ম্যাচ কম খেলে ৫১ পয়েন্ট নিয়ে সবার ওপরে রিয়াল মাদ্রিদ। ম্যাচটা বার্সিলোনার জন্য মোটেও সহজ ছিল না। পয়েন্ট টেবিলের ছয় নম্বর দল হলেও টানা ১০ ম্যাচে অপরাজিত থেকে ক্যাটালানদের মুখোমুখি হয়েছিল ভিয়ারিয়াল। শুধু তাই নয়, সব ধরনের প্রতিযোগিতায় গত ১৯টি ম্যাচে এই প্রথমবারের মতো হারের স্বাদ পেয়েছে দলটি। দু’বার পিছিয়ে পড়েও লিওনেল মেসি, নেইমারের জাদুকরী ফুটবলে তৃপ্তির জয় পেয়েছে ক্যাটালানরা। ম্যাচের শুরু থেকেই অতিথিদের ওপর চড়াও হয়ে খেলতে থাকে বার্সা। ১৩ মিনিটে দলকে এগিয়ে নেয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন সুয়ারেজ। কিন্তু প্রতিহত করেন উরুগুইয়ান তারকার শট। ৩০ মিনিটে নিজেদের প্রথম সংঘবদ্ধ সুযোগ কাজে লাগিয়ে এগিয়ে যায় ভিয়ারিয়াল। সব ধরনের ফুটবলে টানা ১৮ ম্যাচ অপরাজিত থেকে খেলতে নামা দলটিকে এগিয়ে নেন রিয়াল মাদ্রিদ থেকে ধারে আসা ডেনিস চেরিশেভ। প্রায় ১৬ গজ দূও থেকে দারুণ শটে বার্সা গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন তিনি। প্রথমার্ধের শেষ মিনিটে বার্সিলোনাকে সমতায় ফেরান দুর্দান্ত ছন্দে থাকা নেইমার। মেসির কাছ থেকে বল পেয়ে রাফিনহা শট নেন। তবে তার প্রচেষ্টা ব্যর্থ কওে দেন গোলরক্ষক আসেনহো। ফিরতি বল পান ব্রাজিলিয়ান অধিনায়ক। মাত্র ৮ গজ দূও থেকে বল জালে জড়াতে ভুল করেননি নেইমার। লা লীগায় এটি তাঁর ১৫তম গোল। গত ডিসেম্বরে লীগ চ্যাম্পিয়ন এ্যাটলেটিকো মাদ্রিদকে ১-০ গোলে হারিয়ে চমকে দেয়া ভিয়ারিয়াল আবারও এগিয়ে যায় ৫১ মিনিটে। মাঝমাঠে বার্সিলোনার সাবেক সতীর্থ জিওভানি ডস সান্টোসের কাছে বল হারান জেরার্ড পিকে। অনেকটা দৌড়ে সান্টোস এগিয়ে আসা ব্রাভোকে এড়িয়ে বল বাড়ান লুসিয়ানো ভিয়েট্টোকে। অল্প দূরত্ব থেকে সহজেই গোল করেন তিনি। দুই মিনিট পরই ফের সমতা ফেরায় বার্সিলোনা। মেসির হেড একজন ডিফেন্ডার ফিরিয়ে দেয়ার পর বল জালে পাঠান রাফিনহা (আলকান্ট্রা ডো নাসিমেন্টো)। এর দুই মিনিট পর জয় নিশ্চিত করা গোলটি করেন মেসি। সুয়ারেজের কাছ থেকে বল পেয়ে ডান পায়ে লক্ষ্যভেদ করেন সাবেক টানা চারবারের ফিফা সেরা ফুটবলার। এই গোলে লীগের শীর্ষে গোলদাতা ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর (২৮) সঙ্গে ব্যবধান কমালেন মেসি (২২)। বাকি সময়ে আর কোন গোল না হলে ৩-২ ব্যবধানে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে বার্সিলোনা। ম্যাচ শেষে বার্সার ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডার রাফিনহা বলেন, ম্যাচে আমরা দু’বার পিছিয়ে পড়েছিলাম। মাঠেই ভাবতে শুরু করি ম্যাচটি আমাদের জন্য কঠিন হয়ে যাচ্ছে। ব্যক্তিগতভাবে এ ম্যাচটি আমার জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ ছিল। কিছু একটা করতে চেয়েছিলাম। ভাগ্য ভালো যে শেষ মুহূর্তে দিনটি আমাদেরই হয়। তিনি আরও বলেন, আমরা খুব দ্রুত ম্যাচে সমতা ফিরিয়ে এনেছিলাম। তার পরই মেসির গোলে আমরা ম্যাচে ফিরে আসি। তখন ভাবতে থাকি দলে মেসি, নেইমার আর সুয়ারেজের মতো ফুটবলার থাকলে যে কোন কিছু করাই সম্ভব। বার্সা কোচ লুইস এনরিকেও দলের দুই সেরা তারকা মেসি ও নেইমারের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন।
×