ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

দুবাইয়ে শিরচ্ছদ থেকে রক্ষা পাচ্ছে প্রবাসী দুই বাংলাদেশী

প্রকাশিত: ০৬:০০, ৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

দুবাইয়ে শিরচ্ছদ থেকে রক্ষা পাচ্ছে প্রবাসী দুই বাংলাদেশী

মীর নাসিরউদ্দিন উজ্জ্বল, মুন্সীগঞ্জ থেকে ॥ দুবাইয়ে শিরচ্ছেদ হতে রক্ষা পাচ্ছে প্রবাসী দুই বাংলাদেশী। ওই দুই প্রবাসীর দুবাই আদালতের শিরচ্ছেদ আদেশ রোধ করতে ক্ষমাপত্রে সোমবার নিহতের স্বজনরা স্বাক্ষর করেছে। এর বিপরীতে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে ১২ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিয়েছে দণ্ডপ্রাপ্তদের স্বজনরা। এতে বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি রক্ষা হবে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার কেইয়ান ইউনিয়ন পরিষদ মিলনায়তনে উভয় পরিবারের উপস্থিতিতে এ ক্ষমাপত্রে স্বাক্ষর করা হয়। ক্ষমাপত্রটি এখন নোটারি করে আইন মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে দুবাই সরকারের কাছে পাঠানো হবে। ক্ষমাপত্র স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সিরাজদিখান উপজেলা চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন আহমেদ, ইউএনও আবুল কাশেম, জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসের সহকারী পরিচালক সাইফুল ইসলাম ও কেইয়ান ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল বারেক। সংশ্লিষ্টরা জানান, এই সমঝোতায় সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখেন মুন্সীগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোঃ সাইফুল হাসান বাদল। তিনি দু’দফায় সরেজমিন সিরাজদিখানে এসে পরিবারটিকে ক্ষমাপত্রে স্বাক্ষর করতে রাজি করান। জেলা জনশক্তি ও কর্মসংস্থান অফিসের জরিপ কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলতাফ হোসেন জানান, ২০১০ সালের ফেব্রুয়ারিতে দুবাইয়ে খুন হন সিরাজদিখানের কেইয়ান ইউনিয়নের কোর্টগাঁও গ্রামের সামাদ তালুকদারের ছেলে নূর মোহাম্মদ (২৭)। তাকে খুন করে অপর প্রবাসী দুই বাংলাদেশী। এরা হলো চাঁদপুরের কচুয়ার সিরস্থান গ্রামের রওশন আলীর ছেলে কামাল হোসেন ও টাঙ্গাইলের ধনবাড়ীর কুরশি গ্রামের আরশাদ আলীর ছেলে সাজদু মিয়া। পরবর্তীতে এ ব্যাপারে দুবাইয়ে মামলা হলে আদালত খুনের অভিযোগে তাদের শিরñেদের আদেশ দেয়। পরে বাংলাদেশ সরকার নিহতের পরিবার ও খুনীদের আত্মীয়স্বজনের মধ্যে আলোচনার উদ্যোগ নেন। ওই দুই খুনীকে মাফ করে দিতে দফায় দফায় বৈঠক হয়। পরে উভয়পক্ষের সম্মতিতে ১২ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিয়ে ক্ষমাপত্রে স্বাক্ষর করে উভয়পক্ষ। ক্ষমাপত্রটি এখন সরকারের যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে দুবাই সরকারের মাধ্যমে সেখানকার আদালতে পাঠানো হবে। দুবাইয়ের সংশ্লিষ্ট আদালত খুনীদের ক্ষমা করার ব্যাপারে আইনী পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। প্রসঙ্গত ওই দুই অভিযুক্ত বাংলাদেশী শিরñেদের সাজা মাথায় নিয়ে এখন দুবাই কারাগারে বন্দী আছে। মুন্সীগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোঃ সাইফুল হাসান জানান, দুবাই সরকারের আইন অনুযায়ী কেবল নিহতের পরিবার ক্ষমা করে দিলে খুনী বা অভিযুক্ত ব্যক্তি মাফ পেতে পারে। আর তাই নিহতের পরিবারকে ক্ষমতা করাতে দফায় দফায় উদ্যোগ নেয়া হয়। সোমবার সে অনুযায়ী সব ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এতে নিশ্চিতভাবে দু’বাংলাদেশী শিরñেদ থেকে রক্ষা পেতে যাচ্ছে।
×