ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

গৌরবের জয়ে কাক্সিক্ষত শেষ চারে বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ০৫:২৯, ৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

গৌরবের জয়ে কাক্সিক্ষত শেষ চারে বাংলাদেশ

রুমেল খান ॥ ‘এই ম্যাচে জয় পেতে ছেলেরা ছিল দৃঢ় প্রত্যয়ী। তাদের পারফর্মেন্সে আমি দারুণ খুশি। আগেই বলেছিলাম এদেশে অনেক প্রতিভাবান ফুটবলার আছে। ছেলেরা আজ আবারও সেটি প্রমাণ করেছে। ১৮ বছরের একটি ছেলে আজ প্রাপ্তবয়স্কদের মতো পারফর্ম করেছে!’ কথাগুলো বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের ডাচ্ কোচ লোডভিক ডি ক্রুইফের। সোমবার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে চলমান ‘বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ’-এ ‘এ’ গ্রুপের শেষ ম্যাচে স্বাগতিক বাংলাদেশ ১-০ গোলে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে গ্রুপ রানার্সআপ হিসেবে সেমিফাইনালে উন্নীত হয়। ক্রুইফ যার সম্পর্কে প্রশংসা করেন, তিনি মিডফিল্ডার হেমন্ত ভিনসেন্ট বিশ্বাস। মাঘের তীব্র শীতে ম্যাচের জয়সূচক গোলটি করে যেন তিনি বইয়ে দেন একরাশ হেমন্তের মাতাল সমীরণের স্নিগ্ধ পরশ। ভাল খেলেন, তাই মিডফিল্ডার হওয়ার পরও হেমন্তকেই দলের ১০ নম্বর জার্সিটি দিয়েছেন ক্রুইফ। তার আস্থার যোগ্য প্রতিদানই দিলেন ঢাকা মোহামেডানের এই কৃতী ফুটবলার। ১৫ হাজার দর্শকের উপস্থিতিতে লঙ্কার বিরুদ্ধে ম্যাচে ৪-০ গোলে জিততে পারত বাংলাদেশÑ এমনটাই মনে করেন ক্রুইফ, ‘এ সমস্যা থেকে উত্তরণ করতে পারলে ভবিষ্যতে বাংলাদেশের ফুটবল আরও উন্নতি করবে।’ লঙ্কান কোচ নিকোলা কাভাজোভিক ভুয়সী প্রশংসা করেছেন জাহিদ হাসান এমিলির, ‘প্রথমত বাংলাদেশকে অভিনন্দন সেমিতে পৌঁছার জন্য। গত তিনমাসের হিসেবে অনেক এগিয়ে গেছে বাংলাদেশের ফুটবল। আজকের ম্যাচে এমিলি অনেক ভাল খেলেছে। সে আর জাহিদ আমাদের বড় সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। এছাড়া মামুনুলও ভাল খেলেছে। আর হেমন্ত এক কথায় ম্যাচের সেরা খেলোয়াড়।’ বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক মামুনুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের সমর্থন দেয়ার জন্য কোচসহ দেশবাসীকে ধন্যবাদ। গোল করার জন্য হেমন্তকে ধন্যবাদ। সেমিতে যাওয়া আমাদের প্রথম লক্ষ্য ছিল। এখন নতুন লক্ষ্য ফাইনাল।’ হেমন্ত বলেন, ‘আমার গোলে জয় এসেছে, তাই আমি খুশি। এমিলি ভাইকে ধন্যবাদ আমাকে সাপোর্ট দেয়ার জন্য। এ ম্যাচে আরও গোল করতে পারতাম। কিন্তু সেগুলো কাজে লাগাতে পারিনি। আশা করি ভবিষ্যতে আর এমনটা হবে না।’ শেষ চারে নাম লেখাতে প্রয়োজন ছিল অন্তত ড্র। কিন্তু ড্র নয়, গৌরবের সঙ্গে জিতেই বহু কাক্সিক্ষত সেমিফাইনালে উঠেছে বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল। সেমিতে যেতে শ্রীলঙ্কার জয় ছাড়া কোন বিকল্প ছিল না। কিন্তু জয় তো দূরে থাক, ম্যাচে সমতায় ফিরতে যে পেনাল্টি পেয়েছিল, তাও গোলে পরিণত করতে ব্যর্থ হয় তারা! এই মাঠে বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল দীর্ঘ চার বছর পর কোন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ আন্তর্জাতিক ম্যাচে জয়ের দেখা পেল। সর্বশেষ ২০১১ সালে এ মাঠে আরব দেশ লেবাননকে ২-০ গোলে পরাভূত করেছিল লাল-সবুজ জার্সিধারীরা। সেটা ছিল ফিফা বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের খেলা। এখন দেখার বিষয়, আগামী শুক্রবার ফাইনালে খেলার স্বপ্ন কতটা বাস্তবে রূপ দিতে পারে ক্র্ইুফের শিষ্যরা।
×