ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ঢাকার দিনরাত

প্রকাশিত: ০৪:৩৫, ৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

ঢাকার দিনরাত

প্রিয় আর রাজকন্যা- খালাত ভাইবোন। প্রিয় পড়ছে ঢাকার একটি ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে ক্লাস ফাইভে। আর রাজকন্যা এবার এসএসসি পরীক্ষার্থী। প্রিয়দের স্কুলে ডিসেম্বরে শীতকালীন ছুটি দেয়া হয়েছিল দু’সপ্তাহের জন্য। জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে নির্ধারিত তারিখে স্কুল খোলেনি। দফায় দফায় এসএমএস পাঠিয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষ ছুটি বাড়ানোর কথা বলেছে। ফেব্রুয়ারি এসে গেল। কবে স্কুল খুলবে কোনভাবেই জানা যাচ্ছে না। এক অনির্দিষ্টকালীন ছুটির ভেতর আছে প্রিয়। প্রিয় অবশ্য আনন্দেই আছে। কিন্তু ওর অভিভাবকরা জানেন নতুন বছরের পুরো একটা মাসই চলে গেল ক্লাস ছাড়া। প্রতিটি শ্রেণীরই নির্দিষ্ট পাঠ্যসূচী রয়েছে, যা পাঠের জন্য নির্দিষ্ট সময় প্রয়োজন। দুয়েক সপ্তাহের ব্যাপার হলে অপঠিত বিষয়গুলো বাড়তি সময় নিয়ে আলাদাভাবে ক্লাসে পড়িয়ে পুষিয়ে নেয়া যায় হয়ত। কিন্তু মাসের পর মাস অনির্ধারিত ছুটির কারণে ক্লাসের বহু পড়াই অসমাপ্ত থেকে যাবে। এই না শেখাটুকু কোনদিন কি শেখা হবে? এছাড়াও আরও ব্যাপার আছে। যে শিশুরা হরতাল অবরোধের মতো রাজনৈতিক কর্মসূচীর কারণে সপ্তাহের পর সপ্তাহ স্কুলে যাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছে তাদের মনোজগতে কি এসবের কোন বিরূপ প্রভাব পড়ছে না? এ জাতীয় সূক্ষ্ম ক্ষতির কথা কি আর চিন্তা করে দেখছে কেউ? আর রাজকন্যার কথা কী আর বলব। ফেব্রুয়ারির ২ তারিখ থেকে পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা। ওর সহপাঠী শান্তা বলেছে, দেখিস শেষ পর্যন্ত পরীক্ষা পিছাবে। রাজকন্যার প্রস্তুতি ভালই। পরীক্ষা পিছিয়ে যাক এটা সে চায় না। আবার হরতালের ভেতর আগে কখনও তাকে স্কুলে যেতে হয়নি। এবার তাহলে হরতালের মধ্যেই পরীক্ষা দিতে হবে? সেটা কেমন হবে কে জানে। রাজকন্যার চাইতে বরং তার বাবা-মায়ের উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা বেশি। এক ঘোর অনিশ্চয়তার মধ্যে আছেন তাঁরা। হরতাল আহ্বানকারী রাজনীতিকদের কাছে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের অভিভাবকরা আবেদন করেছেন হরতাল প্রত্যাহারের। অন্তত এসএসসি পরীক্ষা হরতালের আওতামুক্ত ঘোষণা করলেও অনেকটা উপকার হতো। ওদিকে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে নিরাপত্তা প্রদানের কথা। রাজকন্যার বাবা তবু ভরসা পাচ্ছেন না। তিনি বলছেন, আমার মেয়ের জীবন বড়, নাকি পরীক্ষা? যদি পরীক্ষা হয় হরতাল-অবরোধের ভেতর তাহলে আমার মেয়ে নির্বিঘ্নে পরীক্ষা দিয়ে ঘরে ফিরে আসতে পারবে, তার ওপর পেট্রোলবোমা মারা হবে না- এমন নিশ্চয়তা কেউ কি দিতে পারে? রাজকন্যার মা নিজেই মেয়েকে পরীক্ষার হলে নিয়ে যাবেন। মেয়েকে আগলে রাখবেন। তবু মেয়ের একটা শিক্ষাবর্ষ নষ্ট হতে দেবেন না। শেষ পর্যন্ত অবশ্য হরতালের ভেতর পরীক্ষা নেয়া হবে না বলে ঘোষণা এসেছে। প্রথম পরীক্ষাটি চলে গেছে সোমবার থেকে শুক্রবারে। কিন্তু রাজকন্যার বাবা-মায়ের উদ্বেগের অবসান ঘটেনি। কারণ হলো অবরোধ রোধ হয়নি। ওপরে যে খণ্ডচিত্রটি তুলে ধরা হলো তা কি কেবল রাজধানীর রাজকন্যা নামের একজন এসএসসি পরীক্ষার্থীর পরিবারের গল্প? তা তো নয়। গোটা দেশের ১৫ লাখ এসএসসি পরীক্ষার্থীর অভিভাবকবৃন্দ রয়েছেন এমন অনিশ্চিত এক পরিস্থিতির মধ্যে। হরতাল অবরোধের কারণে কতদিনই না ছেলেমেয়েদের স্কুল নষ্ট হয়েছে। এখন পরীক্ষাই নষ্ট হয়ে যাবে? রাজনীতি আমাদের কোথায় নিয়ে চলেছে! শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যত এক অর্থে আগামী দিনে দেশের মূল চালিকাশক্তিরই ভবিষ্যত। তাই এসএসসি এইচএসসির মতো গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষাগুলো সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মসূচীর বাইরে রাখাই সমীচীন। এ ব্যাপারে সকল পক্ষ একমত না হলে সামনে সমূহ দুর্দিন। আজকের পরীক্ষার্থীর মনে লেখাপড়ার চাপের পাশাপাশি বাড়তি শঙ্কা ও মৃত্যুঝুঁকির মতো বিরাট মানসিক চাপ চাপানোর বিরুদ্ধে সমাজের সব স্তর থেকেই সোচ্চার হওয়া সঙ্গত বলে মনে করি। শীতার্তদের জন্য কবিদের দায় শীতের কবিতা সন্ধ্যা শুনে মনে হবে শীত নিয়ে কাব্য করবেন বুঝি কবিরা। তাও আবার দর্শনীর বিনিময়ে কবিতা সন্ধ্যা। তার মানে দুই শ’ পাঁচ শ’ টাকা দিয়ে টিকিট কেটে কবিতা শোনা! কারও কারও মনে হতে পারে- শীত তো শেষ। এখন আবার শীতের কবিতা কেন? ছোটকাগজ ‘লোক’ এই কবিতা সন্ধ্যার আয়োজন করেছিল, তার উদ্দেশ্য কেবল কাব্যিক নয়, মানবিকও বটে। বরং মানবিকতাই বড় হয়ে উঠেছিল। ঢাকার নীলক্ষেতের পরিকল্পনা কমিশনের মিলনায়তন প্রায় পূর্ণই ছিল বলতে হবে। টিকিট কেটে কবিতা শুনতে এত মানুষ! মনে পড়ে গেল দর্শনীর বিনিময়ে দেশের প্রথম কবিতা সন্ধ্যাটির কথা। সেটি আশির নবেম্বরের কথা। ব্রিটিশ কাউন্সিলে ওই কবিতা পাঠের আয়োজন করেছিল কবিদের সংগঠন পদাবলী। শামসুর রাহমান, বেলাল চৌধুরী, আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ, সাইয়িদ আতীকুল্লাহ, মোহাম্মদ রফিক, অরুণাভ সরকার, রবিউল হুসাইন- কত কত কবি। সেই আমার প্রথম কবিদের সামনাসামনি দেখা। সম্ভবত কুড়ি টাকা ছিল টিকিটের মূল্য। শামীম আজাদ আর শাহজাদী আঞ্জুমান আরা গোলাপ ফুল হাতে দাঁড়িয়ে ছিলেন প্রবেশ দ্বারে। দর্শক-শ্রোতার হাতে একটি করে ডাঁটিসমেত ফুল তুলে দিচ্ছিলেন মিষ্টি হাসির সঙ্গে। যা হোক, লোক-এর কবিতা সন্ধ্যায় সিনিয়র কবিদের মধ্যে সৈয়দ শামসুল হক, মুহম্মদ নূরুল হুদা, হাবীবুল্লাহ সিরাজী থাকলেও বিধান সাহা, মামুনখান, তুষার কবিরের মতো অনেক নবীন-তরুণ কবিও ছিলেন। শীতের কবিতাই বেশি পড়া হলো। কবিতা পাঠ শেষে কবিদের প্রাপ্য সম্মানীর পুরোটাই শীতার্তদের সহায়তা ফান্ডে প্রদান করা হলো। বেশকিছু প্রতিষ্ঠান, এমনকি ব্যক্তি পর্যায়েও কেউ কেউ অর্থ প্রদান করলেন। কম্বল তুলে দেয়া হলো পথশিশুদের হাতে। সৈয়দ শামসুল হক সদ্য ফিরেছেন তাঁর গ্রামের বাড়ি কুড়িগ্রাম থেকে। সেখানে এখনও প্রচুর শীত। প্রচুর দুস্থ মানুষ আছেন যাঁদের শীত নিবারণের জন্য প্রয়োজনীয় পরিধেয় নেই, বললেন তিনি। দুস্থ শীতার্তদের সহায়তা দানের জন্য লোক-এর তথা কবিদের এ উদ্যোগ নিশ্চয়ই সমাজের অন্য শ্রেণী-পেশার মানুষকে উদ্বুদ্ধ করবে। নতুন প্রকাশনার আত্মপ্রকাশ চিত্রা নদী কয়েকটি কারণে বিখ্যাত হয়ে আছে; তার ভেতর একটি হলো বরেণ্য শিল্পী এসএম সুলতানের বাড়ি ওই নদীর পাড়ে। নদীটি বহু লেখক-চিত্রশিল্পী এবং চলচ্চিত্রকারকে অনুপ্রাণিত করেছে। প্রকৌশলী খোরশেদ বাহার কর্মসূত্রে নড়াইলে গেলে চিত্রা নদী তাঁকে মোহাবিষ্ট করে। এই চিত্রা নামেই তিনি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান করেছেন এবং এবারই প্রথম বইমেলায় যাচ্ছে প্রকাশনীটি। একগুচ্ছ বিচিত্রধর্মী নতুন বই প্রকাশ করেছে চিত্রা। ঢাকা ক্লাবে আয়োজিত প্রকাশনা অনুষ্ঠানে যে ছয়টি সদ্য প্রকাশিত বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয় তার একটির লেখক হলেন শিশুসাহিত্যিক ফরিদুর রেজা সাগর। তিনি আয়োজনটিকে দেখেছেন বইমেলার আগমনী আনন্দবার্তা হিসেবে। জানিয়ে দিলেন, তিনি চিত্রা পাড়ের জামাতা। দুই কথাশিল্পী রশীদ হায়দার, সেলিনা হোসেন, চার কবি- রফিক আজাদ, রবিউল হুসাইন, হাবীবুল্লাহ সিরাজী ও সদ্য বাংলা একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত শিহাব সরকার সাহিত্য বিষয়ে প্রাঞ্জল আলোচনা করলেন। প্রকাশনীটির প্রধান নির্বাহী শাম্মী আকতার অভিজ্ঞতার কথা শোনালেন। সঞ্চালক ছিলেন রেজাউদ্দিন স্টালিন। বইমেলার আগে-আগে অনুষ্ঠিত এ আয়োজন কবি- লেখকদের প্রীতি সমাবেশ হয়ে উঠেছিল। ভাষার মাসের প্রথম সন্ধ্যায় ভাষার মাস ফেব্রুয়ারির প্রথম দিন বইমেলা না গিয়ে পারেন না বহু বইপ্রেমী মানুষ। আনন্দের ব্যাপার হচ্ছেÑ বইমেলার শুরুর দিনেই বহু প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান একাধিক নতুন বই নিয়ে এবারও উপস্থিত হয়েছে। নবপর্যায়ে নবসাজে বইমেলা আর নতুন বইয়ের গন্ধÑ দুয়ে মিলে দারুণ এক খুশি। হরতালের বিন্দুমাত্র আছর নেই বইমেলার ওপর। তবে ভুলে যাচ্ছি না ঢাকার বাইরে যাঁরা থাকেন অবরোধের কারণে তাঁদের মেলায় যোগ দেয়ার অনিশ্চয়তার কথা। ভালটাই প্রত্যাশা করা ভাল, ভাবছি শ্বাসরোধকারী অবরোধ উঠে যাবে। মানুষ আবার নির্বিঘেœ চলাচল করতে পারবে। এবার বইমেলায় ঢুকেই প্রথমে যেটা দৃষ্টি কাড়ল তা হলো প্যাভিলিয়ন। এমনটা একুশের বইমেলায় আর দেখিনি। গত বছর থেকে একাডেমি প্রাঙ্গণের বাইরে বইমেলা সম্প্রসারিত হওয়ায়, কিংবা স্পষ্ট করে বললে মূল বইমেলাটি সোহরাওয়ার্দীর সুপরিসর এলাকায় স্থানান্তরিত হওয়ার সুবাদেই এমন প্যাভিলিয়ন করার সুযোগ মিলেছে। বাংলা একাডেমি ছাড়াও ১০টি বড় প্রকাশনা সংস্থা এই প্যাভিলিয়ন নিয়েছে। এতে সুবিধা হবে পাঠকদের। অনেকটা স্পেস পাওয়ায় ঠেলাঠেলি গাদাগাদি হাঁসফাঁস অবস্থা থাকবে না। প্রচ্ছদ দেখে বই পছন্দ হলে তার পাতা উল্টিয়ে ধীরে সুস্থে বইটি যাচাই করা যাবে। প্রায় একডজন প্যাভিলিয়ন একসঙ্গে গর্বিত ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে। মাওলা, আগামী, অন্যপ্রকাশ, অনন্যা, সময় প্রকাশনÑ সব্বাই প্যাভিলিয়ন নিয়েছে। সাজিয়েছে চারদিক খোলা রেখে, অর্থাৎ পাঠকরা চারদিক থেকেই বই দেখতে পারবেন। তবে ব্যতিক্রমী অঙ্গসজ্জার কারণে বিশেষ নজর কাড়ল ইউপিএল। প্রকাশিত কয়েকটি বই যেন পাশাপাশি লম্বালম্বিভাবে রাখা। একেকটি বইয়ের উচ্চতা কমপক্ষে দশ ফিট হবে। বিশালাকৃতির বইয়ের পুটে নাম দেখলাম লেখকের। আলাদাভাবে গুরুত্ব পেয়েছেন মুহাম্মদ হাবীবুর রহমান। তাঁর বিখ্যাত বই ‘যথাশব্দ’ ছাড়াও আরও একটি গ্রন্থ রয়েছে। গতবার একটু তাড়াহুড়ো করেই বইমেলা আয়োজিত হয়েছিল এ উদ্যানে। তাই গঠনমূলক সমালোচনার পাশাপাশি কিছু পরামর্শমূলক পর্যালোচনা লিখেছিলাম। এবার একঝলক দেখেই মেলাটিকে ভাল লেগে গেল। বিশাল এক ময়দান। একটু জিরিয়ে নেয়ার জন্য ক্রেতা-পাঠকদের জন্য বেশকিছু বেঞ্চ তৈরি করা হয়েছে বাঁশের। টয়লেটের সুবিধাও যুক্ত হয়েছে। ভাবছিলাম চা-কফি খাওয়ার জায়গা কোথায়? এটুকু পড়ে পাঠক ভাবতে পারেন বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ কি এবার বইমেলার অংশ হয়নি? না, অবশ্যই হয়েছে। সেখানে স্থান পেয়েছে প্রধানত শিশু-কিশোরদের গ্রন্থ প্রকাশনা সংস্থা এবং লিটল ম্যাগাজিন। মিডিয়া, আইটি এবং সরকারী প্রতিষ্ঠান তো রয়েছেই যথারীতি। সবচেয়ে বড় কথা নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচনের জন্য নজরুল মঞ্চ স্বমহিমায় উপস্থিত। প্রথম সন্ধ্যাতেই লিটল ম্যাগাজিন চত্বরের গোলাকার উন্মুক্ত স্টল প্রাঙ্গণ আড্ডাবাজদের ভিড়ে দারুণ প্রাণবন্ত। এগারো মাস পর আবার সবাই একসঙ্গে এক প্রাঙ্গণে মজা করার প্রতীক্ষায় নবীন-তরুণ কর্মীরা। প্রথম দিনই দলবদ্ধভাবে ছবি তোলার হিড়িক পড়ে গেল। ভাষার মাসের পয়লা দিন বইমেলায় গেলে তার একেবারে কাছেই জমজমাট জাতীয় কবিতা উৎসবে কে না যাবেন! দেখতে দেখতে ২৯ বছর হয়ে গেল। আহা আমাদেরও বয়স বাড়ল প্রায় তিন দশক। তবু চলচ্চিত্রের মতো প্রথম কবিতা উৎসবটির ছবি একের পর এক মানসপটে ভেসে উঠতে থাকল সন্ধ্যাবেলা উৎসবমণ্ডপে দাঁড়িয়ে। সন্ধ্যা ছয়টার দিকেও আসনগুলোর তিন-চতুর্থাংশ শূন্য দেখে হরতালকে দুষছিলাম। ভুল ভাঙল ঘণ্টাখানিকের মধ্যে। প্রায় পূর্ণ হয়ে গেল উৎসব চত্বর। শত শত কবিতাপ্রিয় নারী-পুরুষের আগমনে ঢাবি লাইব্রেরিসংলগ্ন প্রাঙ্গণটি পেল এক নান্দনিক মাত্রা। এবারের উৎসবে দর্শক-শ্রোতাদের সুবিধার কথা বিবেচনা করে কবিতাপাঠের ভিডিও ছবি প্রদর্শনের জন্য বেশ কয়েকটি বড় পর্দা স্থাপন করা হয়েছে। সুফী সঙ্গীত উৎসবে বিচিত্র পরিবেশনা ঢাকায় তিন দিনব্যাপী সুফী সঙ্গীত উৎসবে যোগ দিয়েছিলেন বেশ কয়েকটি দেশের শিল্পীবৃন্দ। তবে খাঁটি সুফী গানের পাশাপাশি বলিউডি ফিল্মি গানসহ বিচিত্র পরিবেশনার জন্য সমালোচিতও হয়েছেন আয়োজকরা। সুফী দর্শন বিষয়ক লেখক-গবেষক সাব্বির হাসান নাসির বললেন, ‘মনে রাখতে হবে সুফীবাদ এসেছে ইসলামের ধারা থেকে। সুফী ফেস্টে যে যার মতো সুফী সেজে বসেছিল। রবীন্দ্রসঙ্গীত উত্তম সঙ্গীত কিন্তু এটাও সুফী গান হিসেবে চালানো শুরু হয়েছে।’ কিছু অনিয়ম সত্ত্বেও উৎসবটি গানপ্রেমীদের জন্য উপভোগ্য ছিল। অন্তত বিচিত্র পাঁচমিশেলি গান শুনতে যাদের ক্লান্তি নেই তাদের জন্য ছিল আনন্দদায়ক। তবে তিউনিসিয়ার দল মেশকেত, মিসরের মাওলাউয়িআহ-এর পরিবেশনায় ঢাকার দর্শকরা খুঁজে পেয়েছেন সত্যিকারের সুফী পরিবেশনার স্বাদ। ত্রয়োদশ শতকের তুরস্কের প্রখ্যাত সুফী সাধক মাওলানা রুমি সুফী সাধনায় নাচের গুরুত্ব দিয়েছিলেন। দরবেশের পোশাকে ঘূর্ণায়মান নাচের সঙ্গে সুফী সঙ্গীত পরিবেশনের যে ধারাটি বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত সেটি অবশ্য পাওয়া গেল একমাত্র মিসরের শিল্পীদের পরিবেশনায়। ১ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ [email protected]
×