ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ধোনিদের চাঙ্গা করতে...

প্রকাশিত: ০৬:০৫, ২ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

ধোনিদের চাঙ্গা করতে...

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে আড়াই মাস আগে অস্ট্রেলিয়ায় পাড়ি জমিয়েছে ভারত। এ সময়ে স্বাগতিকদের কাছে টেস্ট হারের পর কার্লটন মিডি ত্রিদেশীয় ওয়ানডেতেও নাজুক অবস্থা চ্যাম্পিয়নদের। সফরে এখন পর্যন্ত জয়ের মুখ দেখেনি ক্রিকেট-মোড়লরা। বিশ্বকাপ ধরে রাখার মিশনে মহেন্দ্র সিং ধোনিদের বিধ্বস্ত চেহারা দেখে যারপরনাই উদ্বিগ্ন ভারতীয়রা। দ্রুতই পরিস্থিতি থেকে উত্তোরনে বিভিন্ন রকমের পরামর্শ দিয়েছেন দেশটির সাবেক তারকারা। সেগুলোকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নিয়েছেন বোর্ড (বিসিসিআই) কর্তারা। যার অন্যতম, মূল মঞ্চে নামার আগে কিছুদিন বিশ্রাম দিয়ে চনমনে করে তোলার প্রয়াশ, এমনকি স্ত্রী-পরিজনের সঙ্গে সময় কাটাতে ক’দিনের জন্য দেশে ফিরিয়ে আনার পরামর্শও দিয়েছেন সাবেক অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলী! বিসিসিআইর এক শীর্ষ কর্তা টাইমস অব ইন্ডিয়াকে জানিয়েছেন, ‘আমরা বুঝতে পারছি ক্রিকেটাররা খুবই ক্লান্ত হয়ে পড়েছে। এ্যাডিলেডের কাছে একটি অত্যাধুনিক রিসোর্টে তাদের জন্য বিশ্রামের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেখানে গিয়ে তারা তাদের মোবাইল ফোন বন্ধ রাখতে পারবেন। দুনিয়ার সব রকমের চিন্তা থেকে মুক্ত হয়ে নিজেদের সতেজ করে ফিরতে পারবেন।’ সংবাদে প্রকাশ, কেবল বিলাসবহুল ওই রিসোর্টে একান্তে সময় কাটানোই নয়, চাইলে খেলোয়াড়রা পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে দেশেও আসতে পারবেন। ইতোমধ্যে বোর্ড নাকি এমন অনুমতি দিয়েছে। তবে সবাইকে ৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে অনুশীলনে যোগ দিতে হবে। এ্যাডিলেডের ওই অভিজাত বিনোদন রিসোর্টে স্ত্রী-সন্তানের পাশাপাশি প্রেমিকাদের থাকার ব্যাপারেও কোন বাধা নেই। দল সেমিফাইনালে উঠলে আরও একবার এমন সুযোগ কর দেয়ার কথা জানানো হয়েছে। শচীন টেন্ডুলকর, রাহুল দ্রাবিড়, যুবরাজ সিং, গৌতম গাম্ভীর ও বিরেন্দর শেবাগের মতো অভিজ্ঞদের ছাড়াই এবার শিরোপা ধরে রাখার যুদ্ধে নামছে চ্যাম্পিয়নরা। শুরুতে অস্ট্রেলিয়ার কাছে ৪ টেস্টের সিরিজ ২-০তে হারলেও সেখানে আশাপ্রদ পারফর্মেন্স দেখান বিরাট কোহলি, অজিঙ্কা রাহানে, মুরলি বিজয়রা। কিন্তু বিশ্বকাপের সত্যিকারের রিহার্সেল ত্রিদেশীয় ওয়ানডেতে চরম ভরাডুবি হয় তাদের। চার ম্যাচের একটিতেও জয়ের দেখা পায়নি ভারত। উল্টো চ্যাম্পিয়নদের টেক্কা দিয়ে অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে ফাইনাল খেলে তৃতীয় দল ইংল্যান্ড। সব মিলিয়ে শিরোপা ধরে রাখার মিশনে কঠিন পরীক্ষার মুখে ক্রিকেটের মোড়লরা। ক’দিন আগে মহেন্দ্র সিং ধোনি বলেছিলেন, এই মুহূর্তে খেলার বাইরে থাকলে সেটি উপকারে আসতে পারে। প্রশাসনিক ও অর্থনৈতিকভাবে শক্তিধর বোর্ড বিসিসিআই সেই পথেই হাঁটল। ক্রমাগত হারে পরিস্থিতি আসলেই খারাপ। শ্রেষ্ঠত্ব ধরে রাখার লড়াইয়ে নামার আগে ভারতীয়দের চাঙ্গা হওয়া জরুরী। অবশ্য মাত্র দিন চারেকের জন্য দেশে ফিরে আসা নিয়ে বিতর্ক থাকলেও বিশ্রামের বিষয়ে দ্বিমত নেই কারও। অধিনায়ক ধোনি যেমন বলেন, ‘আমাদের এখন পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচের জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে। এই কটা দিন ক্রিকেট থেকে সুইচ অফ করতে পারলে সেটি তরতাজা হয়ে উঠতে সাহায্য করবে। ব্রেকটা কাজেল লাগানো উচিত।’ কলকাতার দাদাবাবু সৌরভের মতে, ‘টিমটার আসলেই বিশ্রাম প্রয়োজন। একটা লম্বা সফর চলছে, বিশ্বকাপের মতো গুরুত্বপূর্ণ টুর্নামেন্টের আগে ক্রিকেটাররা পরি-বারের সঙ্গে একটু সময় কাটাতে পারলে ভালই হয়। ২০০৩ বিশ্বকাপের সময় আমরা নিউজিল্যান্ডে খুব খারাপভাবে হেরেছিলাম। কিন্তু দেশে ফিরে দিন দশেক বিশ্রামের পর দক্ষিণ আফ্রিকায় গিয়েছিলাম।’ আরেক গ্রেট সুনিল গাভাস্কার বলেন, ‘দেশে ফিরলেই ভাল হবে কি না, বলা কঠিন। তবে ব্রেক দরকার। আমি আশাবাদী বিশ্বকাপে ভাল করবে দল। তবে অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডের কন্ডিশনে মূল দায়িত্বটা নিতে হবে ব্যাটসম্যানদেরই।’ ১৯৮৩ বিশ্বকাপ জয়ের নায়ক কপিল দেব অবশ্য ক্ষুব্ধ, তার মতে, ‘দীর্ঘ সফরে ক্লান্তির অযুহাত আমি মানি না। কারণ এখনকার ক্রিকেটারদের বছরে দশ মাসই খেলতে হয়। যদি অস্ট্রেলিয়ায় জিততাম, তাহলে ক্লান্তি নিয়ে কোন প্রশ্নই উঠত না!’ মি. ডিপেন্ডেবল রাহুল দ্রাবিড় যোগ করেন, ‘ভারত দেশে ফিরবে কি না, সেটা ম্যানেজমেন্টের ব্যাপার। কিন্তু আমি বলব এই মুহূর্তে দলের বেশ কিছু জায়গা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। সেগুলোর সমাধান না করলে বিশ্বকাপে ভাল কিছুর আশা করা কঠিন।’ ১৫ ফেব্রয়ারি প্রথম ম্যাচে ভারতের প্রতিপক্ষ চিরশত্রু পাকিস্তান।
×