ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

খালেদা জিয়া দেশের শত্রু ॥ সংসদে অর্থমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৫:১৬, ২ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

খালেদা জিয়া দেশের শত্রু ॥ সংসদে  অর্থমন্ত্রী

সংসদ রিপোর্টার ॥ অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেছেন, বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া দেশের শত্রু। বিএনপি-জামায়াতের হরতাল-অবরোধ কোন দলের বিরুদ্ধে নয়, দেশের বিরুদ্ধে করা হচ্ছে। খালেদা জিয়া পরিকল্পিতভাবে দেশের ক্ষতি করছেন। তাই সরকারকে বলব- কঠিন হস্তে দেশবিরোধী এসব কর্মকা- দমন করতে হবে। ডেপুটি স্পীকার এ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বি মিয়ার সভাপতিত্বে রবিবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে অর্থমন্ত্রী এসব কথা বলেন। জাসদের নাজমুল হক প্রধানের সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, বর্তমানে বিএনপি-জামায়াতের ডাকা অযৌক্তিক হরতাল-অবরোধে প্রতিদিন দেশের অর্থনীতির কি পরিমাণ ক্ষতি হচ্ছে, তার পরিপূর্ণ ডাটা আমাদের হাতে নেই। তবে যে অবস্থা চলছে এর একটি সমীক্ষা চালাতে হবে যে, দেশের কত টাকার ক্ষতি হয়েছে। তবে হরতাল-অবরোধে দেশের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। ইসলামিক ব্যাংকিং ‘ফ্রড’ ॥ ধর্মকে ব্যবহার করে ইসলামী ব্যাংকসহ কিছু ব্যাংকের অনৈতিক কর্মকা- সম্পর্কে সরকারী দলের সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমান মোল্লার সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী জানান, ইসলামী ব্যাংকিং আমার কাছে শুরু থেকে মনে হচ্ছে এটা একটি ‘ফ্রড’ এবং সেভাবেই সব সময় এটাকে বিবেচনা করেছি। তিনি বলেন, দুর্ভাগ্য যে ইসলামী ব্যাংকিং তত্ত্ব সারা দুনিয়াতেই গৃহীত। আইএমএফ পর্যন্ত তাদের অনুমোদন দিয়েছে। সুতরাং এটাকে বন্ধ করার কোন সুযোগ এখানে নেই। এটাকে বন্ধ করার সুযোগ মুসলিম উম্মাহর ওপর। মুসলিম উম্মাহ যখন রেশনালিস্ট (যৌক্তিক) হবে, যখন বুঝতে পারবে ইসলামের নামে একটি জঘন্য প্রথা চালু করা হয়েছে। তিনি বলেন, ইসলামে ‘রিবাহ’ নিষিদ্ধ। রিবাহ এবং বর্তমান সুদ এক জিনিস নয়। রিবাহের মধ্যে কোন ধরনের মানবিক চিন্তা ধারা নেই। কিন্তু সুদ মানবিক চিন্তা ধারার ওপর নির্ভর করে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সুদ হলো ‘কস্ট অব ফান্ড’ এবং ‘কস্ট অব এডমিনিস্ট্রেশন’। কিন্তু রিবাহতে সেটা ছিল না। যারা ধর্ম নিয়ে কথা বলেন তারা সুদ ও রিবাহকে এক করে ফেলেন। এটা একান্তই ভুল। এই ভুলের ওপর ভিত্তি করেই ইসলামী ব্যাংকিং হয়েছে। এখন আমার কিছু করার নেই। অপর সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, কৃষকদের মধ্যে সুদমুক্ত ঋণ দেয়ার কোন পরিকল্পনা সরকারের নেই, তা কোনকালেই সম্ভব হবে না। কেননা আমরা বাজার থেকে অর্থ সংগ্রহ করে ঋণ বিতরণ করি। যার কাছ থেকে আমরা টাকা নেই তাদেরও একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ সুদ আমাদের দিতে হয়। তাই সুদমুক্ত ঋণ দেয়া কোনভাবেই সম্ভব হবে না। তিনি জানান, ব্যাংকিং ব্যবস্থায় ধর্মকে ব্যবহারের মাধ্যমে গ্রাহকের সঙ্গে প্রতারণা করার কোন সুনির্দিষ্ট অভিযোগ এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। চরমপন্থী কোন গোষ্ঠীর ব্যাংকিং কার্যক্রমের বিষয়ে তথ্য পেলে বাংলাদেশ ব্যাংকের ‘বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট কর্তৃক প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়। এ ধরনের অভিযোগের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক হতে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে যথাযথ সহায়তা প্রদান করা হয়। সরকারী দলের মোহাম্মদ সোহরাবের সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী জানান, দেশে তুলনামূলকভাবে বিনিয়োগ অনেক বেড়েছে। গত ৫ বছরে বিনিয়োগ বেড়েছে ২৬ থেকে ২৮ শতাংশ। বাংলাদেশে এর আগে এর চেয়ে বড় কোন বিনিয়োগ হয়নি। বাংলাদেশ এই মুহূর্তে সবচাইতে বিনিয়োগবান্ধব দেশ। বাংলাদেশে এখনকার সময়ের চেয়ে বিনিয়োগবান্ধব অবস্থা অতীতে কখনও ছিল না। তাই প্রতিদিনই দেশে বিনিয়োগ বাড়ছে, কেউ কেউ হয়তো এ বিনিয়োগের সুযোগ পাচ্ছে না। জিয়া পরিবারের কাছে পাওনা ২৬২ কোটি টাকা ॥ সরকার দলীয় সংসদ সদস্য বেগম ফজিলাতুন নেসা বাপ্পির প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী জানান, রাষ্ট্রায়ত্ত জনতা ও সোনালী ব্যাংক হতে তারেক রহমান, গিয়াস উদ্দিন মামুন এবং সাঈদ ইস্কান্দার গং-এর গ্রহণ করা ঋণের পরিমাণ ২৬২ কোটি ১৭ লাখ ৫৭ হাজার টাকা। দিদারুল আলমের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, বর্তমানে (২১ জানুয়ারির) হিসাব অনুযায়ী বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের পরিমাণ ২১ হাজার ৮৭৪ দশমিক ৬৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এযাবতকালে (৭ জানুয়ারি) বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভের সর্বোচ্চ পরিমাণ ছিল ২২ হাজার ৪৬৪ দশমিক ৭৭ মিলিয়ন ডলার।
×