ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বাংলাদেশই এশিয়ার ভবিষ্যত

প্রকাশিত: ০৪:১৯, ২ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

বাংলাদেশই এশিয়ার ভবিষ্যত

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ আকর্ষণীয় এবং অপার সম্ভাবনার দেশ। বাংলাদেশই এশিয়ার ভবিষ্যত। সম্প্রতি দ্য হেগে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস ও নেদারল্যান্ডের নিয়েনরোড বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ আয়োজনে বাংলাদেশ হাউসে অনুষ্ঠিত এক সেমিনারে বক্তারা এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন। সেমিনারে প্রায় ৫০ জন ডাচ ব্যবসায়ী, উদ্যোক্তা ও বিনিয়োগকারী অংশ নেন। ‘বাংলাদেশ : অপর্চুনিটিজ এ্যান্ড বেস্ট প্র্যাকটিসেস’ শীর্ষক এ সেমিনারে নিয়েনরোড বিশ্ববিদ্যালয়ের এ্যাসোসিয়েট ডিন ড. ডিসাইরি ফন খর্প স্বাগত বক্তব্যে বাংলাদেশকে ‘এশিয়ার ভবিষ্যত’ বলে উল্লেখ করেন। নেদারল্যান্ডসে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শেখ মুহম্মদ বেলাল দেশে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা প্রসঙ্গে ধৈর্য ধারণের আহ্বান জানিয়ে বলেন, বর্তমান সরকারের বলিষ্ঠ পদক্ষেপে শীঘ্রই এ পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠবে। শেখ বেলাল ইউরোপীয় ইউনিয়নের রেজ্যুলেশনের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। তিনি অস্থিরতার মূল কারণ চিহ্নিত করার পাশাপাশি বিএনপিকে জামায়াত এবং হেফাজত-ই-ইসলাম থেকে সরে আসার আহ্বান জানান। রেজ্যুলেশনের অনুলিপি উপস্থিত অতিথিদের মধ্যে বিতরণ করা হয়। সেমিনারে প্যানেল আলোচনা পর্যায়ে আইটি প্রতিষ্ঠান বাজেটভিউ-এর প্রতিষ্ঠাতা পিটার ফন বার্জেন এবং মারুবোশি ইউরোপের কর্মকর্তা ভিনসেন্ট আরিজা বাংলাদেশে তাদের ব্যবসার অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। নিয়েনরোড বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দ্রে নাইহফের সঞ্চালনায় প্রাণবন্ত প্যানেল আলোচনায় উপস্থিত ডাচ বিনিয়োগকারীরা সবাই তাদের অভিজ্ঞতার আলোকে বাংলাদেশে বিনিয়োগের ব্যাপারে সন্তোষ প্রকাশ করেন। বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশের অপার সম্ভাবনা এবং বিরাট বাজারের বিষয়টি বিশেষভাবে উল্লেখ করেন। আলোচনায় পিটার বার্জেন বাংলাদেশের জনগণের প্রতিশ্রুতি পালনের প্রশংসা করেন। অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশে স্বাচ্ছন্দ্যে কাজ করতে পারার বিষয়টিও উল্লেখ করেন তিনি। ভিনসেন্ট আরিজা বাংলাদেশের সম্ভাবনা তুলে ধরে বলেন, আমার প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে দীর্ঘমেয়াদে ব্যবসায়িক কার্যক্রম চালিয়ে যেতে আগ্রহী। বাংলাদেশে চলমান অবরোধ-হরতাল প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, রাজনৈতিক অস্থিরতা সত্ত্বেও বাংলাদেশ থেকে চালান নিতে কখনও সমস্যা হয়নি। সেমিনারে অংশগ্রহণকারীরা মনে করেন ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার প্রবেশদ্বার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছে। পাশাপাশি প্রতিবেশী আসিয়ান দেশগুলোর মুক্তবাজার ব্যবস্থাও বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগে উদ্বুদ্ধ করবে। সেমিনারে নেদারল্যান্ডস সরকারের এন্টারপ্রাইজ এজেন্সি আরভিও-এর প্রতিনিধি রেনে বিরেপুট নেদারল্যান্ডসের বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের বাংলাদেশে ব্যবসা সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে ডাচ প্রণোদনার ওপর একটি উপস্থাপনা করেন। তিনি জানান, বাংলাদেশসহ পৃথিবীর ৬৬টি দেশে ডাচ ব্যবসা সম্প্রসারণের জন্য ৭৫০ মিলিয়ন ইউরোর প্রণোদনা তহবিল রয়েছে। যেখান থেকে ডাচ ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশে ব্যবসার জন্য স্বল্প সুদে প্রায় ১০-১৫ মিলিয়ন ইউরো পর্যন্ত ঋণ পেতে পারেন। সেমিনারে উপস্থিত সবাই বাংলাদেশে আরও অধিক বিনিয়োগ বা ব্যবসা সম্প্রসারণের উচ্চাশা ব্যক্ত করেন। সেমিনারে তথ্যপ্রযুক্তি, লজিস্টিক, আবর্জনা ব্যবস্থাপনা, পানি ব্যবস্থাপনা, পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ছাড়াও ডাচ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, সরকারের আমদানি প্রণোদনা প্রতিষ্ঠান সিবিআই, ব্যবসায়িক পরামর্শদানকারী প্রতিষ্ঠান আরভিও, পিইউএম এবং বাংলাদেশ নেক্সট ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।
×