ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

আইএসের ভিডিও প্রচার, জাপানের প্রতি হুঁশিয়ারি

দ্বিতীয় জাপানী জিম্মির শিরচ্ছেদ

প্রকাশিত: ০৩:৩৩, ২ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

দ্বিতীয় জাপানী জিম্মির শিরচ্ছেদ

ইসলামিক স্টেট (আইএস) জাপানী সাংবাদিক কেনজি গেতোরের শিরচ্ছেদ করার দৃশ্য সংম্বলিত একটি ভিডিও প্রচার করেছে। ভিডিওটিতে জাপান এখন থেকে আইএস জঙ্গীদের হামলার লক্ষ্য স্থল বলেও সর্তক করে দেয়া হয়েছে। আরেক জাপানী হারুনা ইয়াকাতার শিরচ্ছেদ করার খবর প্রকাশের এক সপ্তাহেরও কম সময় পর ওই ভিডিওটি প্রচার করা হলো। গেতো একজন সুপরিচিত ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক ও ফিল্ম নির্মাতা। তিনি ইয়াকাওয়ার মুক্তি অর্জনের চেষ্টায় অক্টোবরে সিরিয়া গিয়েছিলেন বলে জানা যায়। জাপানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্স ওই হত্যাক-ের নিন্দা করেছে। খবর বিবিসি ও গার্ডিয়ান অনলাইনের। “জাপান সরকারের প্রতি এক বার্তা” শীর্ষক ওই ভিডিওতে এক জঙ্গীকে দেখানো হয়। সে দেখতে আইএসের অন্যান্য শিরচ্ছেদ কাজে অংশ নিয়েছিল এমন ব্যক্তির মতোই এবং তার কথাবার্তা ও ব্রিটিশ উচ্চারণে কথা বলতে অভ্যস্ত সেই ব্যক্তির মতো। লোকটিকে গেতোর শিরচ্ছেদ করার আগে তাঁর পিছনে দাঁড়াতে দেখা যায়। সে তার হাতে একটি ছুরি এবং মুখ ঢাকা অবস্থায় মাথা থেকে পা পর্যন্ত কালো পোশাক পরা ছিল। গেতো কমলা রংয়ের প্রিজন জাম্পস্যুট পরে হাঁটু গেড়ে বসেছিলেন। তিনি ভিডিওতে কিছু বলেননি। এটি প্রায় মিনিট স্থায়ী হয়। সেখানে জর্দানী পাইলট মুয়াথ আল কাসাবেই নিয়ে কোন কথা বলা হয়নি। ইসলামী বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে বোমা হামলা চালানোর সময় ডিসেম্বরে উত্তর-পূর্ব সিরিয়ায় তার বিমানটি বিধস্ত হলে তিনি আইএসের হাতে বন্দী হন। জাপান আইএসের হাতে গেতোর দৃশ্যত শিরñেদ হওয়ার ঘটনার নিন্দা করেছে। দেশটি গেতোকে মুক্ত করার জন্য কয়েক দিন ধরেই চেষ্টা করে। রবিবার ভোরে ভিডিওটি অনলাইনে প্রচারিত হওয়ার পরপরই প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে বলেন, জাপান সন্ত্রাসবাদের কাছে নতি স্বীকার করবে না, উপরন্তু গেতোর ঘাতকদের বিচারে সোপর্দ করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে কাজ করবে। চীফ কেবিনেট সেক্রটারি ইয়োশিহিদে সুগা গেতোর দৃশ্যত হত্যাকা-কে ‘ঘৃণ্য’ বলে বর্ণনা করেন। সুগা জানান, কর্মকর্তারা ভিডিওটি সঠিক ছিল কিনা, তা যাচাইয়ের চেষ্টা করছেন। তিনি জানান, কেবিনট মন্ত্রীরা সরকারের ভবিষ্যৎ পদক্ষেপ নিয়ে বৈঠকে মিলিত হবেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও গেতোর দৃশ্যও শিরচ্ছেদের নিন্দা করেছে। মিত্র ও অংশীদারদের ব্যাপক কোয়ালিশনের পাশে থেকে যুক্তরাষ্ট্র আইএসকে দুর্বল ও শেষ পর্যন্ত ধ্বংস করতে চূড়ান্ত ব্যবস্থা নিতে থাকবে। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন ওই হত্যাকা-কে ‘ঘৃণ্য ও মর্মস্পর্শী’ বলে বর্ণনা করেন। তিনি আরও বলেন, এ দুঃসময়ে ব্রিটেন জাপানের পাশে রয়েছে। যত সময়ই লাগুক না কেন, আমরা এসব ঘাতককে খুঁজে বের করে বিচারে দাঁড় করাতে সম্ভব সবকিছুই করব। আইএস ইরাকী সন্ত্রাসী সাজিদা আল-রিশাবির বিনিময়ে গেতোকে ছেড়ে দেয়ার প্রস্তাব করেছিল। ২০০৫ সালে জর্দানে আত্মঘাতী বোমা হামলা চালানোর ঘটনায় জড়িত থাকার দায়ে রিশাবিকে মৃত্যুদ- দেয়া হয়। এ দ- কার্যকর হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে। রিশাবির দেহে বেঁধে রাখা বোমাটি বিস্ফোরিত হতে ব্যর্থ হয়েছিল এ সব হামলায় ৬০ ব্যক্তি নিহত হয়। ইতোপূর্বে এক অডিও বার্তায় বলা হয়, জর্দান রিশাবিকে ছেড়ে না দিলে কাসাসবেহকে হত্যা করা হবে। আইএসের সর্বশেষ ভিডিওতে ব্রিটিশ উচ্চারণে কথা বলে থাকে এমন এক জিহাদী আবের প্রতি ভয়ঙ্কর হুঁশিয়ারি দেয়। তাদের উদ্দেশে জঙ্গীটি বলে, এক অজেয় যুদ্ধে যোগ দিতে আপনার অপরিণামদর্শী সিদ্ধান্তের কারণে এ ছুরি কেবল কেনজিকেই জবাই করবে না; যেখানেই আপনার লোকজনকে পাওয়া যাবে সেখানে তাদের হত্যা করবে। কাজেই জাপানের দুঃস্বপ্ন শুরু হোক।
×