ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সাপ্তাহিক বাজার পর্যালোচনা

বড় বিনিয়োগকারীরা নিরাপদ দূরত্বে

প্রকাশিত: ০৫:৪৬, ১ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

বড় বিনিয়োগকারীরা নিরাপদ দূরত্বে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ দেশের প্রধান শেয়ারবাজারে গত সপ্তাহেও চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতার নেতিবাচক প্রভাব অব্যাহত রয়েছে। তবে এর মাঝেও ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) বস্ত্র, প্রকৌশল ও জ্বালানি খাতের কোম্পানিগুলোর দিকে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ দেখা গেছে। এ সময় মোট লেনদেনের ৪৩ শতাংশই ছিল এ তিনটি খাতের। এছাড়া হিসাব বছর শেষ হওয়ায় গত সপ্তাহে লভ্যাংশ পাওয়ার আশায় ব্যাংকিং খাতেও বিনিয়োগকারীদের ঝোঁক বেড়েছে। তবে মাসের পুরোটাই প্রাতিষ্ঠানিক ও বড় বিনিয়োগকারীদের নিরাপদ দূরত্বে থাকা বজায় ছিল। বাজার বিশ্লেষণ দেখা গেছে, এই বছরের শুরুর প্রথম তিন কার্যদিবস সূচকের বড় ধরনের উত্থান দেখা গিয়েছিল। কিন্তু অবরোধের মতো হিংসাত্মক কর্মসূচীর কারণে আস্তে আস্তে সূচকের সঙ্গে লেনদেন কমতে থাকে। এরই অংশ হিসেবে গেল সপ্তাহে ডিএসইর সার্বিক সূচকটি (ডিএসইএক্স) প্রায় ৭৪ পয়েন্ট কমেছে। এ সময় আগের সপ্তাহের চেয়ে লেনদেন কমেছে ১৬ শতাংশ। সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ৩০৪ পয়েন্ট। পর্যালোচনায় দেখা গেছে, সপ্তাহখানেক আগে নতুন কোম্পানি সিঅ্যান্ডএ টেক্সটাইলসের লেনদেন শুরু হওয়ার কারণে বস্ত্র খাতের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বেড়েছে। গেল সপ্তাহে ডিএসইর মোট লেনদেনের ১৮ শতাংশই ছিল এই খাতের। গত পাঁচ কার্যদিবসে এ খাতের কোম্পানিগুলোর মোট ১৯২ কোটি ২৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। তবে খাতটির বেশিরভাগেরই দর কমেছে। দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল আরেক খাত ছিল বিদ্যুত-জ্বালানি। এ খাতে মোট ১৪৪ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয় গত সপ্তাহে। এছাড়া প্রকৌশল খাতে লেনদেন হয় ১১৪ কোটি ও ব্যাংকিং খাতে ১০৫ কোটি টাকা। ডিএসইতে গেল সপ্তাহে ৩১৬টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মোট ৩০ কোটি ৩৪ লাখ ২০ হাজার ১৮২টি সিকিউরিটিজের লেনদেন হয়। এসবের বাজারদর ছিল ১ হাজার ৮৫ কোটি ২২ লাখ ৫৩ হাজার টাকা, যা আগের সপ্তাহের চেয়ে ১৫ দশমিক ৭৯ শতাংশ কম। লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে দর বেড়েছে ৬৪টির, কমেছে ২৩৬টির ও অপরিবর্তিত ছিল ১৬টির। ডিএসইএক্স সূচক আগের সপ্তাহের চেয়ে ৭৩ দশমিক ৯১ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৭২৪ দশমিক শূন্য ৫ পয়েন্টে। অন্যদিকে নির্বাচিত কোম্পানিগুলোর সূচক ডিএসই-৩০ আগের সপ্তাহের চেয়ে ৩১ দশমিক শূন্য ৫ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৭৪৭ দশমিক ৭৬ পয়েন্টে। অন্য শেয়ারবাজার সিএসইতে গেল সপ্তাহে ২৬৬টি কোম্পানির মোট ৩ কোটি ৫৫ লাখ ৪৭ হাজার ৬৮৫টি সিকিউরিটিজ কেনাবেচা হয়। এসব সিকিউরিটিজের বাজারদর ছিল ১০২ কোটি ৪২ লাখ ২৩ হাজার টাকা। সেখানে লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৫২টির, কমেছে ১৯৫টির ও অপরিবর্তিত ছিল ১৯টির। সিএসইর সার্বিক সূচক আগের সপ্তাহের চেয়ে ৩০২ দশমিক ৯২ পয়েন্টে কমে ১৪৪২৭ দশমিক ১১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। বাছাই সূচক সিএসই-৩০ আগের সপ্তাহের চেয়ে ১৯৫ দশমিক ৬৬ পয়েন্ট কমে ১১৭৪৩ দশমিক ২৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। ডিএসইতে সাপ্তাহিক লেনদেনের সেরা কোম্পানিগুলো হলো : সি অ্যান্ড এ টেক্সটাইল, গ্রামীণ ফোন, লাফার্জ সুরমা সিমেন্ট, অলটেক্স লিমিটেড, সিভিও পেট্রো কেমিক্যাল, জিএসপি ফাইন্যান্স লিমিটেড, সামিট এলায়েন্স পোর্ট লিমিটেড, ডেসকো, ন্যাশনাল ফিড মিলস লিমিটেড ও ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেড। দর বৃদ্ধির সেরা কোম্পানিগুলো হলো : ফনিক্স ফাইন্যান্স ১ম মিউচুয়াল ফান্ড, ফারইস্ট ইসলামী লাইফ, মুন্নু স্টাফলারস, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো লিমিটেড, কোহিনূর কেমিক্যাল, ফারইস্ট নিটিং অ্যান্ড ডাইং লিমিটেড, ন্যাশনাল পলিমার, এআইবিএল১ম ইসলামিক মিউচুয়াল ফান্ড ও প্রাইম ব্যাংক। দর হারানোর সেরা কোম্পানিগুলো হলো : ন্যাশনাল ফিড মিলস লিমিটেড, শ্যামপুর সুগার মিলস লিমিটেড, হামিদ ফেব্রিক্স, জিএসপি ফাইন্যান্স, উসমানিয়া গ্লাস, আলহাজ টেক্সটাইল, ন্যাশনাল টিডবস, মডার্ন ডাইং, খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ ও মাকেন্টাইল ব্যাংক।
×