ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বিদ্যুত সংযোগ বিচ্ছিন্নের ঘটনা নজিরবিহীন ॥ খালেদা

প্রকাশিত: ০৫:২৩, ১ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

বিদ্যুত সংযোগ বিচ্ছিন্নের ঘটনা নজিরবিহীন ॥ খালেদা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ গুলশান কার্যালয়ের বিদ্যুত, ইন্টারনেট, ডিশ ও টেলিফোন সংযোগ বিচ্ছিন্ন করাসহ নাগরিক সুবিধা বন্ধ করে দেয়ার ঘটনা নজিরবিহীন বলে জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া। শনিবার সন্ধ্যায় গুলশান কার্যালয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে তার প্রেস সচিব মারুফ কামাল সোহেল তা জানান। তিনি আরও জানান, সরকার তার সঙ্গে যে নিকৃষ্ট আচরণ করেছে তা শিষ্টাচারবহির্ভূত এবং সভ্য সমাজে কল্পনাও করা যায় না বলে মন্তব্য করেছেন খালেদা জিয়া। এদিকে শনিবার সন্ধ্যায় গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, দেশে গণতন্ত্রের নামে বর্তমান সরকার মার্শাল ডেমোক্রেসি প্রবর্তন করেছে। মারুফ কামাল বলেন, খালেদা জিয়া বলেছেন, এভাবে বিনা নোটিসে বিদ্যুত-ইন্টারনেট-ডিশ সংযোগ কেটে দেয়া মানবাধিকার ও নাগরিক অধিকারের পরিপন্থী। এ নিষ্ঠুর আচরণে আমি স্তম্ভিত। ২০১৩ সালের শেষের দিকে বাসার সামনে একাধিক ট্রাক দিয়ে আমাকে অবরুদ্ধ করে রেখেছিল। এবার আমার অফিস ঘিরে নিকৃষ্ট ঘটনার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে এ সরকার। বিবৃতিতে সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, গভীর রাতে খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক কার্যালয়কে জনসভায় ঘোষণা দিয়ে বিদ্যুত বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়েছে। ইন্টারনেট, ব্রডব্যান্ড ও কেবল লাইনসহ সকল বৈদ্যুতিক যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। সরকারী দল ঘোষণা দিয়েছে পানি, গ্যাস ও খাবার সরবরাহ বন্ধ করে দেবে। সভ্য দুনিয়ার ইতিহাসে এরকম ঘৃণিত ও জঘন্য নজির কোথাও পাওয়া যাবে না। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। অবিলম্বে বিছিন্ন বিদ্যুৎসহ সকল যোগাযোগমাধ্যম পুনর্¯’াপনের ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট সকল দফতরকে আহ্বান জানাচ্ছি। অন্যথায় উদ্ভূত যে কোনো পরিস্থিতির জন্য সরকার দায়ী থাকবে এবং এর পরিণতি কখনই শুভ হবে না। আমরা দেশের এবং বিশ্বের সকল মানবাধিকার সংস্থা, সংগঠন ও মানবাধিকারকর্মীদের কাছে আহ্বান জানাই-আপনারা আসুন, দেখুন বাংলাদেশে গণতন্ত্রের নামে কত ঘৃণ্য জংলীতন্ত্র কার্যকর হয়েছে ভোটারবিহীন এই সরকারের বদৌলতে। জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের কাছে আবেদন জানাই- আপনারা বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি অনুধাবন করে যথাযথ কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করুন। সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, সমগ্র দেশবাসী অত্যন্ত পরিতাপের সঙ্গে লক্ষ্য করছে যে, ক্ষমতালিপ্সু সরকারের প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেত্রী শেখ হাসিনা গদি রক্ষার জন্য এবং অবৈধ ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করার মানসে গণতন্ত্রের কবর রচনা করেছেন। বর্তমানে দেশে একদলীয় সরকার ব্যবস্থা কায়েমের পর এক ব্যক্তির ইচ্ছাকেই আইনের উৎসে পরিণত করা হয়েছে। জনগণের গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক সকল অধিকার ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে। সভা-সমাবেশ ও কথা বলার অধিকার বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। সালাউদ্দিন বলেন, দেশের সর্ববৃহত গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। অবরুদ্ধ করা হয়েছে দেশের তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপার্সন ও ২০ দলীয় জোট নেতা খালেদা জিয়াকে। বস্তুত সারাদেশের জনগণই আজ অবরুদ্ধ এবং বাংলাদেশ নামের এই জনপদ বিশাল কারাগারে পরিণত হয়েছে।
×