ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

আশপাশের দোকানপাট বন্ধ হয়ে যাচ্ছে ॥ রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার

ষাটগম্বুজ ও সুন্দরবনে পর্যটক নেই

প্রকাশিত: ০৫:৫০, ৩১ জানুয়ারি ২০১৫

ষাটগম্বুজ ও সুন্দরবনে  পর্যটক নেই

স্টাফ রিপোর্টার, বাগেরহাট ॥ জামায়াত-বিএনপি জোটের ডাকা লাগাতার অবরোধ ও হরতালের কারণে বিশ্ব ঐতিহ্য ষাটগম্বুজ ও সুন্দরবনসহ বাগেরহাটের টুরিস্ট স্পটগুলোতে পর্যটক শূন্য হয়ে পড়েছে। প্রতি বছর এ সময়ে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রান্তসহ নানাবয়সী পর্যটক ও দর্শণার্থীরা এসব দর্শনীয় স্থানে ভিড় জমিয়ে থাকেন। কিন্তু এবার গত ২০-২৫ দিন ধরে সেসব স্পটগুলোতে দর্শণার্থী শূন্য হয়ে পড়ে আছে। দর্শণার্থী স্পটগুলোর আশপাশ এলাকার দোকানপাটগুলো প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। পর্যটন স্পটগুলোর কর্তৃপক্ষরা এখন হতাশার মধ্যে পড়েছেন। এদিকে বিশ্ব ঐহিত্য ষাটগম্বুজ ও সুন্দরবন পর্যটন এলাকার দর্শণার্থী ও পর্যটক শূন্য হয়ে পড়ায় সরকার রাজস্ব হারাতে বসেছে। স্পটগুলোতে ঘুরে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এ চিত্র পাওয়া গেছে। বাগেরহাটের ওর্য়াল্ড হ্যারিটেজ সাইড ষাটগম্বুজ মসজিদ দেখতে ও পিকনিক স্পট পৌর শিশু পার্ক, সুন্দরবন রিসোর্ট এলাকায় এ সময়ে প্রতিদিন দেশ-বিদেশের হাজার হাজার দর্শণার্থী ও পর্যটক ভিড় করে থাকেন। কিন্তু রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে প্রাণের ভয়ে অনেকে এখন এখানে আসছেন না। ফলে এসব দর্শনীয় স্থানের মালিক ও দোকানপাট ব্যবসায়ীরা দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। এ অবস্থা চলতে থাকলে চলতি মৌসুমে টুরিস্ট স্পটগুলোর মালিকদের ব্যাপকভাবে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বেন বলে তারা জানান। তাই তারা দেশের এ রাজনৈতিক সংকট নিরসন করে আবার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে সরকারসহ সকল রাজনৈতিক দলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। বিশ^ ঐতিহ্য ষাটগুম্বুজ মসজিদে দেশী বিদেশী পর্যটকের আগমন কমে যাওয়ায় ও প্রতœতাত্ত্বিক বিভাগ প্রতিদিন হাজার হাজার টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে। ফলে চলতি অর্থবছরে তাদের কাক্সিক্ষত লক্ষমাত্রা অর্জিত হবে না বলে তারা আশঙ্কা করছেন। ষাটগুম্বুজ মসজিদ সংলগ্ন দোকান মালিক নাজমুল হাসান বলেন, গত বছর এ সময়ে প্রতিদিন আট থেকে দশ হাজার টাকা বেচাকেনা হতো। কিন্তু এ বছর দোকান প্রতি এক থেকে দুইশ’ টাকার বেশি বেচাকেনা হচ্ছে না। এতে সংসার চালানো দুরূহ হয়ে পড়েছে। প্রতœতাত্ত্বিক বিভাগের কাউন্টারম্যান এনামুল কবির খান বলেন, হরতাল অবরোধের কারণে টিকিট বেচাকেনা কমে গেছে। প্রতিদিন পঁচিশ হাজার টাকার স্থলে নেমে এসেছে তিন হাজার টাকায়। পৌর শিশুপার্ক মালিক আকমল উদ্দিন সাখী বলেন, ‘হরতাল অবরোধের কারণে দর্শনার্থীদের সমাগম ব্যাপকহারে হ্রাস পেয়েছে। বর্তমানে কর্মচারীদের বেতনের টাকার টিকিট বিক্রি হচ্ছে না। তিনি এ অবস্থার অবসান চেয়ে বলেন, এ অবস্থা চলতে থাকলে ব্যবসা গুটিয়ে দিতে হবে। সুন্দরবন রির্সোট ম্যানেজার ওয়াশিংটন বলেন, হরতাল অবরোধের কারণে দর্শনার্থীদের সমাগম নেই। আমরাও কিভাবে চলবো ও কর্মচারীদের বেতন কিভাবে দিব হতাশার মধ্যে আছি। প্রতœতাত্ত্বিক বিভাগের ষাটগম্বুজ কাস্টোডিয়ান মোঃ গোলাম ফেরদৌস বলেন, ‘গত বছর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৭ লাখ টাকা বেশি রাজস্ব আয় হয়েছিল। এবছর ৩০ লক্ষ টাকা লক্ষমাত্রার চেয়ে ১০-১২ লাখ টাকা রাজস্ব আদায় হতো। কিন্তু লাগাতার অবরোধ ও হরতালের কারণে এবছর লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। অনুরূপ চিত্র ফুটে উঠেছে বিশ্বঐতিহ্য সুন্দরবনেও।
×