ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সড়ক দুর্ঘটনায় মা-ছেলে ব্যবসায়ীসহ ৯ জন নিহত

প্রকাশিত: ০৫:৩৫, ৩১ জানুয়ারি ২০১৫

সড়ক দুর্ঘটনায় মা-ছেলে ব্যবসায়ীসহ ৯ জন নিহত

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ দেশের ভিন্ন স্থানে শুক্রবার সড়ক দুর্ঘটনায় মা-ছেলে ও শিশুসহ ৯ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ঝিনাইদহে ৪ জন, মুন্সীগঞ্জে ৪ জন ও সৈয়দপুরে এক শিশু রয়েছে। এসব ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ৬ জন। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। খবর স্টাফ রিপোর্টারদের। ঝিনাইদহের শৈলকুপায় ট্রাক ও পানবোঝাই টেম্পোর মুখোমুখি সংঘর্ষে ৪ জন নিহত ও ৪ জন আহত হয়েছেন। শুক্রবার ভোরে ঝিনাইদহ-কুষ্টিয়া সড়কের শৈলকুপা উপজেলার দুধসর আশ্রয়ণের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেনÑ শৈলকুপা উপজেলার চরপাড়া গ্রামের ইউসুফ আলীর ছেলে আমিরুল ইসলাম ওরফে অমল (৩০), কানাপুকুরিয়া গ্রামের আব্দুল গফুর বিশ্বাসের ছেলে শফি উদ্দীন (৪৫), একই গ্রামের রওশন আলীর ছেলে মজিবর রহমান ম-ল (৪০) ও আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে রেজাউল ইসলাম (৩০)। আহতদের মধ্যে মিলন হোসেন (৩৮), আলমগীর হোসেন (৪০), নূরুল ইসলাম (৩৫) ও মোমিন হোসেনকে (৩২) প্রথমে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে তাদের অবস্থার অবনতি ঘটলে সকালেই মোমিন বাদে ৩ জনকে ফরিদপুর মেডিক্যালে রেফার্ড করা হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শুক্রবার ভোরে শৈলকুপা উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের চরপাড়া গ্রাম থেকে ৮ পান ব্যবসায়ী একটি টেম্পো ভাড়া করে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বৈডাঙ্গা পানের হাটে যাচ্ছিলেন। টেম্পোটি দুধসর এলাকায় পৌঁছালে বিপরীতমুখী একটি ট্রাকের সঙ্গে মুখোমখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই ৪ পান ব্যবসায়ী নিহত হন। আহত হন আরও ৪ জন। শৈলকুপা থানার ওসি এমএ হাসেম খান জানান, হতাহতরা সবাই পান ব্যবসায়ী। তারা টেম্পোযোগে হাটে পান নিয়ে যাওয়ার পথে ট্রাকের সঙ্গে সংঘর্ষ। তবে নিহতের সংখ্যা বাড়তে পারে। মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঝিনাইদহ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। দুর্ঘটনার পর ট্রাক নিয়ে চালক পালিয়ে গেছে। ট্রাকটি আটকের জন্য পুলিশ চেষ্টা চালাচ্ছে। মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার জামালদি বাসস্ট্যান্ডে সামনের চাকা খুলে ট্রাক উল্টে মা ও পুত্রসহ চার জন নিহত ও দু’জন আহত হয়েছে। আহতদের স্থানীয় ও ঢাকার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ভুট্টা ভর্তি ঢাকা থেকে কুমিল্লাগামী ট্রাকটি শুক্রবার দুপুরে উল্টে গিয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে দাঁড়িয়ে থাকা দুটি সিএনজি স্কুটার ও একটি রিক্সার ওপর পরে। নিহতরা হচ্ছে- সিএনজি আরোহী কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলা নদিয়াবাদ গ্রামের অঞ্চলী রানী সাহা (৫২) ও তাঁর পঞ্চম শ্রেণীতে পড়ুয়া ছেলে প্রত্যয় সাহা (১২), সিএনজি চালক স্থানীয় বালুয়াকান্দি গ্রামের কালু মিয়া (৩৮) ও অটোরিক্সা চালক চুয়াডাঙ্গার মন্টু মিয়া (৪০)। ট্রাকের চালক পালিয়ে গেছে। তবে ট্রাকটি আটক করা হয়েছে। কিছু বস্তাবন্দী এবং কিছু খোলা অবস্থায় ট্রাকের ভুট্টাগুলো মহাসড়কের পাশে পড়ে আছে। মুন্সীগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন জানান, দুর্ঘটনাকবলিত যানগুলো রেকার দিয়ে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। কালু মিয়ার লাশ ঘটনাস্থল থেকেই স্বজনরা নিয়ে গেছে। বাকি ৩টি লাশ ভবেরচর পুলিশ ফাঁড়িতে রাখা হয়েছে। এ ব্যাপারে থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। নীলফামারীতে বালু বহনকারী একটি ট্রাক্টরের চাপায় শুভ নামের আট বছরের এক শিশু নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় শিশুটির মা শাবানা বেগম (৩০) আহত হয়েছে। শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নীলফামারীর সৈয়দপুর শহরের মিস্ত্রিপাড়া বটগাছ মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এতে ট্রাক্টরটির চালক, হেলপারসহ তিনজনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছেন এলাকাবাসী। নিহত শুভ সৈয়দপুর শহরের বাঁশবাড়ী মহল্লার নাদিমের ছেলে এবং স্থানীয় একটি আনন্দ স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্র। প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ জানায়, ঘটনার সময় শিশুটি তার মা শাবানা বেগমসহ এক আত্মীয়ের বাড়িতে হেঁটে যাচ্ছিল। এ সময় পেছন থেকে আসা বালুবোঝাই ট্রাক্টর শিশুর মাকে ধাক্কা ও শিশুটিকে চাপা দেয়। এ সময় এলাকাবাসী ট্রাক্টরসহ চালক, হেলপারসহ তিনজনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। পাশাপাশি এলাকাবাসী আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁদের উদ্ধার করে প্রথমে সৈয়দপুর হাসপাতাল ও পরে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে শিশুটির মৃত্যু হয়।
×