ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

রোহিঙ্গা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে গোপন বৈঠক

সহিংস পরিকল্পনায় এগুচ্ছে বিএনপি

প্রকাশিত: ০৪:৪৬, ২৯ জানুয়ারি ২০১৫

সহিংস পরিকল্পনায় এগুচ্ছে বিএনপি

এইচএম এরশাদ, কক্সবাজার থেকে ॥ বিএনপি-জামায়াতীদের সহিংস তা-ব অব্যাহত রাখতে আরাকান বিদ্রোহী সংগঠন আরএসও এবং জামায়াত নেতাদের পরিচালনাধীন কক্সবাজারে কয়েকটি প্রতিষ্ঠান অর্থ যোগান দিচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। মঙ্গলবার রাত ৯টায় রোহিঙ্গা ছালামত জঙ্গীর পরিচালনাধীন লিংকরোড মুহুরিপাড়ার রোহিঙ্গা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে বিএনপি-জামায়াতের কয়েক নেতা এবং আরএসও জঙ্গীর মধ্যে এক গোপন বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে জানা গেছে। ওই বৈঠকে এদেশে বসবাসকারী ধনাঢ্যশালী পুরনো রোহিঙ্গা আরএসও নেতারা সহিংস আন্দোলনে অঢেল অর্থ যোগান দিতে একমত পোষণ করেছে। তবে সরকারবিরোধী আন্দোলনে মোটা অঙ্কের বিদেশী অর্থ ব্যয় করার পেছনে শর্ত জুড়ে দিয়েছে আরএসও ক্যাডাররা। শর্তগুলোর মধ্যে প্রথমত কারাগারে বন্দী ভয়ঙ্কর জঙ্গী ছালামত উল্লাহসহ সকল আরএসও নেতাকে মুক্ত করার ব্যাপারে জোরালোভাবে পদক্ষেপ নিতে হবে। ঐ শর্ত পালনকল্পে বিএনপি-জামায়াতের নেতারা মরিয়া হয়ে উঠেছে। এরই ধারাবাহিকতায় জামায়াত-বিএনপির পক্ষ থেকে আজ বৃহস্পতিবার ঢাকার একটি আদালতে জঙ্গী ছালামতের জামিনের আবেদন করার সম্ভাবনা রয়েছে বলে সূত্রটি আভাস দিয়েছে। মাত্র চার ঘণ্টায় রামুতে ১২টি বৌদ্ধ বিহার ধ্বংসলীলায় পরিণত করে দেয়ার মূল হোতা ভয়ঙ্কর জঙ্গী মৌলভী ছালামত জামিনে মুক্তি পেলে যে কোন মুহূর্তে অপশক্তি মাথাচড়া দিয়ে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছে সচেতন মহল। প্রসঙ্গত, চট্টগ্রামে হোটেল লর্ডস্ইন থেকে জঙ্গীদের নিয়ে গোপন বৈঠককালে পাকিস্তানী নাগরিক আবু সালমান (মোঃ আলম) ও জঙ্গী ছালামত উল্লাহসহ ৫ জনকে গ্রেফতার করে চট্টগ্রামের গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। এদিকে কিছুদিন আগে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরা কক্সবাজারে জামায়াত নেতাদের পরিচালনাধীন কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের ব্যাপারে খোঁজখবর নেয়া শুরু করলেও অজ্ঞাত কারণে মাঝপথে থেমে যায় তৎপরতা। সম্প্রতি কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনেও সহিংস আন্দোলনে কক্সবাজারে আর্থিকভাবে যোগানদাতা চিহ্নিত কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের নাম প্রকাশ করেছিল। জঙ্গী ও জামায়াতীদের ওইসব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কতিপয় ধান্ধাবাজ নেতার সখ্য থাকায় আইন প্রয়োগকারী সংস্থার লোকজন এ কাজে বেশিদূর এগুতে পারেনি বলে জানা গেছে। ঐ দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে প্রতিষ্ঠানগুলো এবং জামায়াত-বিএনপির নেতারা কক্সবাজারে নাশকতা সৃষ্টিকল্পে বর্তমানে রোহিঙ্গা জঙ্গীদের নিয়ে এগুচ্ছে বলে তথ্য মিলেছে। একাধিক সূত্রে প্রকাশ, সারাদেশের মতো হিংসাত্মক ও ধ্বংসাত্মক পরিকল্পনার পূর্বপ্রস্তুতি নিয়ে প্রশিক্ষিত সন্ত্রাসী রোহিঙ্গা জঙ্গীদের সঙ্গে করে পর্যটন শহরে নামতে পরিকল্পনা করছে জামায়াত বিএনপি। এদের সঙ্গে থাকবে তাদের দলীয় প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ক্যাডারদের পাশাপাশি সন্ত্রাসী রোহিঙ্গা, পথশিশু ও দোকান কর্মচারীরা। ওইসব পথশিশু, দোকান কর্মচারী ও রোহিঙ্গাকে আর্থিক প্রলোভনে ফেলে তারা ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে যেতে পারে বলে সূত্রটি জানিয়েছে। এরা অতর্কিতভাবে যানবাহন ভাংচুর, অগ্নিসংযোগসহ বিভিন্ন নাশকতা ঘটাতে পারে। অপরদিকে নাশকতাকারীদের প্রতিরোধকল্পে ইতোমধ্যে জেলায় গঠিত হয়েছে ১৪ দলের সমন্বয়ে সন্ত্রাস ও নাশকতা প্রতিরোধ কমিটি। ওই কমিটির লোকজন জেলার বিভিন্ন উপজেলায় সন্ত্রাস ও নাশকতার বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তুলতে সফর করেছে।
×