ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

মালদ্বীপ ও সিঙ্গাপুরে বালু-মাটি রফতানি

প্রকাশিত: ০৪:৪৩, ২৮ জানুয়ারি ২০১৫

মালদ্বীপ ও সিঙ্গাপুরে বালু-মাটি রফতানি

এম শাহজাহান ॥ বাংলাদেশের বালু-মাটি রফতানি হবে মালদ্বীপ ও সিংগাপুরে। দেশ দুটির আগ্রহের কারণেই এই অপ্রচলিত দ্রব্যটি বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। গত বছরের মাঝামাঝি সময় থেকে বালু-মাটি রফতানির প্রক্রিয়াটি শুরু করা হয়। ইতোমধ্যে দ্রব্যটি রফতানির নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তবে বালু-মাটি রফতানি দেশের জন্য একেবারে নতুন একটি বিষয়। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোসহ (ইপিবি) সংশ্লিষ্ট কারওই এ বিষয়ে কোন পূর্ব অভিজ্ঞতা নেই। ফলে এ ধরনের দ্রব্য রফতানির বিষয়ে ইতোমধ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে একাধিক বৈঠক করা হয়েছে। আগামী আগামীকাল বালু রফতানির বিষয়ে আরেকটি আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক করবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। সেখানে মন্ত্রণালয়ের উর্ধতন কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা উপস্থিত থাকবেন। এদিকে, বালু রফতানি বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (রফতানি) শওকত আলী ওয়ারেছীর নেতৃত্বে একটি কমিটি করা হয়েছে। কমিটি সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে যে প্রতিবেদন দেবে, তার ওপরই নির্ভর করছে রফতানি বিষয়টি। তবে বালু রফতানির বিষয়ে ইতোমধ্যে এই কমিটি নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এছাড়া বালু রফতানির সম্ভাব্যতা, অর্থনৈতিক যৌক্তিকতা ও সার্বিক বিষয়ে সুপারিশ প্রদানের জন্য ইতোপূর্বে একটি কমিটি করা হয়। এই কমিটিতে রয়েছে- ভূমি, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ, পরিবেশ ও বন, নৌ পরিবহন ও পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়, ভূতত্ত্ব জরিপ, ওয়াটার মডেলিং ইনস্টিটিউট, বিআইডব্লিউটিসি ও বিআইডব্লিউটিএর প্রতিনিধি। সম্প্রতি এই কমিটি বালু রফতানির অনুমতি দেয়ার জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ করেছে। তবে নদ-নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ ও নাব্যতা রক্ষায় শুষ্ক মৌসুমের শুরুতে বালু রফতানির নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ড্রেজ সয়েল থেকে পরীক্ষামূলকভাবে ১০ মিলিয়ন টন বালু রফতানি করা হবে। পরিবেশের ওপর কোন নেতিবাচক প্রভাব না পড়লে বছরে রফতানি হবে এক হাজার ৫শ’ মিলিয়ন টন বালু, যার বাজারমূল্য প্রায় ১৫০ কোটি টাকা। এ প্রসঙ্গে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক উর্ধতন কর্মকর্তা জনকণ্ঠকে বলেন, বালু রফতানির বিষয়ে গঠিত কমিটি ইতোমধ্যে তাদের মতামত প্রদান করেছে। মতামতে পরীক্ষামূলকভাবে ১০ মিলিয়ন টন বালু রফতানির সুপারিশ করা হয়। এ কারণে প্রাথমিকভাবে শুষ্ক মৌসুমের শুরুতেই বালু রফতানি করা হবে। তিনি বলেন, নদ-নদীর নাব্যতা রক্ষা এবং পানির স্বাভাবিক প্রবাহ ঠিক রাখতে হলে ডিসেম্বর মাস নাগাদ নদ-নদীর ডেজিং কার্যক্রম শুরু হবে। ড্রেজিংকৃত ওই সব বালু রফতানি করা হবে। প্রতিবছর হিমালয় থেকে যে পরিমাণ বালু নেমে আসে তাতে বছরে অনায়াসে ১২শ’ থেকে দেড় হাজার মিলিয়ন টন বালু রফতানি করা সম্ভব। সূত্রমতে, বালু রফতানির শর্তের মধ্যে রয়েছে- রফতানিযোগ্য বালুর মধ্যে মূল্যবান খনিজ পদার্থ চলে না যায় সে বিষয়টি সব সময় জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয় নিশ্চিত করবে, বালু রফতানির কারণে পরিবেশ বা প্রতিবেশের ওপর কোন ক্ষতিকর প্রভাব না পড়ে সে বিষয়টি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও সংস্থাকে দেখতে হবে, আর বালুর রফতানি মূল্য নির্ধারণ করবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। শর্তের মধ্যে আরও রয়েছে- ঘাসিয়ার খাল, ফাজিলপুর নদী, পদ্মা, মেঘনা, যমুনা, তিস্তা, ধলেশ্বরী, ব্রহ্মপুত্র, গোমতীসহ অন্যান্য নদী, যা পানি উন্নয়ন বোর্ড, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নদী কর্তৃপক্ষ এবং সমুদ্রবন্দর কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ড্রেজিং করার জন্য চিহ্নিত করেছে সেসব এলাকা থেকে বালু উত্তোলন ও রফতানি করা যাবে।
×