ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

টাঙ্গাইলে বঙ্গবন্ধু সেতু ॥ টোল আদায়ে ধস

প্রকাশিত: ০৪:১৬, ২৮ জানুয়ারি ২০১৫

টাঙ্গাইলে বঙ্গবন্ধু সেতু ॥ টোল আদায়ে ধস

ইফতেখারুল অনুপম, টাঙ্গাইল থেকে ॥ বিএনপি-জামায়াতসহ ২০ দলীয় জোটের ঘন ঘন হরতাল ও লাগাতার অবরোধের কারণে বঙ্গবন্ধু সেতুর টোল আদায়ে ধস নেমেছে। দেশের ব্যস্ততম সড়কগুলোর মধ্যে অন্যতম ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে যানবাহনের দেখা মেলাই কষ্টকর। এ সেতু থেকে প্রতিদিন প্রায় ৭০ লাখ টাকার রাজস্ব কম আয় হচ্ছে। অবরোধ, হরতাল ও রাজনৈতিক অস্থিরতায় পরিবহন মহাসড়কে অবাধে চলাচল বন্ধ করে দেয়ার নেতিবাচক প্রভাবে টোল আদায়ে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। বঙ্গবন্ধু সেতুর টোলপ্লাজার হিসাব অনুযায়ী জানা যায়, প্রতিদিন ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে দেশের উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের ২৫ জেলার প্রায় ১৮ থেকে ১৯ হাজার যানবাহন চলাচল করে। কিন্তু বর্তমানে অবরোধের ফলে এই মহাসড়কে চলাচল করা যানবাহনের সংখ্যা এসে দাঁড়িয়েছে মাত্র সাড়ে ৫ হাজারে। আর যে গাড়িগুলো চলছে সেগুলোও চলছে বিজিবির তত্ত্বাবধানে। বঙ্গবন্ধু সেতুর রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচালনায় নিয়োজিত (এমসিসিসি-এসইএল-ইউডিসি জয়েন্ট ভেঞ্চার) কোম্পানির তথ্যমতে, গত ৬ জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত অবরোধ ও হরতালের মধ্যে বঙ্গবন্ধু সেতু দিয়ে বাস, ট্রাক, পিকআপ, মিনিবাস, মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকার ও মোটরসাইকেলসহ অন্যান্য পরিবহন চলাচল করেছে ৬৯ হাজার ১১টি। আর টাকা আদায় হয়েছে প্রায় ৫ কোটি ৩৭ লাখ ৮৪ হাজার। সাধারণত প্রতিদিন এই সেতু দিয়ে অন্তত ১৮-১৯ হাজার পরিবহন চলাচল করে। এর ফলে সরকারের রাজস্ব আদায় হয় প্রায় দেড় কোটি টাকা। বঙ্গবন্ধু সেতু কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, দেশে চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে বঙ্গবন্ধু সেতু দিয়ে সীমিত যানবাহন চলাচল করছে। ফলে সেতুর টোল আদায় প্রায় শূন্যের কোটায় নেমে এসেছে। লাগাতার অবরোধ ও হরতালের কারণে এ সেতু দিয়ে যানবাহন চলাচল কমে এসেছে। রাতে কিছু পণ্যবাহী ট্রাক চলাচল করলেও এর সংখ্যা খুবই কম। সরেজমিন বঙ্গবন্ধু সেতুতে দেখা গেছে, অবরোধের কারণে কিছুসংখ্যক মালবাহী ট্রাক ও ছোট ছোট যানবাহন দিনে চলাচল করতে দেখা গেলেও রাতে এর পরিমাণ বেশি ছিল। তবে কিছু কিছু লোকাল বাস মহাসড়কে দেখা গেলেও কাউন্টারে কোন যাত্রীবাহী বাস দেখা যায়নি। অন্যদিকে বিশ্ব এজতেমার সময় সেতু দিয়ে বিপুলসংখ্যক এজতেমার গাড়ি চলাচল করেছে। এদিকে পরিবহন না পাওয়ায় পশ্চিম পাড় থেকে মানুষ নৌকাযোগে যমুনা নদী পার হচ্ছে। সেতুর উভয় পাড়ের প্রায় দুই কিলোমিটার চর হেঁটে আবার নৌকায় করে নদী পার হয়ে সেতুর পূর্ব রেলস্টেশন, বাসট্যান্ডে আসছে ঢাকায় যাওয়ার উদ্দেশে। এছাড়া ১শ’ থেকে ১শ’ ৫০ টাকা করে মোটরসাইকেলযোগে সেতু পার হচ্ছে অনেকেই। নাশকতার ভয়ে যানবাহন পারাপার হচ্ছে না। যেখানে প্রতিদিন সেতুর টোল আদায় ছিল ৭০ থেকে ৮০ লাখ টাকা, সেখানে বর্তমানে তা নেমে এসেছে দুই থেকে চার লাখ টাকায়। বঙ্গবন্ধু সেতুর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রধান প্রকৌশলী মোজাম্মেল হক বলেন, ২০ দলীয় জোটের ডাকা টানা অবরোধ ও ঘন ঘন হরতালে বঙ্গবন্ধু সেতু দিয়ে স্বাভাবিকভাবে পরিবহন চলাচল না করায় বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। অর্ধেক পরিবহনও এখন পার হচ্ছে না এ সেতু দিয়ে।
×