ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

বিশ্বকাপ স্মরণীয় করে রাখতে চান ভেট্টোরি

প্রকাশিত: ০৩:৩৩, ২৮ জানুয়ারি ২০১৫

বিশ্বকাপ স্মরণীয় করে রাখতে চান ভেট্টোরি

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ড্যানিয়েল ভেট্টোরি কেবল নিউজিল্যান্ড নয়, বিশ্ব ক্রিকেটেরই এক বড় নাম। সম্প্রতি ইনজুরি জেঁকে ধরে কিউই তারকাকে। গত দেড়-দুই বছরে তাই খুব বেশি ম্যাচ খেলা হয়নি। যুবরাজ সিং, এ্যালিস্টার কুকের মতো পারফর্মার যেখানে বিশ্বকাপে অচ্ছুত সেখানে চোট- ফিটনেস সমস্যা নিয়ে এই ছত্রিশ পেরোনো বয়সে ভেট্টোরির সুযোগ পাওয়া চমক বৈকি! কিন্তু কেবল সুযোগের চমক নিয়ে বসে থাকতে চান না আধুনিক সময়ের অন্যতমসেরা স্পিনার। ঘরের মটিতে জীবনের শেষ বিশ্বকাপটাকে স্মরণীয় করে রাখতে প্রস্তুত অভিজ্ঞ কিউই অলরাউন্ডার। ব্যক্তিগত ও দলীয় নৈপুণ্য দারুণ কিছুর স্বপ্ন দেখছেন ভেট্টোরি। ‘জন্মভূমিতে দেশের জার্সি গায়ে বিশ্বকাপে প্রতিনিধিত্ব করার মতো আনন্দের আর কিছু নেই। সম্প্রতি ইনজুরি-ফিটনেস সমস্যা সত্ত্বেও নির্বাচকরা আমাকে বিবেচনা করেছেন। আমার ভাললাগাটা তাই আরও বেশি। নির্বাচক ও বোর্ড কর্তাদের ধন্যবাদ। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে অনেক চড়াই-উত্রাই, ব্যর্থতা-সাফল্যের সঙ্গী হয়েছি। সম্ভবত এটি আমার শেষ বিশ্বকাপ (হেসে), তাই চেষ্টা থাকবে দলকে সেরা সাফল্য উপহার দেয়ার। আমি প্রস্তুত, প্রস্তুত দলও।’ বলেন ভেট্টোরি। উপরের বাক্যে অনেক সত্য ফুটে উঠেছে। মঙ্গলবার ৩৬ পূর্ণ করে সাইত্রিশে পা দিয়েছেন। ইনজুরি যেভাবে ভোগাচ্ছে, তাতে এটা পরিষ্কার যে, ঘরের মাটিতে এটিই হতে যাচ্ছে ভেট্টোরির শেষ বিশ্বকাপ। অনেক দিন দেশটির সর্বোচ্চ টেস্ট ও ওয়ানডে খেলার মালিক ছিলেন সাবেক অধিনায়ক স্টিফেন ফ্লেমিং। ২০১৪-এর মাঝামাঝি কিউইদের হয়ে সবচেয়ে বেশি টেস্ট (১১৩) খেলার রেকর্ডটি নিজের করে নেয়ার পর রবিবার শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে ওয়নডেতেও (২৮৪) এখন সবার ওপরে ভেট্টোরি। ২০১২ সালে ৫ টেস্ট খেলে মোটামুটি লাইনেই ছিলেন। কিন্তু হাঁটু ও পিঠের ইনজুরির জন্য ২০১৩ সালে একটি টেস্টও খেলতে পারেননি। গত বছর ২০১৪-এ খেলেনে একটি মাত্র ম্যাচ। নবেম্বরে শারাজায় পাকিস্তানের বিপক্ষে। সেই তুলনায় ওয়ানডেতে কিছুটা খেলার মধ্যে ছিলেন। গত অক্টোবর-নবেম্বরে ৫টি ও নিজ দেশে সফরকারী শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে চলমান সিরিজে খেলেছেন ৩টি ওয়ানডে। বল হাতে পারফর্মেন্স ঠিক তার সঙ্গে যায় না। পেয়েছেন মোটে দুটি উইকেট। অবশ্য অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডের কন্ডিশনে স্পিনারদের সফল হওয়া কঠিন। দীর্ঘ ১৮ বছরের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের অভিজ্ঞতা (১৯৯৭-২০১৫) থেকে ভেট্টোরি নিজেও তা মনে করেন। ‘দীর্ঘ দেড় যুগ নিউজিল্যান্ডে হয়ে খেলছি। টেস্টের পর ওয়ানডেতে বেশি ম্যাচ খেলার রেকর্ড দখলে আসায় ভাল লাগছে। ফ্লেমিংয়ের সঙ্গে আমি অনেক ম্যাচেই অংশ নিয়েছি, এমন অর্জনে খুশি। স্পিনার হিসেবে বল হাতে দেশের হয়ে সাফল্য পেয়েছি। তবে এটা সত্য যে অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডের কন্ডিশনে স্পিনারদে সাফল্য পাওয়া সবসময়ই কঠিন।’ এ গ্রুপে শক্তিধর অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ছাড়া ডার্কহর্স বাংলাদেশ ও আফগানিস্তানকে মোকাবেলা করবে কিউইরা। বিশ্বকাপ ইতিহাসের সবেচেয়ে বেশি কোয়ার্টার ফাইনাল খেলা নিউজিল্যান্ড এবার দারুণ কিছুর অপেক্ষায়। সম্প্রতি পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে টগবগ করে ফুটছে ব্রেন্ডন ম্যাককুলামের দল। দলে রয়েছে কেন উইলিয়ামসন, ব্রেন্ডন ম্যাককুলাম, কোরি এ্যান্ডারসন, মার্টিন গাপটিল, টিম সাউদি, ট্রেন্ট বোল্টের মতো পারফর্মার। ২২ বছরের এ্যান্ডারসন-টম লাথামরা বয়সে পিছিয়ে থাকলেও কার্যকারিতায় সবাইকে ছাড়িয়ে যাওয়ার ক্ষমতা রাখেন বলে মনে করেন ভেট্টোরি। তার লক্ষ্য নিজেকে ফিট রেখে দলকে সাহায্য করা। অবাদান রাখা। বিশ্বকাপ ভাবনায় আচ্ছন্ন ভেট্টোরি বলেন, ‘এই মুহূর্তে আমার ভাবনায় কেবলই ক্রিকেট। গত কয়েক মাস প্রচুর খেটেছি, ম্যাচ খেলেছি, পাকিস্তানের বিপক্ষে দুটি ম্যাচে নিজের অবস্থা নিয়ে দারুণ রকমের খুশি আমি। বর্তমানে অনেক ভাল অনুভব করছি। শারীরিকভাবে কোন সমস্যা নেই। আশা করছি বিশ্বকাপে সেরা সময়ের নৈপুণ্য নিয়ে হাজির হতে পারব। দীর্ঘ অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে নিউজিল্যান্ডকে সাফল্য এনে দিতে নিজের সেরাটা নিংড়ে দিতে চাই।’
×