ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

এসএসসি পরীক্ষা শুরুর আগেই বিএনপি অবরোধ বন্ধ করবে ॥ আশা শিক্ষা মন্ত্রীর

প্রকাশিত: ০৭:২৩, ২৭ জানুয়ারি ২০১৫

এসএসসি পরীক্ষা শুরুর আগেই বিএনপি অবরোধ বন্ধ করবে ॥ আশা শিক্ষা মন্ত্রীর

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আসন্ন এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার লাখ লাখ শিক্ষার্থীর কথা চিন্তা করে বিএনপি-জামায়াত জোটের শুভবুদ্ধির উদয় হবে বলে আশা করছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ আগামী ২ ফেব্রুয়ারি পরীক্ষা শুরুর আগেই অবরোধ বন্ধের আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, আশা করি লাখ লাখ শিক্ষার্থীর কথা চিন্তা করে বিএনপি-জামায়াত জোটের নেতাদের শুভবুদ্ধির উদয় হবে কর্মসূচীর নামে চলা জঙ্গীবাদী কর্মকা- বন্ধ করা হবে আমাদের নতুন প্রজন্মের স্বার্থে। যদি জোট মানুষের কথা চিন্তা করে অবরোধ চালিয়ে যায় তবে তার মধ্যেই পরীক্ষা নেয়ার জন্য আমরা প্রস্তুত। এদিকে পরীক্ষা যত এগিয়ে আসছে, পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের শঙ্কা তত বাড়ছে। নাশকতার কারণে পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হওয়া নিয়ে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় রয়েছেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। বছরের শুরু থেকেই রাজনৈতিক সহিংসতায় উৎকণ্ঠায় রয়েছে সাধারণ মানুষ। বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর মৃত্যুর পরও হরতাল-অবরোধ অব্যাহত থাকায় রাজনৈতিক সমঝোতার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। ফলে পরীক্ষা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আদৌ নির্ধারিত সময়ে পরীক্ষা হবে কিনা তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন তারা। আর পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হলে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে তাদের মধ্যে। আগামী ২ ফেব্রুয়ারি থেকে সারাদেশে একযোগে শুরু হচ্ছে এবারের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা, যাতে ১৪ লাখের বেশি শিক্ষার্থী অংশ নেবে। শিক্ষামন্ত্রী সোমবার সচিবালয়ে জনকণ্ঠকে বলেন, পরীক্ষার সব প্রস্তুতি শেষ। এখন সরকারের প্রত্যাশা, শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে এসএসসি পরীক্ষার সময় বিএনপি অবরোধ তুলে নেবে। তাদের অবরোধের তো কোন সময়সীমা নেই। তাই আমরা যে পরীক্ষা পিছিয়ে দেব তারও তো কোন উপায় নেই। যথাসময়েই পরীক্ষা নিতে হবে। পরীক্ষা পেছানোর কোন সুযোগ নেই। গত ৫ জানুয়ারি থেকে দেশব্যাপী লাগাতার অবরোধ কর্মসূচী পালন করছে বিএনপি। তারই মধ্যে মাঝে মধ্যে হরতাল থাকছে। কর্মসূচীর নামে চলানো নাশকতা ও সহিংসতায় সারাদেশে এ পর্যন্ত অন্তত ৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। বিএনপি-জামায়াতের হরতালের কারণে ২০১৩ সালে এসএসসির ৩৭টি বিষয় এবং এইচএসসির ৪১টি বিষয়ের পরীক্ষা পেছাতে বাধ্য হয়েছিল কর্তৃপক্ষ। ওই বছরের জেএসসি-জেডিসির ১৭টি বিষয় এবং প্রাথমিক ও ইবতেদায়ী শিক্ষা সমাপনীর দুটি বিষয়ের পরীক্ষা হরতালের কারণে পিছিয়ে দেয়া হয়। এছাড়া গত বছরের শেষ দিকে জেএসসি-জেডিসি এবং প্রাথমিক ও ইবতেদায়ী পরীক্ষাও বিএনপির হরতালের কবলে পড়লে বেশ কয়েকটি পরীক্ষা পিছিয়ে যায়। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, অবরোধের মধ্যে পরীক্ষা নেয়া হলেও যেদিন হরতালের কর্মসূচী থাকবে সেদিনের পরীক্ষা পিছিয়ে দেয়া হতে পারে। পরীক্ষার মধ্যে রাজনৈতিক কর্মসূচীতে ক্ষোভ প্রকাশ করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ছয় বছর আগেই নির্ধারিত হয়েছে ১ ফেব্রুয়ারি এসএসসি এবং ১ এপ্রিল থেকে এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হবে। পরীক্ষার রুটিন দেখেও এই সময়ে তারা কেন এসব কর্মসূচী দেন? তাদের কি কা-জ্ঞান নেই? হরতাল-অবরোধ করে বিএনপির কোন ‘লাভ’ হচ্ছে না মন্তব্য করে তিনি বলেন, তারা শিক্ষার্থী ও পুরো শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করতে উঠেপড়ে লেগেছে। এটা কারও কাম্য নয়, এটা হতে দেয়া যায় না। ‘ও’ এবং ‘এ’ লেভেলের পরীক্ষা সম্প্রতি অবরোধের আওতামুক্ত ঘোষণা করে বিএনপি। তবে আসন্ন এসএসসি পরীক্ষা অবরোধের আওতামুক্ত রাখা হবে কি না সে বিষয়ে এখনও কিছু বলেননি দলটির নেতারা। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমরা তাকিয়ে আছি, ইংরেজী মাধ্যমের মতো এসএসসি পরীক্ষাও বিএনপি অবরোধের আওতামুক্ত রাখে কিনা।
×