ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ফতোয়া দেয়া যাবে তবে বল প্রয়োগে তা কার্যকর করা যাবে না

প্রকাশিত: ০৮:৩৭, ২৬ জানুয়ারি ২০১৫

ফতোয়া দেয়া যাবে তবে বল প্রয়োগে তা কার্যকর করা যাবে না

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ধর্মীয় বিষয়ে ফতোয়াকে বৈধতা দিয়ে সুপ্রীমকোর্টের আপীল বিভাগের রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশ করা হয়েছে। আপীল বিভাগের রায়ে বলা হয়েছে, ধর্মীয় বিষয়ে ফতোয়া দেয়া যেতে পারে, তবে স্বীকৃত ধর্মীয় বিদ্যায় শিক্ষিত ব্যক্তিরাই কেবল ফতোয়া দিতে পারবেন। আর ফতোয়া গ্রহণের বিষয়টি হতে হবে স্বতঃস্ফূর্ত। এই ফতোয়া কার্যকর করার ক্ষেত্রে কোন ধরনের বল প্রয়োগ বা প্রভাব বিস্তার করা যাবে না। শারীরিক বা মানসিক শাস্তি হয় এমন কোন কার্যক্রম গ্রহণ করা যাবে না। রায়ে আরও বলা হয়, দেশের প্রচলিত আইনে বিধান আছে, এমন বিষয়ে ফতোয়া দিয়ে কারও অধিকার, খ্যাতি বা সম্মানহানি করা যাবে না। সংক্ষিপ্ত রায় দেয়ার প্রায় ৪৪ মাস পর রবিবার সুপ্রীমকোর্টের ওয়েবসাইটে এই রায় প্রকাশ হয়। ২০১১ সালের ১২ মে তৎকালীন প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হকের নেতৃত্বাধীন আপীল বিভাগের ৬ বিচারপতির বেঞ্চ এই রায় ঘোষণা করেছিল। রায় প্রদানকারী বেঞ্চের ৬ বিচারপতি হলেন- বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক, বিচারপতি মোঃ মোজাম্মেল হোসেন, বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এসকে) সিনহা, বিচারপতি মোঃ আবদুল ওয়াহহাব মিঞা, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি মোঃ ইমান আলী। বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক রায়ে লিখেছেন, একজন মুফতি, মাওলানা অথবা ইমাম ফতোয়া ঘোষণা করতে পারেন, যদি তাঁকে অনুরোধ করা হয়। কিন্তু তিনি দেশের কোন আইন ভঙ্গ করতে পারেন না। একইসঙ্গে তাঁকে অন্যদের ফতোয়া বা মতামতের ব্যাপারেও শ্রদ্ধাশীল থাকতে হবে। ২০০১ সালের জানুয়ারি মাসে ফতোয়া অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেয় হাইকোর্ট। ওই সময়ে বিচারপতি গোলাম রাব্বানী ও বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানার (বর্তমানে আপীল বিভাগের বিচারক) সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এই রায় দেয়। রায়ে ফতোয়াকে অবৈধ ও আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করে হাইকোর্ট। এই রায়ের বিরুদ্ধে মুফতি মোঃ তৈয়ব ও মাওলানা আবুল কালাম আজাদ ওই বছরই আপীল দায়ের করেন। আপীল দায়েরের দশ বছর পর ২০১১ সালের ১ মার্চ এর ওপর শুনানি শুরু হয়। শুনানিতে আদালত-বন্ধু (এ্যামিকাস কিউরি) হিসেবে টিএইচ খান, রফিক-উল হক, রোকনউদ্দিন মাহমুদ, মাহমুদুল ইসলাম, এম জহির, এবিএম নুরুল ইসলাম, এএফ হাসান আরিফ, তানিয়া আমীর এবং এমআই ফারুকীর বক্তব্য শোনে আপীল বিভাগ। এছাড়া পাঁচ জন আলেমের বক্তব্যও শোনে আদালত।
×