ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

চ্যালেঞ্জে জিততে চান কোচ ডি ক্রুইফ

প্রকাশিত: ০৫:৩৭, ২৬ জানুয়ারি ২০১৫

চ্যালেঞ্জে জিততে চান কোচ ডি ক্রুইফ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ‘এদেশে আবারও ফিরতে পেরে আমি খুব খুশি। দলের প্লেয়াররা সবাই আমার পরিচিত। দলটিতে আছে অনেক মেধাবী প্লেয়ার। বাফুফেকে ধন্যবাদ এত বড় মাপের আন্তর্জাতিক একটি টুর্নামেন্ট আয়োজন করার জন্য। বাংলাদেশের এটাই সুযোগ আন্তর্জাতিক পরিম-লে নিজেদের মেলে ধরার।’ কথাগুলো লোডভিক ডি ক্রুইফের। বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের প্রধান প্রশিক্ষক। শনিবার হল্যান্ড থেকে বাংলাদেশে এসে দ্বিতীয়বারের মতো দায়িত্ব নিয়েছেন জাতীয় দলের কোচের। ওইদিনই সাভারের বিকেএসপিতে গিয়ে দলের দায়িত্ব বুঝে নেন। রবিবার মতিঝিলের বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) ভবনের কনফারেন্স রুমে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সেখানেই উপরোক্ত মন্তব্য করেন এই ডাচ্ কোচ। সম্মেলনে আরও উপস্থিত জাতীয় ফুটবল দলের অধিনায়ক মামুনুল ইসলাম, টিমলিডার ইকবাল হোসেন, ম্যানেজার আমিরুল ইসলাম বাবু, বাফুফের সাধারণ সম্পাদক আবু নাইম সোহাগ, বাফুফে সহ-সভাপতি ও ন্যাশনাল টিমস্ কমিটির সদস্য তাবিথ আউয়াল। বাবার মৃত্যুর কারণে সময় মতো বাংলাদেশে আসতে পারেননি ক্রুইফ। যখন এলেন, তখন টুর্নামেন্ট শুরু হতে আর মাত্র ৪ দিন বাকি। এই অল্প সময়ে কোচিং করাটা কতটা কাজে দেবে? এ প্রসঙ্গে ক্রুইফ বলেন, ‘এটা কোন সমস্যা না। দলের বেশিরভাগ খেলোয়াড়ই আমার পরিচিত। এদের সঙ্গে আমি আগেও কাজ করেছি। ইন্টারনেটে আমি সবসময় তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছি। সহকারী কোচ সাইফুল বারী টিটুর সঙ্গেও যোগাযোগ রেখেছি। সেই অনুযায়ীই এতদিন অনুশীলন চলেছে।’ টুর্নামেন্টে দলের টার্গেট প্রসঙ্গে ক্রুইফ বলেন, ‘আমাদের টার্গেট হবে সব ম্যাচ জয়ের। স্বাগতিক বলে যে বাড়তি সুবিধাটা পাব, সেটাকে কাজে লাগাতে সচেষ্ট থাকব। এই টুর্নামেন্টে ভাল রেজাল্টের যে চ্যালেঞ্জ, তাতে জয়ী হতে চাই। এটা যেহেতু ফিফা স্বীকৃত আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট, সেহেতু ভাল খেললে আমাদের র‌্যাঙ্কিংয়ের উন্নতি করার সুযোগ রয়েছে। আমি মনে করি বাংলাদেশের ফুটবল এখন সঠিক পথেই রয়েছে।’ গ্রুপের প্রতিপক্ষ দল মালয়েশিয়া ও শ্রীলঙ্কা সম্পর্কে ক্রুইফের ভাবনা, ‘মালয়েশিয়া অনুর্ধ-২৩ দল সম্পর্কে তেমন কোন ধারণা নেই। এ জন্য তাদের কঠিন প্রতিপক্ষ মনে করছি। তারপরও তাদের বিরুদ্ধে জয়ের জন্যই খেলব আমরা। তবে শ্রীলঙ্কা দল সম্পর্কে বেশ ভাল ধারণা আছে। তারা চেনা প্রতিপক্ষ। কেননা কয়েকমাস আগ তাদের সঙ্গে দুটি ফিফা প্রীতি ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। তাতে একটিতে জয় ও একটিতে ড্র করেছে বাংলাদেশ। নিজেদের স্বাভাবিক খেলা খেলতে পারলে আমরা আশা করি সেমিফাইনালে নাম লেখাতে সক্ষম হব।’ টুর্নামেন্টে দুটি ফমের্শনে বাংলাদেশ দল খেলবে বলে জানান ক্রুইফ, ‘৪-৪-২ বা ৪-৩-৩ যে কোন একটি ফর্মেশনে দলকে খেলানোর পরিকল্পনা আছে আমার।’ নানা সমস্যা নিয়ে এর আগে জাতীয় দলের কোচিং পদ থেকে বিদায় নিলেও আবারও বাংলাদেশ দলের দায়িত্ব নিতে কেন এলেন? এমন প্রশ্নের জবাবে ক্রুইফ বলেন, ‘সমস্যা যাই থাক, আবারও বাংলাদেশে আসার কারণ সালাউদ্দিন এবং তাবিথের সঙ্গে দারুণ সুসম্পর্ক।’ অধিনায়ক মামুনুল ইসলাম বলেন, ‘সর্বশেষ তিন মাসেরও বেশি আমরা হার্ড ট্রেনিং করেছি বিকেএসপিতে। আন্তর্জাতিক পর্যায়ের জন্য আমাদের যতটুকু ফিটনেস প্রয়োজন, ওই লেভেলের ফিটনেস বর্তমানে আমাদের খেলোয়াড়দের সবার মাঝে আছে। বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপে ভাল রেজাল্ট করার জন্য যে সময়টা পেয়েছি একটা টুর্নামেন্টের জন্য তা সেরা সময়। আমাদের যে টার্গেট থাকবে ওই টার্গেটে পৌঁছানোর জন্য নিজেদের সেরাটা মেলে ধরা। ফিটনেসের সঙ্গে মানসিকভাবেও সবাই ফিট। এই টুর্নামেন্ট ১৬ বছর আগে হয়েছে, এটা যেন সবসময় হয়। সত্যিকার অর্থে আমাদের রেজাল্টের ওপর নির্ভর করবে টুর্নামেন্টটা ধারাবাহিকভাবে হবে কিনা। বাংলাদেশের জনগণের কাছে দোয়া চাচ্ছি, আমরা যেন ভাল ফুটবল খেলতে পারি।’ কোচ ক্রুইফের সঙ্গে সর্ম্পক নিয়ে মামুনুল বলেন, ‘কোচ আসাতে আমরা মানসিকভাবে সবাই উৎফুল্ল। কালকের (শনিবার) ট্রেনিংয়েই সেটা বোঝা গেছে। আমরা যে ধরনের ফুটবল খেলতে যেমন প্লেসিং ফুটবল এটা কালকে শুরু হয়েছে। আমরা কিভাবে খেলব তাও বুঝেছি সবাই। আমাদের খেলোয়াড়দের সঙ্গে ওনার (ক্রুইফ) সম্পর্কটাও অনেক ভাল। যদিও শুরুতে তার সঙ্গে মানিয়ে নিতে একটু সময় লেগেছে। তবে শেষ দিকে কোচের সঙ্গে অনেক ভাল আন্তরিকতা চলে এসেছে। কোচের সঙ্গে আমাদের বোঝাপড়াটাও ভাল। মানকিভাবে ফিট না থাকলে ব্যক্তিগতভাবে ওই খেলোয়াড়কে নিয়ে কথা বলতেন কোচ। মাঝে না থাকায় আমরা খেলোয়াড়রা সবাই তাকে মিস করেছি।’ ঘরের মাঠে স্বাগতিক দর্শকের সামনে খেলতে হবে। তাতে করে বাড়তি কোন চাপ? মামুনুলের উত্তর, ‘এটা প্রেসার না প্লেয়ারদের জন্য। আমি বলব এটা একটা স্পিড। কারণ এত সাপোর্টার আমাদের সাপোর্ট করবে ভাল খেলা উপহার দিতে। এর আগে যেটা দেখা যেত গ্যালারি শূন্য দর্শকদের সামনে আমাদের খেলতে হতো। সে সময় ৬০ মিনিট পরই দম হারিয়ে ফেলতাম। কারণ দর্শকের সমর্থন ছিল না। তবে সর্বশেষ কয়েকটি ম্যাচে ৯০ মিনিট পরেও আমরা এক দমে খেলে গেছি। এটা দর্শকের সমর্থনের কারণেই হয়েছে।’
×