ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

আরইবি, ডেসকোর দেয়া বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব নাকচ

প্রকাশিত: ০৫:২৯, ২৬ জানুয়ারি ২০১৫

আরইবি, ডেসকোর দেয়া বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব নাকচ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির শুনানিতে দুই কোম্পানির প্রস্তাব নাকচ করে দিয়েছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) গঠিত কারিগরি মূল্যায়ন কমিটি। রবিবার কাওরান বাজারে টিসিবি মিলনায়তনে সকালে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি) এবং বিকেলে ঢাকা ইলেক্ট্রিক সাপ্লাই কোম্পানির (ডেসকো) বিদ্যুতের মূল্যহার সমন্বয়ের প্রস্তাব নিয়ে গণশুনানির শেষ দিনে প্রস্তাব দুটি নাকচ করা হলো। কমিশনের কারিগরি মূল্যায়ন কমিটি বলছে বিদ্যুতের প্রস্তাবিত পাইকারি মূল্যহার এবং সঞ্চালন ব্যয় বৃদ্ধির সুপারিশ কার্যকর হলেই আরইবির জন্য দশমিক ২৭ ভাগ হারে অর্থাৎ প্রতি ১০০ টাকায় ২৭ পয়সা দাম বৃদ্ধি করা যেতে পারে। অন্যথায় দাম বৃদ্ধির কোন প্রয়োজন নেই। অন্যদিকে বিকেলে ডেসকোর প্রস্তাবের শুনানিতে কমিশন বলছে পাইকারি বিদ্যুতের দাম বাড়লেও ডেসকোর বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির কোন প্রয়োজন নেই। এর আগে বিদ্যুতের খুচরা দাম বৃদ্ধির জন্য ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির প্রস্তাব নাকচ করে দেয় কমিশনের মূল্যায়ন কমিটি। কারিগরি মূল্যায়ন কমিটি বলছে রাজধানী ঢাকায় বিদ্যুত বিতরণকারী দুটি কোম্পানি এতটাই লাভ করছে যে পাইকারি পর্যায়ে আরও দাম বাড়ালেও খুচরা দাম বৃদ্ধির কোন প্রয়োজন নেই। যদিও বিগত সময়ে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির ক্ষেত্রে কমিশনের মূল্যায়ন কমিটি আরইবির দাম বৃদ্ধি যৌক্তিক নয় বললেও কমিশনের দাম বৃদ্ধি করার নজির রয়েছে। কাজেই দাম বৃদ্ধিতে কমিশনের মূল্যায়নের প্রতিফল ঘটবে কি-না তা এখনও নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে। না। কমিশনের মূল্যায়ন প্রতিবেদনের প্রতিফলন ঘটলে খুচরা পর্যায়ে বিদ্যুতের তেমন দাম বৃদ্ধি হবে না। রবিবার সকালে শুরু হওয়া গণশুনানিতে আরইবির প্রস্তাব তুলে ধরেন সংস্থার চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মঈন উদ্দিন। ওই প্রস্তাবে বলা হয় আরইবি গ্রাহক পর্যায়ে পল্লী বিদ্যুতের দাম ১৫ দশমিক ৬০ শতাংশ বৃদ্ধি করতে চায়। প্রস্তাব অনুযায়ী প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের গড় মূল্য ৮৭ পয়সা বেড়ে পাঁচ টাকা ৯৩ পয়সার স্থলে ছয় টাকা ৮০ পয়সা হবে। প্রস্তাবিত মূল্য বাড়ানো না হলে ২০১৪Ñ১৫ অর্থবছরে আরইবির এক হাজার ৬৬৫ কোটি টাকা লোকসান হবে। অন্যদিকে কমিশনের মূল্যায়ন কমিটি বলছে বিদ্যমান মূল্যহারে আরইবির কোন লোকসান হওয়ার কথা নয়। পাইকারি দাম না বাড়লে আরইবির গ্রাহকদের জন্য কোন দাম বৃদ্ধি করার প্রয়োজন নেই। যদি কমিশনের সুপারিশ করা পাইকারি মূল্যহার পাঁচ দশমিক ১৫ ভাগ এবং সঞ্চালন মূল্যহার এক দশমিক ৫৩ ভাগ বৃদ্ধি করা হয় সেক্ষেত্রে দাম দশমিক ২৭ ভাগ বৃদ্ধি করা যেগে পারে। অন্যথায় এ প্রস্তাব আমলে নেয়ার যৌক্তিকতা নেই। অন্যদিকে বিকেলে ঢাকা ইলেক্ট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি ডেসকোর শুনানিতে প্রধান প্রকৌশলী হাবিবুর রহমান দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব উত্থাপন করেন। এ সময় কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব) শাহেদ সিদ্দিকী ছাড়াও বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। দাম বৃদ্ধির প্রস্তাবে ১৬ দশমিক ১৯ থেকে বাড়িয়ে ১৮ দশমিক ৬২ শতাংশ সুপারিশ করা হয়। কমিশন ডেসকোর করা আগের প্রস্তাব অনুযায়ী এখন গড় দর প্রতি ইউনিটে ছয় দশমিক ৮৭ টাকা থেকে বেড়ে আট দশমিক ছয় টাকা হবে। কিন্তু কমিশনের কারিগরি মূল্যায়ন কমিটি বলছে, পাইকারি দাম বাড়লেও ডেসকো বছরে ৬৮০ মিলিয়ন টাকা মুনাফা করবে। কাজেই দাম বৃদ্ধির কোন প্রয়োজন নেই। সকাল সাড়ে ১০টায় শুরু হওয়া গণশুনানিতে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) চেয়ারম্যান এআর খান। অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেনÑ বিইআরসির সদস্য ড. সেলিম মাহমুদ, রহমান মুরশেদ, প্রকৌশলী মোঃ দেলাওয়ার হোসেন, মোঃ মাহমুদুল হক ও কনজ্যুমারস এ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক শামসুল আলমসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও ব্যবসায়ী নেতারা। কারিগরি কমিটির আহ্বায়ক ও বাংলাদেশ এ্যানার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) পরিচালক মোসতাক আহমেদ সুপারিশ উত্থাপন করেন।
×