ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

এবার চট্টগ্রামে বোমাবাজকে গণধোলাই, গড়ে উঠছে জনতার প্রতিরোধ

প্রকাশিত: ০৫:১২, ২৬ জানুয়ারি ২০১৫

এবার চট্টগ্রামে বোমাবাজকে গণধোলাই, গড়ে উঠছে জনতার প্রতিরোধ

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস ॥ চট্টগ্রাম নগরীতে বাসে বোমা নিক্ষেপকারী এক শিবির ক্যাডারকে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেছে সাধারণ মানুষ। বুধবার দুপুরে তিনপুলের মাথা এলাকায় জনরোষের মুখে পড়ে এই নাশকতাকারী। সাব্বির হোসেন নকিব (২০) নামে এক যুবককে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিক্যালে ভর্তি করা হয়েছে। হরতাল-অবরোধে নাশকতা ঠেকাতে সর্বোচ্চ তৎপর রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। গত শনিবার রাতে জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে বিএনপি ও জামায়াতের ১১ নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সিএমপির কোতোয়ালি থানা পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্র্শীরা জানান, বেলা পৌনে একটার দিকে রিয়াজুদ্দিনবাজার থেকে কয়েক যুবক তিনপুলের মাথা এলাকায় এসে টাওয়ার ইন হোটেলের সামনে বোমা বিস্ফোরণ ঘটায়। তারা বাস লক্ষ্য করে ওই স্থানে মোট তিনটি বোমা ছোড়ে। তবে পালিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয় লোকজন ‘ধর ধর’ চিৎকার করে এগিয়ে আসে। একপর্যায়ে ধাওয়া দিয়ে ধরে ফেলে শিবির ক্যাডার সাব্বির হোসেন নকিবকে। এরপর ক্ষুব্ধ লোকজন গণধোলাই দিয়ে ওই শিবির ক্যাডারকে পুলিশে হস্তান্তর করে। পুলিশ গণপিটুনিতে গুরুতর আহত নকিবকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। কোতোয়ালি থানা সূত্রে জানা যায়, গণধোলাইয়ের শিকার শিবির ক্যাডার নকিব কক্সবাজার জেলার চকরিয়া উপজেলার বড়ইতলী গ্রামের বেলাল হোসাইন মাস্টারের ছেলে। সে আন্তর্জাতিক ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ প্রথমবর্ষের ছাত্র। তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। তিন উপজেলায় আটক ১১ ॥ চট্টগ্রাম জেলার বিভিন্ন উপজেলায় নাশকতাকারীদের ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। গত শনিবার রাতে সীতাকু- এবং সাতকানিয়া ও লোহাগাড়া উপজেলায় অভিযান চালিয়ে আটক করা হয় ১১ জনকে। আটকদের মধ্যে ৫ জন বিএনপি এবং ৬ জন জামায়াত-শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। তাদের বিরুদ্ধে সহিংসতা ও নাশকতার অভিযোগ রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এ অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে জেলা পুলিশ সূত্র। চট্টগ্রামে হরতালের প্রভাব নেই ॥ বিএনপি-জামায়াত জোটের ডাকা হরতালে রবিবার চট্টগ্রামে জনজীবন ছিল সম্পূর্ণ স্বাভাবিক। সড়কে সাধারণ কর্মদিবসের মতোই যানবাহন চলাচল করেছে। সব ধরনের অফিস ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান খোলা ছিল। শিল্পাঞ্চলগুলোতেও কর্মচাঞ্চল্য ছিল স্বাভাবিক। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে দূরপাল্লার যাত্রীবাহী বাস চলাচল সীমিত থাকলেও অন্যান্য সকল যানবাহন চলাচল করেছে। পণ্যবাহী ট্রাক ও কাভার্ডভ্যানগুলো চলে স্বাভাবিক কর্মদিবসের মতোই। বন্দর অভ্যন্তরে পণ্য উঠানামা যেমন স্বাভাবিক ছিল তেমনিভাবে পণ্য ডেলিভারিও হয়েছে। শহর ও জেলার কোথাও অপ্রীতিকর কোন ঘটনা ঘটেনি। নাশকতার আশঙ্কায় নগরী ও জেলায় অতিরিক্ত পুলিশের পাশাপাশি বিজিবি ও র‌্যাবের টহল রয়েছে। হরতালের সমর্থনে বিএনপি-জামায়াত বা কোন সংগঠনের তৎপরতা দেখা যায়নি। রাস্তায় নামেনি হরতালকারীরা। নুর আহমদ সড়কের নাসিমন ভবনের দলীয় কার্যালয়ে বিএনপির কেউ নেই। তবে ওই এলাকাকে কেন্দ্র করে পুলিশের সতর্ক অবস্থান রয়েছে। যে কোন ধরনের সহিংসতার অপ্রচেষ্টা প্রতিরোধে পুলিশ প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছে সিএমপি।
×