ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

আবদুল্লাহ বিন আবদুল আজিজ

প্রকাশিত: ০৩:৩৫, ২৬ জানুয়ারি ২০১৫

আবদুল্লাহ বিন আবদুল আজিজ

বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু সৌদি আরবের বাদশাহ আবদুল্লাহ বিন আবদুল আজিজ বৃহস্পতিবার ইন্তেকাল করেছেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল নব্বই। সমাজ সংস্কারক ও অগ্রসর চিন্তার ধারক-বাহক হিসেবে পরিচিত ছিলেন তিনি। সৌদি বাদশাহর মৃত্যুতে বাংলাদেশসহ বিশ্ব নেতৃবৃন্দ গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, জাতীয় সংসদের স্পীকার ও বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ তাঁর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন। শনিবার রাষ্ট্রীয় শোক পালন করা হয় বাংলাদেশে। আরব বিশ্বের একজন ক্ষমতাধর রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে তাঁর ভূমিকা অনস্বীকার্য। তিনি ১৯২৪ সালের আগস্টে জন্মগ্রহণ করেন। বাদশাহ হওয়ার আগে তিনি রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৬১ সালে তিনি মক্কার মেয়র হন। পরের বছর তিনি সৌদি এরাবিয়ান ন্যাশনাল গার্ডের কমান্ডার হিসেবে নিয়োগ পান। ১৯৮২ সালে ভাই ফাহাদ বাদশাহ হিসেবে অধিষ্ঠিত হলে আবদুল্লাহ উপ-প্রতিরক্ষামন্ত্রী হন। ১৯৯৫ সালে বাদশাহ ফাহাদের গুরুতর স্ট্রোক হলে কার্যত তিনি বাদশাহে পরিণত হন। ২০০৫ সালে বাদশাহ ফাহাদের মৃত্যুর পর তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব বুঝে নেন। দায়িত্ব পাওয়ার পর বাদশাহ আবদুল্লাহ আরব বিশ্বসহ বিশ্বের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখার কৌশলী নীতি অবলম্বন করে বিশ্ব রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের সঙ্গে গড়ে তোলেন এক অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক। বাদশাহ আবদুল্লাহ তাঁর দায়িত্ব পালনকালে সৌদি আরবে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারের দিকে বিশেষভাবে নজর দিয়েছিলেন। উদার চিন্তা-ভাবনা এবং মুুক্তবুদ্ধির চর্চার ক্ষেত্রেও তিনি ছিলেন অগ্রবর্তী। এক্ষেত্রে আরব বিশ্বে তাঁর কৃতিত্ব স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। সমকালীন অগ্রযাত্রার সঙ্গে আরব সমাজকে একাত্ম করার সঠিক কাজটিও তিনি করতে চেয়েছেন। নারী স্বাধীনতার প্রতিও তিনি ছিলেন বিশেষভাবে সচেষ্ট। তিনি মনে করতেন, নারীকে ছাড়া জাতীয় জীবনে কখনই উন্নতি সম্ভব নয়। নারী উন্নয়নের ক্ষেত্রে পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন পদক্ষেপও তিনি গ্রহণ করেছেন। নারীদের ভোটের অধিকার ও অলিম্পিকে নারীদের অংশগ্রহণের বিষয়টি তাঁর প্রত্যক্ষ নির্দেশের ফলেই কার্যকর হয়েছে। সৌদি আরবের শ্রমবাজারে বাংলাদেশী শ্রমিকদের বিশাল চাহিদা রয়েছে। বর্তমানে লাখ লাখ বাংলাদেশী শ্রমিক সৌদি আরবে জীবিকা নির্বাহ করে দেশের রেমিটেন্স প্রবাহকে চাঙ্গা রেখে জাতীয় প্রবৃদ্ধিতে বিশেষ ভূমিকা রাখছে। বন্ধুপ্রতিম বাংলাদেশী দক্ষ শ্রমিকদের প্রতি সৌদি সরকারের এক ধরনের সহানুভূতি ও ভালবাসা রয়েছে- এ কথা সর্বজনবিদিত। সামনের দিনেও এই ভালবাসা অব্যাহত থাকবে এটাই প্রত্যাশা।
×