ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

পুঁজিবাজারে ৮২ শতাংশ কোম্পানির দরপতন

প্রকাশিত: ০২:৪০, ২৬ জানুয়ারি ২০১৫

পুঁজিবাজারে ৮২ শতাংশ  কোম্পানির দরপতন

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে ক্রমেই ক্রেতাশূন্য হয়ে পড়ছে দেশের উভয় পুঁজিবাজার। নতুন সূচক চালুর পরে সবচেয়ে বড় ধাক্কা খেয়েছে প্রধান বাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)। দিনটিতে প্রধান বাজারের সার্বিক সূচক কমেছে ৮১ পয়েন্ট বা প্রায় ২ শতাংশ। দিনটিতে ডিএসইতে মোট ৮২ শতাংশ কোম্পানির দর কমেছে। প্রাতিষ্ঠানিক ও বড় বিনিয়োগকারীরা বাজার থেকে কিছুটা দূরে থাকার কারণে সাধারণ বিনিয়োগকারীরাও আগ্রহ হারাচ্ছেন বাজার থেকে। যার কারণে মাঝে মধ্যে সূচকের কিছুটা বৃদ্ধি ঘটলেও পরদিনই সূচক কমে যাচ্ছে। বাজার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, সকালে সূচকের নেতিবাচক প্রবণতা দিয়ে শুরুর পর রবিবার দিনশেষে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সার্বিক সূচকটি আগের দিনের চেয়ে ৮১ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ৪ হাজার ৭১৬ পয়েন্টে। যা চলতি বছরের মধ্যে সূচকের সর্বোচ্চ পতন। রবিবার দিনভর লেনদেন হওয়া ৩০৭টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৩৪টির, কমেছে ২৫২টির আর অপরিবর্তিত রয়েছে ২১টি কোম্পানির শেয়ার দর। সেখানে লেনদেন হয়েছে ২২৩ কোটি ২৪ লাখ ৪৯ হাজার টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। চলতি বছরের প্রথম দিন ডিএসইর মূল্য ?সূচক ৪ হাজার ৯৪১ পয়েন্ট নিয়ে যাত্রা শুরু করলেও বর্তমানে তা ৪ হাজার ৭১৬ পয়েন্টে অবস্থান করছে। এ সময়ের মধ্যে (১৬ কার্যদিবস) মূল্য সূচক কমেছে ২২৫ পয়েন্ট এবং বাজার মূলধন কমেছে ১১ হাজার ২২২ কোটি ৯৫ লাখ ২৭ হাজার টাকা। আগের বছরের একই সময়ে সূচক বেড়েছিল ৪৭২ পয়েন্ট ও বাজার মূলধন বেড়েছিল ২২ হাজার ২৯৩ কোটি ৬৪ লাখ ৪ হাজার টাকা। ওই সময় দৈনিক গড় লেনদেন ছিল ৬১০ কোটি টাকা। বর্তমানে দৈনিক গড় লেনদেন হচ্ছে ৩০০ কোটি টাকা। ডিএসইর পরিচালক মোঃ শাকিল রিজভী বর্তমান বাজার পরিস্থিতি বলেন, রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা এখন বিনিয়োগমুখী নেই। এছাড়া সাধারণ বিনিয়োগকারীদের উপস্থিতিও কম। এর একটা সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত কোন শ্রেণীর বিনিয়োগকারীর স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ আশা করা যায় না। তবে শেয়ারের দাম কমতে কমতে অনেক নিচে চলে গেলে তখন হয়ত অনেকে কম দরে শেয়ার কেনার সুযোগ নিতে পারে। রবিবার ডিএসইর সেরা ২০টি কোম্পানিগুলোর মোট ১১৪ কোটি ৮১ লাখ ৮৬ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যা ডিএসইর মোট লেনদেনের ৫১.৪৩ শতাংশ। এ দিন ডিএসইতে সবচেয়ে বেশি শেয়ার লেনদেন হয়েছে সিএ্যান্ডএ টেক্সটাইলের। দিনভর এ কোম্পানির ৯০ লাখ ৭৪ হাজার ৯১১টি শেয়ার ২৩ কোটি ৪৮ লাখ ১৮ হাজার টাকায় লেনদেন হয়েছে। যা ডিএসইর মোট লেনদেনের ১০.৫১ শতাংশ। এছাড়া লাফার্জ সুরমা সিমেন্টের ১২ কোটি ৪৬ লাখ, ডেসকোর ৮ কোটি ৫৩ লাখ, সামিট এলায়েন্স পোর্টের ৬ কোটি ৮৯ লাখ, অলটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজের ৬ কোটি ৫২ লাখ, জিএসপি ফাইন্যান্সের ৫ কোটি ৯০ লাখ, ন্যাশনাল ফিড মিলের ৫ কোটি ৭৯ লাখ, গ্রামীণফোনের ৫ কোটি ৩০ লাখ, ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ডের ৫ কোটি ২৫ লাখ এবং সিভিও পেট্রোকেমিক্যালের ৩ কোটি ৮৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দিনশেষে অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সাধারণ মূল্য সূচক ১৫১ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ৮৭৬৩ পয়েন্টে। দিনভর লেনদেন হওয়া ২৩৩টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৩৬টির, কমেছে ১৮৫টির এবং দর অপরিবর্তিত রয়েছে ১২টি কোম্পানির। সেখানে লেনদেন হয়েছে ২৩ কোটি ৬৬ লাখ টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। আগের দিন সিএসইতে লেনদেন হয়েছিল ২৬ কোটি ৪১ লাখ টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। সেই হিসেবে রবিবার সিএসইতে সিএসইতে লেনদেন কমেছে ২ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। সিএসইর লেনদেনের সেরা কোম্পানিগুলো হলো : সিএ্যান্ডএ টেক্সটাইল, ন্যাশনাল ফিড মিলস লিমিটেড, যমুনা অয়েল, অলটেক্স, ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড, বেক্সিমকো, লাফার্জ সুরমা সিমেন্ট, স্কয়ার ফার্মা, ইউনাইটেড এয়ার ও গ্রামীণফোন।
×